।। ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী।।
বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বেই আতঙ্কের নাম হচ্ছে
করোনা ভাইরাস। মানব দেহে অসুস্থতার কারণ হতে পারে এমন ভাইরাসগুলোর মধ্যে বিশাল
একটি পরিবার এই করোনা ভাইরাস। অতি সম্প্রতি আবিস্কৃত হওয়া করোনা ভাইরাস দ্বারা
সংক্রামক রোগের নাম কভিড-১৯। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে।
তাই আমাদের সবাইকে ভয় না পেয়ে সচেতন হতে হবে এবং অন্যদেরকেও সচেতন করতে হবে। এই
ভাইরাস থেকে মুক্তির বা প্রতিরোধের উপায় নিয়ে একজন চিকিৎসক হিসেবে সহজভাবে কিছু বলার চেষ্টা
করব। আমাদের সকলের কিছু বিষয় মেনে চলাতেই আমরা পারি এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী ১০ দিন আমাদের দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমেই এই ভাইরাস প্রতিরোধে বহুল প্রচলিত
কিছু শব্দ (কোয়ারান্টাইন, হোম
কোয়ারান্টাইন এবং আইসোলেশন) এর সামান্য ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন মনে করছি।
কোয়ারান্টাইন কী?
কোয়ারান্টাইন শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে ‘সঙ্গনিরোধ’ অর্থাৎ একজনের কাছ থেকে আরেকজন আলাদা থাকা, যাতে অন্য সুস্থ ব্যক্তির দেহে ভাইরাস
সংক্রমিত না হয়।
হোম কোয়ারান্টাইন কী?
সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কারণে
বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। হোম কোয়ারান্টাইনে থাকার সময়কাল ১৪
দিন (অনুমান করা হচ্ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং লক্ষণ প্রকাশের মধ্যকার
সময়কাল ১৪ দিন)। তাই ১৪ দিন একটি নির্দিষ্ট ঘরে সকলের কাছ থেকে আলাদা থাকতে হবে।
স্কুল, কলেজ, উপাসনালয়, বাজার
বা কোনো প্রকার জমায়েতে যাওয়া যাবে না। গণ পরিবহনে উঠা যাবে
না। আলাদা বাথরুম, আলাদা বাসনপত্র
ব্যবহার করতে হবে। সব সময় জীবানুনাশক দিয়ে ঘর পরিষ্কার করতে হবে। কারো সাথে
সাক্ষাৎ করা যাবে না। সাক্ষাৎ জরুরী হলে কমপক্ষে ৩ ফুট দুরত্ব রাখতে হবে।
কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কোনো উপসর্গ যেমন ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর, কাশি, সর্দি,
গলাব্যথা,
শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি দেখা দিলে অতিদ্রুত আইইডিসিআরের হটলাইন
নম্বরে যোগাযোগ করে পরবর্তী করণীয় জেনে নিতে হবে।
আইসোলেশন কী?
ইতোমধ্যে ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে এবং চিকিৎসাধীন
আছেন এমন ব্যক্তিকে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সকলের কাছ থেকে একেবারে
বিছিন্ন করে রাখা ।
অজানা এই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইটা করতে হবে
আপনাকেই, আর আপনার প্রধান
অস্ত্র হচ্ছে- সচেতনতা, সতর্কতা। করোনা
প্রতিরোধে কিছু তথ্য এবং আমরা কী কী নিয়ম মেনে চলতে পারি তা আপনাদের কাছে তুলে ধরা
হলো:
এক: বারবার হাত
ধুয়ে পরিষ্কার রাখবেন: প্রত্যেকবার বাইরে থেকে এসে সবার আগে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে
নিবেন কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে। মনে রাখবেন সাবান হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চেয়ে
বেশি কার্যকর। এই ধোয়ার কাজটি অবশ্যই বাথরূমে দরজা বন্ধ করে করবেন। ডাইনিং রুমে যে
একটি বিশেষ বেসিন থাকে সেখানে বাইরে থেকে এসে হাত ধোয়া থেকে আপাতত বিরত থাকুন। সবচেয়ে ভালো হবে বাসায় প্রবেশের দরজার বাহিরে একটা নিদিষ্ট
স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রেখে দিবেন এবং প্রথমে এসে সেটা ব্যবহার করলে।
যে জায়গায় অনেকের হাত লাগে তা ছুঁলেই সাবান
