।। ইদাদুল হক যুবায়ের।।
সুনামগঞ্জ জেলার অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনপদ দক্ষিণ দোয়ারা। এ এলাকার জনশক্তিকে ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত করে, তাদেরকে একদল তাকওয়াবান মুক্তাকী হিসেবে গঠন করার লক্ষ্যে কতিপয় পরহেজগার ও দ্বীন দরদী মানুষ প্রতিষ্ঠা করেন “দারুল হেরা জামেয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা”, মঙ্গলপুর।
দারুল হেরার স্বপ্নদ্রষ্টরা সেরকম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে চেয়েছিলেন, যেখানে শরীয়াতের সঠিক আকীদায় বিশ্বাসী, অর্থ উপার্জনের মানসিকতা মুক্ত একদল সত্যিকার আলেম হাদী তৈরী হবে। যারা এ গোমরাহ্ জাতিকে সুন্নতে নববীর আদর্শে গড়ে তুলে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। সর্বোপরি শরীয়তের আদর্শে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত, স্বাবলম্বী, সমাজে নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্য নায়েবে নবী, তাকওয়াবান মুত্তাকী, মুহসীন তৈরী করার মহান উদ্দেশ্য নিয়েই যে সকল আল্লাহর বান্দারা দারুল হেরা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আজ তারা সফল। সার্থক তাদের শ্রম। ধন্য তাঁদের ইহকালীন ও পরকালীন জীবন। তাকওয়াবান মানুষ গড়ার একটি আঙ্গিনা উপহার দিয়ে তাঁরা মানব হৃদয়ে বরণীয়, অতুলনীয় ও অভূলনীয় হয়ে থাকবেন জনম জনম ধরে। আমরা কখনো ভূলবনা ও ভূলতে পারি না তাদের অবদান। তাই তো দারুল হেরার প্রতিষ্ঠাতা, স্বপ্ন দ্রষ্টা, অর্থ দাতা সবার জন্য দুজাহানের কল্যাণ কামনা মহান রবের কাছে।
দারুল হেরা জামেয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পূর্ণ আদর্শ অনুসরণে, আরবী ও ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। শুধু তা-ই নয় অত্র প্রতিষ্ঠান দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় এমন অনেক কীর্তিমানদের উপহার দিয়েছে যাদের অবদানে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার মুহাক্কিক আলেম বের হয়ে মুসলিম উম্মাহর বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বীন ইসলামের সহীহ খেদমত করবে। একদল সুপন্ডিত আদর্শ মোদাররেসীনে কেরামের পরিপূর্ণ তালিম ও তারবিয়াতের মাধ্যমে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি যুগ যুগ ধরে মানব হৃদয়ে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকবে।
১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত দারুল হেরা জামেয়া অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে হাটি হাটি পা পা করে এ পর্যন্ত এসে উপনিত হয়েছে। দারুল হেরার জয় ধ্বনি আর সুনাম-সুখ্যাতি ধ্বনিত আজ চতুর্দিকে। বিশাল বৃক্ষ সদৃশ এ দারুল হেরার শাখা প্রশাখা দিক বিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। দারুল হেরা থেকে বের হয়ে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী আজ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শুনার