Wednesday, April 8, 2020

ঘরে বসে চেষ্টা করি, হাতের লেখা সুন্দর করি। পর্ব-১


।। হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী।। 

“ঘরে বসে চেষ্টা করি, হাতের লেখা সুন্দর করি।” পর্ব-১

লেখা পড়া বিদ্যার্জনের হাতিয়ার। লেখা পড়া ছাড়া যেমন বিদ্যার্জনের চিন্তা করা যায় না, তেমনি পড়া ছাড়াও বিদ্যার্জনের কল্পনা করা যায় না। তাই শব্দ যুগল একটি অপরটির পরিপূরক। অন্য কথায় বলা যায়, লেখা ও পড়া শব্দ দু'টি একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।

মানুষের জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার লেখার মাধ্যমে। লেখার মাধ্যমে বুঝা যায় ব্যক্তির বিদ্যা ও জ্ঞানার্জনের পরিধি কতটুকু। বাহ্যিক চোখে মানুষের শিক্ষার গভীরতা আঁচ করা অনেক সময়ই সম্ভব  হয় না। লেখা দেখে সাধারণত ব্যক্তির প্রতি মানুষের সু-ধারণা অথাব কু-ধারণা সৃষ্টি হয়ে থাকে। যদিও এ ধারণা অনেক সময় সঠিক নাও হতে পারে। কারণ, এমনও অনেক লোক আছেন যাদের সম্বন্ধে অন্য পরিচয় জানা না থাকলে শুধু লেখা দেখে বিশ্বাস করা যায় না যে, তিনি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত লোক।

পক্ষান্তরে, সুন্দর লেখার অধিকারী স্বল্প শিক্ষিত এমন অনেক লোক আছেন, যাদের লেখা দেখে একথা বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় যে, তিনি উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন নি। লেখার উপর পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই শিক্ষা জগতে সুন্দর হাতের লেখার গুরুত্ব অপরিসীম।

লেখা সুন্দর হোক, এটা সবাই চায়। তাই স্বভাবতই জানার আকাঙ্খা জাগে যে, কীভাবে লেখা সুন্দর করা যায়। বিষয়টি আসলে অনুশীলনের ব্যাপার। কাজেই নিছক পরামর্শের দ্বারা এ গুণ অর্জন সম্ভব নয়, তবে কতিপয় দিকের প্রতি খেয়াল রাখলে বিষয়টি অনেকটা সহজ হবে সন্দেহ নেই।

বিষয়টি যেহেতু খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আমি কয়েকটি পর্বে এ বিষয়ে কিছু প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদানে সচেষ্ট হবো। আশা করা যায় একজন ব্যক্তি যে হাতের লেখা আসলেই সুন্দর করতে চায় তার জন্য এ নির্দেশনাগুলো খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

লেখা সুন্দর করার জন্য বিবেচ্য বিষয়সমূহ নিম্নরূপ:

এক-সিদ্ধান্তঃ
প্রথমে মজবুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, আমাকে লেখা সুন্দর করতেই হবে। তবে শুধু সিদ্ধান্ত নিলেই হবে না, সাথে সাথে উদ্যোগও গ্রহণ করতে হবে।

দুই-বর্ণমালার বই কেনাঃ
ভালো ভালো বর্ণমালার বই দেখে দেখে প্রত্যেকটি অক্ষর হুবহু অঙ্কনের চেষ্টা এবং প্রত্যেকটি বর্ণের কোন অংশ বড়, কোন অংশ ছোট, কোথায় কোন অংশ কীভাবে বাঁকা হয়েছে ইত্যাদির প্রতি তীক্ষ্ম নজর রেখে লেখার চেষ্টা করতে হবে।

তিন-ধৈর্য ধারণ করাঃ
লেখা সুন্দর করার জন্য ধৈর্য গুণের দরকার। এজন্য বার বার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিদিন নির্ধারিত একটি সময় এ জন্য ব্যয় করতে হবে। এভাবে কয়েক সপ্তাহ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে ক্রমান্বয়ে লেখা সুন্দর হতে থাকবে।
চার- জায়গা রাখতে হবেঃ
লেখার সময় ফাঁকা রাখতে হবে। অর্থাৎ, একটি ‘শব্দ থেকে শব্দএবং লাইন থেকে লাইনেরমাঝে। হাতের লেখা যতই খারাপ হোক, শিক্ষক যেন লেখকের লেখা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন।

পাঁচ- লাইন সোজা রাখাঃ
লাইন সোজা করে লেখতে হবে। অসুবিধা হলে প্রথমে কাঠ-পেন্সিল দিয়ে রেখা টেনে অথবা বিন্দু রেখা টেনে লেখতে হবে। এভাবে কয়েক দিন চেষ্টা করলে লাইন সোজা হয়ে যাবে।

ছয়-অক্ষর সমান হওয়াঃ
প্রতিটি অক্ষর সমান করে লেখতে হবে। কোনো অক্ষর ছোট এবং কোনো অক্ষর বড় হলে লেখা অসুন্দর দেখায়।

সাত- একই কলম দিয়ে লেখাঃ
নিয়মিত একই ধরনের কলম দিয়ে লেখার অভ্যাস করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, কলমের মানের উপর লেখার সৌন্দর্য অনেকাংশে নির্ভশীল।

চলবে ------------------------

লেখাটি আমার লেখা প্রগতির ডাক বইয়ের ১১৭ ও ১১৮ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য।


লেখকঃ
হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী,  
(জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত)
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত)
সরকারি এস. সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সুনামগঞ্জ।
মোবাইলঃ 01715 142715
ইমেইল: 
mashhudchowdhury@gmail.com
ইউটিউব চ্যানেল:
https://www.youtube.com/channel/UC8ZSiWdwj6NkC67WPd5I1sQ?view_as=subscriber 
শুভেচ্ছা টিভি - Shuveccha TV 
Facebook: 
Hafiz Md Mashhud Chowdhury
Facebook Page: 
হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী
Somewhereinblog.net: 
হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী  
    



শেয়ার করুন

Author:

1 comment:

You can comment here