দিয়ে হাত ধুতে হবে বা স্যানিটাইজার লাগাতে হবে। যেমন: টাকা পয়সা, যেকোন দরজার হাতল, লিফটের বাটন, বাথরুমের ফ্লাশ ও পানির টেপ ও হ্যান্ড শাওয়ার, কলিংবেল, অফিসের লাইট ফ্যানের সুইচ, অফিসের এসির রিমোট কন্ট্রোল, এটিএম বুথ,
যে কোন কীবোর্ড, সিঁড়ির রেলিং।
দুই: বাইরের পরা কাপড়
অবশ্যই আলাদা বালতিতে, পানিতে গুড়া
সাবান দিয়ে ভিজিয়ে রাখবেন। আপনার বাইরে পরা কাপড় বাসার শিশু, বৃদ্ধের কাপড়ের সাথে এক বালতিতে ধোবেন না।
তিন: হ্যান্ড
স্যানিটাইজার কাছে রাখবেন ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় যেখানে সাবান পানি পাওয়া
যাবেনা সেখানে যেমন: বাসে, দোকানে, অফিসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন।
চার: মাস্ক ব্যবহার:
মাস্ক ব্যবহার নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা রয়েছে। বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থার মতে কেউ যদি
কভিড-১৯ এর উপসর্গ (যেমন: জ্বর,
গলাব্যাথা,
কাশি) অনুভব করেন সে সকল ব্যক্তির এবং সকল
স্বাস্থ্যকর্মীদের মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। বাইরে বের হলে জনসমাগম স্থলে
পাবলিক কন্টাক্ট্রে মাস্ক ব্যবহার করা উত্তম এবং নিরাপদ। সার্জিকাল মাস্ক যদি
পাওয়া যায় তা ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। একটি ওয়ান টাইম সার্জিক্যাল মাস্ক ৬ ঘন্টা
কাজ করে। মাস্ক ব্যবহার এর আরেকটি উপকারী দিক হচ্ছে অবচেতন মনে নাকে, মুখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকা যায়।
পাচঁ: মনে রাখতে হবে, কোভিড-১৯ এর ভাইরাসটি লেগে আছে এরকম জিনিসে
শুধু স্পর্শ করলেই আপনি আক্রান্ত হবেন না। ভাইরাস আছে এমন জায়গা স্পর্শ করার পর
আপনি যদি হাত দিয়ে মুখ, নাক অথবা চোখ
স্পর্শ করেন তাহলেই এই ভাইরাসটি আপনার শরীরে ঢুকে পড়বে। তাই এই ভাইরাসটি প্রতিরোধে
গুরুত্বপূর্ণ করণীয় হচ্ছে হাত
দিয়ে মুখ, নাক, চোখ স্পর্শ না করা।
ছয়: আসুন সবাই হাঁচি
কাশি শিষ্টাচার মেনে চলি। হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু ব্যবহার করি। এক টিস্যু
একাধিকবার ব্যবহার করা যাবেনা। টিস্যু না থাকলে নিজের বাহুর/কনুই এর মাঝে মুখ ঢেকে
হাঁচি-কাশি দেই। হাঁচি-কাশি
হচ্ছে এমন কারো ৬ ফুটের ভেতর আসবেন না। যদি আপনি নিজে হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত হন, নিজ দায়িত্বে বাসায় থাকুন। মানুষ থেকে মানুষে
ছড়ানোটাই এই রোগের ছড়ানোর মূল মাধ্যম।
সাতঃ এই সময় যত বেশী
পারেন ভিটামিন সি যুক্ত ফল (কমলা,
লেবু,
মাল্টা,
পেয়ারা) খান কারণ ভিটামিন সি ঠান্ডা সর্দি ফ্লু প্রতিরোধে
সাহায্য করে। এসময় প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
আটঃ দয়াকরে এই
কয়েকদিন সামাজিকতা রক্ষার জন্য অযথা কারও বাসায় দেখা করতে বা বেড়াতে যাবেন না।
আপনি সুস্থ হলেও না। তিনি অসুস্থ হলে তার জন্য দোয়া করুন। হাসপাতালে নিকট আত্মীয়
ভর্তি থাকলে দয়া করে
তার পরিচর্যাকারী ছাড়া কেউ দেখতে যাবেন না। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে
দর্শনার্থী ভিজিট সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আসুন সরকারকে সহযোগিতা করি। মনের
অজান্তে নিজের ক্ষতি করে ফেলতে পারেন।
নয়ঃ বিয়ে, জন্মদিন, আকিকা,
ডিনারের দাওয়াত ভদ্রভাবে পরিহার করুন। ইতোমধ্যে প্রশাসন থেকে এই বিষয়ে নোটিশ
জারি হয়েছে। দয়া করে সবার স্বার্থে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অস্থির হবেন না এই
কয়েকদিন।
দশঃ যারা ব্যাংক বা
অর্থ লেনদেনমূলক কাজে জড়িত টাকা ধরবার সময় গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন। তবে টাকা
ধরার পর সবচেয়ে সহজলভ্য প্র্যাক্টিস হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা।
এগারোঃ প্রবাসী