মাধ্যমে দারুল হেরার নাম, খ্যাতি ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস পাচ্ছে। দেশের সিমানা পেরিয়ে বর্হিবিশ্বে দারুল হেরার প্রতিনিধিরা তাদের যোগ্যতার বহি:প্রকাশ ঘটাবে সে বিষয়টি আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন তৎকালিন দারুল হেরার দুর্দিনের (ভারপ্রাপ্ত সুপার) কান্ডারী আমাদের শ্রদ্ধেয় উস্তাদ মাওলানা আতিকুর রহমান তারেক।
সে দিন ছিল ২০০২ সালের জুলাই মাস। আমরা মাত্র দাখিল পরীক্ষা দিয়ে ফল পাওয়ার অপেক্ষা করছি। তিনি আমাদের ডাকলেন, আমাদের নিয়ে বসলেন, দারুল হেরার প্রাক্তণ ছাত্রদের নিয়ে একটা সংগঠন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যাখ্যা করলেন। তিনি আমাদের প্রাক্তণদের অনেক স্বপ্ন দেখালেন। কবির কথার প্রতিধ্বনি-
“স্বপ্ন কে ছেড়ে দাও আকাশ পানে স্বপ্নকে বড় কর আজকে,
স্বপ্নই মানুষের আসল শক্তি স্বপ্নই সহজ করে কাজকে।”
দারুল হেরার কল্যাণে কাজ করার উৎসাহ প্রদান করলেন, দারুল হেরার ভবিষ্যত, দারুল হেরার সমস্যা-সম্ভাবনার কথা আমাদের জানালেন ও দারুল হেরার সুদিন-দুর্দিন এ প্রাক্তণ ছাত্র ভাইদের করণীয় ও ভূমিকার গুরুত্ব বর্ণনা করলেন। যেই ভাবনা, যেই কল্পনা সেই কাজ। সভ্য লোক কখনো তার শিকড়কে ভূলতে পারে না। মুহতারামের উৎসাহ উদ্দিপনায় আমরা দারুল হেরা প্রাক্তণ পরিষদ গঠনের দিকে পা বাড়ালাম।
আমাকে যুগ্ন আহবায়ক ও দারুল হেরার প্রথম ব্যাচের ছাত্র মাওলানা শাহীদুল ইসলাম মোশাররফকে আহবায়ক করে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হলো। সংবিধান রচনা হলো। পরবর্তীতে গঠন করা হলো মূল কমিটি। শুরু হলো “দারুল হেরা প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ” এর প্রাতিষ্ঠানিক পথ চলা।
এমন এক সময় ছিল যখন দারুল হেরা এম.পিও ভুক্ত হয়নি, শিক্ষকগণ প্রায় বিনা বেতনে শিক্ষকতা করতেন, সে সময় দারুল হেরায় ছিল না বিধি সম্মত পরিপূর্ণ শিক্ষক স্টাপ, ছিলনা বিষয় ভিত্তিক কোনো শিক্ষক। তখন আমরা ছাত্ররা (আজ যারা প্রাক্তন) ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ধান কালেকশন করতাম। সেই ধান বিক্রি করে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে শিক্ষকদের নাম মাত্র সম্মানি দেয়া হতো। মাদরাসার প্রয়োজনেই ক্লাসকে কুরবানি দিয়ে, বড় বড় ছাত্রদের নিয়ে গ্রæপ করে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে শিক্ষকগণের বেতনের জন্য ধান কালেকশনের জন্য আমরা চষে বেড়িয়েছি। যখন আমরা বিভিন্ন এলাকায় ধান কালেকশনে যেতাম তখন বাজার থেকে ডাল আর ডিম কিনে নিয়ে যেতাম এবং গ্রামের যে কোনো একটি পরিবারে তা দিয়ে আমরা বলতাম যে, আমাদেরকে একটু রান্না করে খাওয়াবেন। সারা দিন ধান কালেকশন শেষে বিকালে এসে ঐ বাড়ীতে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করতাম। এরপর ছাত্ররা নিজ নিজ ঘাড়ে ধানের বস্তা বহন করে নিয়ে মাদরাসায় এসে ধান জমা করতাম। তা বিক্রি করে শিক্ষকগণকে নাম মাত্র সম্মানি দেওয়া হতো। সেই শিক্ষকগণ নিজেদেরকে কুরবানি দিয়েছেন দারুল হেরার জন্য। আমাদের মতো নগন্য ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। আজ আমরা গর্বিত সেই দারুল হেরার ও দারুল হেরার শিক্ষকগণে জন্য। আমাদের ভাবতে ভালই লাগে যে, সেই ছাত্ররাই আজ প্রাক্তণ ছাত্র পরিষদের সদস্য, প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের এর কান্ডারী।
