।। মুহাম্মদ শামস উদদীন অ্যাডভোকেট।।
বিশ্ব কাঁপানো এক ভাইরাস। নাম করোনা ভাইরাস। উৎপত্তি বৃহৎ শক্তিধর দেশ চীনের উহান
শহরে।সেখানে লাখো লাখো মানুষ আক্রান্ত হয়ে কয়েক হাজার মারা গিয়েছে। চীন থেকে ইরান
দক্ষিণ কোরিয়া ইতালি ফ্রান্স জার্মানি স্পেন। যুক্তরাজ্য থেকে
যুক্তরাষ্ট্র। ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশসহ
১৯৮টি দেশ আজ পর্যুদস্ত। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের হার বেড়েই চলছে।
২০২০ সালের শুরুতেই এ ভাইরাসের আক্রমনের শিকার হয়
চীন। ইতমধ্যে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে এ
ভাইরাস। এর প্রতিকার বা প্রতিরোধ করতে
কুল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না চিকিৎসা
বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞজন। কোনো কোনো
রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান সাহস নিয়ে ভাইরাস মোকাবিলায় ব্যস্ত। কেউবা হোম কোয়ারান্টাইনে কিংবা আইসোলেশনে।
ইতমধ্যে মহামারি গবেষক দল গবেষণাপত্র হাজির করে
জানান দিচ্ছেন যে, প্রায় প্রতি শতকে কোনো না কোনো
মহামারি পৃথিবীতে দেখা দেয়। যেমন কলেরা, প্লেগ
ম্যালেরিয়া সার্স
ইত্যাদি। তবে ঐগুলো সারাবিশ্বে এক সাথে ছড়িয়ে পড়েনি। কিন্তু করোনা
ভাইরাস একযোগে সারাবিশ্বে হানা দিয়েছে।
জাতিসংঘ বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরাম এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) পৃথিবীবাসীর সাহায্যে এগিয়ে আসলেও এ পর্যন্ত করোনার কারণ নির্ণয়সহ এর নিরাময়যোগ্য কোনো
উপায় বের করতে পারেনি। বলা যায় দিশেহারা।
কোনো কোনো রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান করোনা ভাইরাস
মোকাবিলা করতে জাগতিক সকল
উপায় উপকরণ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছেন। কেহ বা এ ভাইরাসকে যুদ্ধের
সাথে তুলনা করে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
যুদ্ধে জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ের সাথে
আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ রেফারেন্সসহ করোনা
ভাইরাস আল্লাহর পক্ষ থেকে দিশেহারা
মানুষদের প্রতি গজব বা
পরীক্ষা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মর্মে বর্ণনা করছেন।
মুসলিম-অমুসলিম জালিম কাফের হিন্দু বৌদ্ধ ইহুদি খৃষ্টান সবাই মহান আল্লাহর সৃষ্টি। সৃষ্টি যখন স্রষ্টাকে
অমান্য করতে থাকে এবং
সীমানা অতিক্রম করে গর্বভরে
চলতে থাকে তখন স্রষ্টা নিরব থাকতে পারেন না। হস্তক্ষেপ করে থাকেন। স্রষ্টা যুগে যুগে অবাধ্য জাতি গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে মাঝে মাঝে ছাড় দেন বটে। ছেড়ে দেন না। অতীতে বড় বড় অত্যাচারীকে শক্ত করে
শিক্ষা দিয়েছেন।
মানুষ হিসেবে স্রষ্টার নির্দেশিত পথে চলাই প্রধান
কর্তব্য। কিন্তু আমরা কখনো স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে যা ইচ্ছে তা-ই করি। ন্যায়-অন্যায়
আজ সমানে সমান। বিচার আজ অবিচারের সামিল। খুন ধর্ষণ যেন মামুলি বিষয়। দূর্বলের উপর
সবলের নিষ্ঠুর অত্যাচারে
আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠছে।
মানুষ আর পশু যেন এক কাতারে। প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানুষ হাত বাড়াচ্ছে অহরহ।
পুরুষে পুরুষে বিয়ে, নারীতে
নারীতে বিয়ে। পশুর সাথে মানুষের বিয়ে। এ যেন
এক কল্পরাজ্য। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বব্যবস্থা ভেঙে
পড়বে। যা কোনো অবস্হাতেই কাম্য নয়। তাই মহান স্রষ্টা তাঁর নিখুঁত বিন্যাসকে ঠিকেয়ে
রাখার জন্যে মাঝে মধ্যে গজব আর আজাব
কিংবা পরীক্ষা নিয়ে আসেন। তারই অংশ হিসেবে হয়তো করোনা
ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটিয়েছেন। বিশ্ববাসীকে
সতর্ক করার জন্য আল্লাহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও মহামারী রোগ ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটান।
আমার ব্যক্তিগত
ধারণা ও বিশ্বাস আল্লাহ
দীর্ঘদিন এ মহামারীতে আমাদেরকে রাখবেন না। মুক্তি
দিবেন আশা করি। তবে এর আগে আমাদের
আচার-আচরণ কথা-বার্তা
শক্তিমত্তা সামলিয়ে নিতে হবে। তাঁর কাছে ধর্ণা দিতে হবে। অপরাধের স্বীকৃতি দিয়ে
তাঁর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
আসুন আমরা সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করে চলি। তাহলে
আল্লাহ এ মহা বিপদ থেকে হয়তো পরিত্রান দিবেন। আল্লাহর কাছে নতশিরে ক্ষমা চাই।
লেখকঃ বিশিষ্ট আইনজীবী,
জর্জকোর্ট, সুনামগঞ্জ।
২৬/৩/২০২০খ্রিঃ
0 coment rios:
You can comment here