সংক্রান্ত তথ্য গোপন করবেন না, প্রবাসীরা আমাদের ভাই। তাদের কষ্টের টাকায় আমাদের
অর্থনীতি সচল থাকে। সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। কিন্তু এই অবস্থায় আমাদের
সচেতনতার সাথে বাস্তবতা বুঝতে হবে। সদ্য আপনার এলাকায় আগত প্রবাসীদের বুঝান যে
অন্তত ১৪ দিন বাসায় থাকতে (হোম কোয়ারান্টাইন)। আশ্বস্থ করেন বিষয়টা খুব কঠিন নয়।
স্বজনদের নিরাপত্তার জন্য সদ্য বিদেশফেরত প্রবাসীদের নিয়ম মেনে চলা খুবই জরুরী। আবেগকে প্রশমিত করতে
হবে। প্রয়োজনে সদ্য বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের তথ্য প্রশাসনকে দিয়ে সহযোগিতা করুন। মনে
রাখতে হবে সবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এক নয়।
বারোঃ বিদেশ ভ্রমণ
থেকে বিরত থাকুন। সরকার ইতিমধ্যে বিদেশের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছেন। সুতরাং আসুন
গুরুত্বটা অনুধাবন করি।
তেরোঃ কফ, সর্দি, থুথু বাথরুমের বেসিনে দরজা বন্ধ করে ফেলবেন। এবং এরপর
অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে বের হবেন।
চৌদ্দঃ বাচ্চা খায় না, বাচ্চা ঘুমায় না এ ধরণের রোগের জন্য আপাতত
বাচ্চাদের ডাক্তারখানা, হাসপাতালে নিয়ে
যাবেন না। এতে ওরা আরও বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
পনোরোঃ ভীত হবেন না।
সাহস রাখুন, সচেতন থাকুন, চিকিৎসককে সহযোগিতা করুন। আল্লাহ ভরসা। খুব
বেশি প্রয়োজন না হলে হাসপাতাল বা ডাক্তারের চেম্বার নয়। কারণ, হাসপাতাল বা চেম্বার এখন সংক্রামক স্থান বা
ভাইরাস ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে কাজ
করবে। এখানে অনেক রকম রোগী আসে,তাই করোনা
সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।
সাধারণ সর্দি, কাশি,
জ্বর,
শরীর ব্যাথা, এ ধরণের সমস্যায় হাসপাতাল বা চেম্বারে যাওয়া থেকে বিরত
থাকুন। ঘরে বসে চিকিৎসা নিন। হটলাইনে ফোন করুন বা পরিচিত চিকিৎসকের সাথে ফোনে কথা
বলুন।
উপসর্গ অনুযায়ী জ্বর হলে প্রাপ্ত বয়স্কদের
ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট (৫০০ মি.গ্রা.) ১টা করে ৪ বেলা খাবার পরে, কাশি হলে
এন্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট ফেক্সোফেনাডিন (১২০ মি.গ্রা.) রোজ রাতে একটা ১০ দিন; শুষ্ক কাশি বেশী
হলে ট্যাবলেট মন্টেলুকাস্ট (১০ মি.গ্রা.) রোজ রাতে একটা; গলা ব্যাথার
জন্য কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করবেন; এছাড়া ট্যাবলেট
সিভিট ২৫০ মিগ্রা (ভিটামিন সি) রোজ ১টা করে ২ বেলা চুষে খেতে পারেন। এই ওষুধগুলো
ফার্মেসিতে ওটিসি ড্রাগ (ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রি করা যায়)। দিনে নিয়ম করে
দুইবেলা জ্বর পরিমাপ করবেন।
ষোলোঃ সব বয়সের
মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে। তবে এর সাথে
শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে এবং অতিরিক্ত জ্বর হলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসক এর শরণাপন্ন
হবেন। সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে (সদর হাসপাতাল) করোনা কর্ণার এ যোগাযোগ
করতে পারেন। বয়স ৬০ বছরের বেশী হলে এবং সাথে অন্যান্য অসুস্থতা থাকলে অবহেলা করবেন
না।
সতেরোঃ যারা বেশি
ঝুঁকিতে:আমাদের আশেপাশের বৃদ্ধ/ প্রবীণরা এবং যারা দীর্ঘমেয়াদী রোগে (যেমন: হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হাপানি/শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার,
ডায়াবেটিস) ভূগতেছেন তারা করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে
গুরুতর অসুস্থ হতে পারেন। এমনকি তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি বেশি। তাই আমাদের
আপনজনদের স্বার্থে আসুন সচেতন হই।
আঠারোঃ শিক্ষা