দারুল হেরার ছিল এক সময় করুন ও কঠিন সময়। তখনকার সময়ে তথা ১৯৯৬ সালের দিকে যারা শিক্ষকতা করতেন প্রায় সবাই বিনা বেতনে শিক্ষকতা করতেন। বেতন ছাড়াই শিক্ষকতা করতেন মাওলানা মুজাম্মিল হুজুর। বাবা ছাড়া উনি কাউকে সম্মোধন করতেন না। মৌলভী সাজিদুর রহমান (চানমিয়া হুজুর), মৌলভী মোজাম্মিল হুজুর, মৌলভী আব্দুর রহীম হুজুর, আখলিছ মিয়া স্যার, মাওলানা নজরুল ইসলাম হুজুর, মাস্টার জিল্লুর রহমান স্যার এবং মাস্টার মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন স্যারসহ আরো কিছু শিক্ষক যাদের অবদান অস্বীকার করলে আল্লাহ নারাজ হবেন। আমাদের সব বিষয়ের ক্লাসই ঘোর ফিরে উনারা নিতেন। শিক্ষক সংকট এমন প্রবল ছিল যে, উনারা ক্লাস না নিলে সবকিছুই বন্ধ হয়ে যেতো।
একটা স্মৃতি শেয়ার না করলেই নয়। অনেক দিন থেকে মোজাম্মিল হুজুর বাড়ীতে। আমাদের উনি নাই মানে আমাদের সব ক্লাস বন্ধ। মাদরাসার কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বললেন, যাও তোমাদের হুজুরকে তোমরা নিয়া আসো। তখনকার সময়ে তো এ রকম মোবাইল ছিল না। আমরা কয়েকজন শহীদুল ভাইয়ের নেতৃত্বে চলে গেলাম উনার গ্রামের বাড়ী হরিণাপাটিতে। উনি বললেন, বাবারা আমার ঘর বানাইতেছি। কালকেই আসবো এবং ক্লাস নিবো।
শুধু তাই নয়, তৎকালিন সময়ের প্রেক্ষাপটটি এমন ছিল যে, আমরা ছাত্ররা দারুল হেরা মাদরাসার ঝাড়–দার ও পিয়ন এর কাজ করতাম। তখন সরকারী অনুদান ছিল না। ছিলনা পর্যাপ্ত বেঞ্চ ও ডেস্ক। ছুটির পর সিনিয়র ছাত্র ভাইদের অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হতো। ছুটির পর নিজ বাড়ীতে না গিয়ে প্রত্যেকে প্রত্যেক ক্লাসের ডলু বাশ দিয়ে তৈরি ব্রেঞ্চকে মেরামত করতে হতো। যাওয়ার সময় জাতীয় পতাকা গুছিয়ে মাদরাসা তালাবদ্ধ করে যেতে হতো এবং প্রতে্যুষে এসে আগেই জাতীয় পতাকা উড্ডয়নের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছাত্র ভাইদের উপরই ন্যস্ত ছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো লাইব্রেরী ছিল না। সর্বপ্রথম আমরা ছাত্র সংসদের উদ্যেগে লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠার করার ব্যবস্থা করি। যেখান থেকে কচি কাচারা বই নিয়ে পড়ত। আমাদের সময়েই সর্বপ্রথম ছাত্র সংসদের উদ্যেগে দারুল হেরার দশক পূর্তি স্মারক “আশ-শুকুর” প্রকাশ করি। যে স্মারকের মাধ্যমে দারুল হেরার অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য ফুটে তোলার চেষ্টা করি। তৎকালিন সময়ের দারুল হেরা আর আজকের দারুল হেরার মধ্যে অনেক ফারাক। তাই তো কেন যেন অতীতের দারুল হেরার ইতিহাস, দারুল হেরার স্মৃতিতে বর্তমানের দারুল হেরার সাথে মিলাতে গেলে ভাবনার জগতে মনের মধ্যে এক অজানা আনন্দের শিহরণ জাগরিত হয়। গর্ব, অহংকার ও আনন্দে মন ভরে ওঠে। তৃপ্তির নি:শাসে বুক ভরে যায়।
দারুল হেরা জামেয়া আজ জেলার শ্রেষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি লাভ করেছে। আমরা দারুল হেরাকে আরো অনেক দূর দেখার স্বপ্ন হৃদয় আকাশে লালন করি। এ জন্যই তো, আমরা দারুল হেরা কে নিয়ে গর্ব করি। কারণ, এ দারুল হেরাই আমাদেরকে মানুষের মত মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। দারুল হেরা শিক্ষা দিয়েছে কীভাবে নিজেকে কুরআনের রঙে রঙ্গিন করতে হয়। কীভাবে নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গঠন করতে হয়। আমরা নিজেকে ন্যায় পরায়ন, সত্যনিষ্ট, পরপকারী প্রকৃত মানুষ হিসেবে গঠন করার প্রত্যয় গ্রহণ করেছি দারুল হেরা থেকে অর্জিত জ্ঞান এর মাধ্যমে। দুনিয়ার জীবনে কল্যাণ লাভ ও পরকালীন জীবনে মুক্তির পথ দেখিয়েছে দারুল হেরা। দারুল হেরাই উচ্চ শিক্ষার দ্বার উম্মুক্ত করে দিয়েছে। আমাদের সকল শিক্ষকদের আজ শ্রদ্ধাভরে তাদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। তাঁদের অবদান ভূলে যাবার নয়। তাঁরা আমাদের হৃদয় মনিকোটায় থাকবেন চিরস্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে। দুনিয়া ও পরকালে মহান শ্রষ্টার কাছে তাদের জন্য উপযুক্ত প্রতিদান এর জন্য মহামহিম রবের নিকট আকুতি পেশ করছি।
আমরা যারা আজ প্রাক্তণদের তালিকায় চলে এসেছি তাদের উপর দারুল হেরার হক্ব তথা অধিকার রয়েছে। আমরা ভূলতে পারিনা আমাদের শিকড় কে, আমাদের দারুল হেরা কে। দারুল হেরার খ্যাতি শুনলে যেমন আমাদের হৃদয় বীণায় আনন্দের শিহরণ জাগরিত হয় ঠিক তেমনি দারুল হেরার দুর্নাম শুনলে আমাদের আমাদের হৃদয়ের মনি কোটায় কষ্টের ঢেউ উদিত হয়। কারণ, দারুল হেরা আমাদের প্রাণের স্পন্দন ও হৃদয়ের আবেগ, দারুল হেরা আমাদের ইতিহাস, এটা আমাদের ঐতিহ্য। তাই তো দারুল হেরা কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের প্রাক্তণদেরও প্রাণের দাবি যে, তারা আমাদেরকে ধমক দিয়ে দূরে তাড়িয়ে দিবেন না। তাঁরা আমাদের অভিভাবক ও পৃষ্টপোষক হিসেবে আমাদের কাছে ডেকে নিবেন। আদর করবেন। আশায় সিক্ত করবেন। হতাশায় হতাশাগ্রস্ত করবেন না। প্রাক্তণ পরিষদ এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আমাদেরকে তাদের সকল প্রকার সাহায্যের হাত প্রসারিত করে দিবেন। পরিষদের কর্মসূচি বাস্তবায়নকল্পে গঠন মূলক পরামর্শ দিয়ে, আমাদের ভূলগুলো সংশোধন করে দিয়ে প্রাক্তণ পরিষদকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবেন। কারণ, আমরা তো ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থসিদ্ধির জন্য প্রাক্তণ পরিষদ গঠন করিনি। আমাদের উদ্দেশ্য সৎ ও মহৎ। যাতে কোনো সন্দেহ নেই।