মন্ত্রণালয় থেকে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে 9 এপ্রিল পর্যন্ত। দয়া করে
এই সুযোগে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে বের হবেন না, শপিং এ যাবেন না, কক্সবাজার যাবেন না, নানাবাড়ি বেড়াতে যাবেন না। বাসায় বাচ্চাদের সময় দিন। এই
সময়ে আমাদের সচেতন হওয়াটা খুব জরুরী।
উনিশঃ এই সময় খুব
বেশী দরকার না হলে সেলুন অথবা পার্লারে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। নখ ছোট করে কেটে
রাখুন।
বিশঃ মোবাইল ফোন
প্রতিদিন অ্যালকোহল যুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করুন। এটা জীবাণু ছড়ানোর
প্রধান দুটি মাধ্যম মুখ ও হাতকে একদম কাছাকাছি নিয়ে আসে।
একুশঃ অন্য মানুষের
স্পর্শ এড়িয়ে চলতে কিছুদিন সৌজন্যতাবশত হাত মিলানো এবং কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন।
কারণ আমরা জানিনা কে ভাইরাসের বাহক।
বাইশঃ যতটা সম্ভব
জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হবেন না। বাইরে বের হলে গণপরিবহন যেমন:
লোকাল বাস বা লোকাল সিএনজি অটোরিকশা পরিহার করুন কয়েকটা দিন। মাস্ক ব্যবহার করুন।
তেইশঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র একটি ওয়েবসাইট আছে ‘Myth Busters’ নামে। সেখানে
প্রথমেই বলা আছে ‘COVID-19 virus can be
transmitted in areas with hot and humid climates’। এখন পর্যন্ত পাওয়া সমস্ত তথ্য বলছে গরম এবং
আর্দ্র এলাকাতেও COVID-19 রোগ ছড়াতে
পারে। গরম দেশ ভেবে ভূল ধারণা নিয়ে নিশ্চিন্তে হাত গুটিয়ে বসে থাকার কিছু নাই।
চব্বিশঃ এখন একটি অতি
গুরুত্বপূর্ণ কথা বলি- এই করোনাভাইরাসের ভয়াল আক্রমণে যারা সরাসরি নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে রেখে কাজ করে যাচ্ছেন
সেইসব চিকিৎসক এবং নার্সদের সুরক্ষার জন্য আশা করি এবং বিশ্বাস রাখি শীঘ্রই
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রত্যেকটা হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে গগলস, প্রচুর সার্জিক্যাল মাস্ক, গাউন, স্যানিটাইজার, গ্লাভস,
বুট সরবরাহ করবেন। চিকিৎসকরাও মানুষ, তারা অমর অক্ষয় নন। তারাও সংক্রমিত হতে
পারেন। পার্সোনাল প্রোটেক্টটিভ ইকুইপমেন্টস এর সুব্যবস্থার অপেক্ষায় আছি আমরা।
আসুন আমরা সবাই সরকারকে সহযোগিতা করি।
পচিশঃ তথ্য আমরা সবাই
জানি, কিন্তু মেনে
চলার অভাবটা আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রকট। আসুন বিষয়টাকে হালকাভাবে না নিয়ে এই
কয়েকটা দিন আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিয়ম মেনে চলি। সতর্কতাই পারে ভাইরাস
এর কমিউনিটি ট্রান্সমিশন প্রতিরোধ করতে। আবারো বলছি লিখাটা পড়ে আতঙ্কিত হবেন না, তবে ব্যাপারটাকে দয়াকরে অবজ্ঞা করবেন না।
‘আমি একা কী করব? সবাই তো মানছে না’ - এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনার মাধ্যমে যদি একজনও
ক্ষতিগ্রস্থ হয় সে হলো আপনার প্রিয়জন। সবার উপরে ধ্রুব সত্য, মহান আল্লাহ তায়ালার একান্ত রহমত ছাড়া করোনা থেকে
মুক্তি পাওয়া কখনও সম্ভব নয় । তাই প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলি।
মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চেয়ে বেশী বেশী করে দোয়া করি। আসুন, আল্লাহ
তায়ালার কাছে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা চেয়ে নিজ নিজ ধর্মমতে সর্বদা
প্রার্থনা করি। পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন।
লেখকঃ
ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী
এম. বি. বি.এস
(স্যার সালিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ)
বিসিএস (স্বাস্থ্য)
HSC 2004 Batch
JCPSC
0 coment rios:
You can comment here