দারুল হেরার সকল প্রাক্তণরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে, নিজেদের যোগ্যতা ও সকল প্রকার সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেও এ পরিষদ কিছুটা হলেও কিছু অবদান রাখতে চায় দারুল হেরার উন্নয়ন, উন্নতি, অগ্রতি ও কল্যাণে। কারণ, আমরা দারুল হেরার গর্বিত প্রাক্তণ ছাত্র। দারুল হেরার জন্য আমরা আমাদেরকে সপে দিব এটাই দারুল হেরার প্রাপ্যতা, দারুল হেরার অধিকার। দুনিয়ার ইতিহাসে প্রাক্তণরা অনেক কিছুই করেছে স্বীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য। এর যতেষ্ট উদাহরণও আছে। তাই প্রাক্তণ পরিষদ কে গুরুত্বহীন, অপ্রয়োজনীয় ভাবার সুযোগ নেই।
প্রাক্তণ ছাত্র পরিষদ গঠন হওয়ার পর থেকে আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেও চেষ্টা করছি দারুল হেরার কল্যাণে কিছু হলে কিছু করার। আমরা চাই দারুল হেরার কাছে থাকতে, পাশে থাকতে। দারুল হেরার ছায়াতলে বার বার জড়ো হয়ে স্মৃতি রুমান্তর করতে। দারুল হেরা যদি আমাদের কাছে যাওয়ার, কাছে বসার সুযোগ করে দেয়, আমাদের আদর করে কাছে ঠেনে নেয়, তাহলে আমরা দারুল হেরার জন্য আমাদের সবটুকু বিলিয়ে দিতে আমরা সদা প্রস্তুত। আমাদের জীবন গঠনে আমাদেরকে সব কিছুই দিয়েছে দারুল হেরা জামেয়া কিন্তু আমরা কিছুই দিতে পারি নাই দারুল হেরাকে। তাই আমরা প্রাক্তণরা দারুল হেরার জন্য আমাদের প্রেম, ভালবাসা, শ্রদ্ধা, সম্মান, মেধা, যোগ্যতা চিন্তা সবটুকুন উজাড় করে দিয়ে সবার যৌত প্রয়াসে, দারুল হেরার জন্য আমাদেরকে বিলিয়ে দিতেই গঠন করেছি “দারুল হেরা প্রাক্তণ ছাত্র পরিষদ”।
আমরা ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য এখানে জড়ো হয়নি। আমাদেরকে হিংসা করলে, দুরে ঠেলে দিলে, অসহযোগিতা করলে আমাদের কিছুই যাবে না আসবেনা। আমরা চাই দারুল হেরার উন্নতি, অগ্রতি সুনাম আর সুখ্যাতি। দারুল হেরা থেকে বের হওয়ার পর আমরা চাই প্রাক্তণ পরিষদের মাধ্যমে একই সুঁতার বাঁধনে আবদ্ধ থাকতে। শীষা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় সংঘবদ্ধ হয়ে দারুল হেরার জন্য নিরলসভাবে কাজ করতে।
তাই সকল সীমাবদ্ধতার মধ্যে আমরা প্রাক্তণরা সকল মান অভিমান পিছনে ফেলে, অতীত সব দু:খ-কষ্ট ভূলে গিয়ে, দৃপ্ত শপথে হাতে হাত রেখে, প্রত্যেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা দারুল হেরার কল্যাণ সাধনে এগিয়ে যেতে চাই সস্মুখপানে। শিক্ষা সংস্কৃতির বিকাশ কল্পে, নিজেদেরকে কুরআনের রঙ্গে রঙ্গিন করার কাজে আত্মনিয়োগ করব এটাই হোক আমাদের অঙ্গিকার। কারণ, দারুল হেরা আমাদের গর্ব, দারুল হেরা আমাদের অহংকার।
আল্লাহ আমাদের সকলকে তাঁর দ্বীনের জন্য কবুল করুন। দারুল হেরা প্রাক্তণ পরিষদ কে তাঁর মাকসুদে মাঞ্জিল পানে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে এক হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।
ব্যাচ ২০০২
সহকারি শিক্ষক, জালালবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ,
জালালাবাদ সেনানিবাস, সিলেট।
ইমেইলঃ zubairjcpsc@gmail.com
ইমেইলঃ zubairjcpsc@gmail.com
মোবাইলঃ ০১৭১২৩৭৪৬৫০
0 coment rios:
You can comment here