।। হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী।।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস জনিত বিশেষ পরিস্থিতি
থেকে মুক্তির লক্ষ্যে পাকিস্তান সরকার চলিত পবিত্র রামাদান মাস শুরুর প্রাক্কালে সরকারি
উদ্যোগে গোটা দেশবাসীকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি জাতীয় দুয়ার মাহফিল সম্পন্ন করেছেন।
সে দেশের বিশিষ্ট আলেম জনাব মাওলানা তারিক জামিল সত্যবাদিতা ওয়াদা রক্ষা অশ্লীলতা
বর্জন হালাল জীবিকা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে উপদেশ মূলক কিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য শেষে
দুয়া পরিচালনা করেন। ইউটিউবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত রয়েছে।
বাহ্যত বিষয়টি প্রয়োজনীয় ও প্রশংসাযোগ্য। আর যে
কোনো জাতীয় দুর্যোগের সময় মহান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে দুয়া প্রার্থনা করা
অবশ্যই উচিত। নাস্তিক বলে পরিচিত লোকদের মুখ থেকেও বিপদের দিনে আল্লাহর নাম নিতে অনেক
সময় শোনা যায়।
কাজটি যদিও অত্যাবশ্যকীয় ও প্রশংসাযোগ্য, কিন্তু পাকিস্তানের
ঐ কাজের মধ্যে দুটি ত্রুটি রয়ে গেছে। যার ফলে মহৎ উদ্যোগ হওয়া সত্ত্বেও তাতে কাঙ্ক্ষিত
ফলাফল না আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ত্রুটিগুলো উল্লেখের আগে প্রার্থনা কবুলের জন্যে
দু'টি অপরিহার্য কাজ সম্পর্কে জেনে নেয়া জরুরি। অপরিহার্য কাজ দুটি
হলো------
আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনার আগে----
১. নিজেকে প্রথমে বিশুদ্ধ ও সংশোধন করে নিতে হয়।
২. দুয়া প্রার্থনা ও তাওবার কাজটি সঠিক ও যথাযথ
পদ্ধতিতে করতে হয়।
** নিজেকে বিশুদ্ধ ও সংশোধনের উপায় হলোঃ---------
ক) অতীতে করা ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত সকল ভুলভ্রান্তিকে
চিহ্নিত করে এই মুহূর্ত থেকে সেসব ছেড়ে দেয়ার বা সংশোধন করার মনে-প্রাণে মজবুত সিদ্ধান্ত
নিতে হবে।
খ) অতীতের ভুলগুলো শোধরানোর বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা
ও বলিষ্ঠ কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
গ) যেসব মানুষ, গোষ্ঠী, দল বা জাতির
ক্ষতি করা হয়েছে বা কষ্ট দেয়া হয়েছে, তাদেরকে খুশি করার সর্বোচ্চ
চেষ্টা চালাতে হবে।
ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক তাওবা-ইস্তেগফার বা দুয়া
প্রার্থনার ক্ষেত্রে রাসূলের শেখানো বা শরীয়ত সম্মত পদ্ধতি রয়েছে।
বর্তমানে পাক-ভারত-বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানে অধিকাংশ
ক্ষেত্রেই যে পদ্ধতিতে দুয়া ও তাওবা ইস্তেগফার করা হয়, সে পদ্ধতি অনেকটা
মনগড়া। শরীয়তে অভিজ্ঞ আলেমগণের নিকট সে পদ্ধতি সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয়।
আর এজন্যেই ব্যক্তিগতভাবে ও সমষ্টিগতভাবে প্রচুর
পরিমাণে তাওবা ও দুয়ার অনুষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও এসবের ভালো ফলাফল তেমন একটা দেখা যায়
না।
উক্ত বিষয়গুলো ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য, তেমনি রাষ্ট্রের
ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
উক্ত দুটি কাজের কোনোটিই পাকিস্তান সরকার সঠিকভাবে
করেনি বা করতে পারেনি। তাই ভালো উদ্যোগ সত্ত্বেও তাদের দুটি বড়ো ত্রুটি রয়ে গেলো।
অর্থাৎ,
১. তাওবা ও দুয়ার অনুষ্ঠানটি করার আগে রাষ্ট্র
সরকার ও জনগণকে পরিশুদ্ধ ও সংশোধন করার (উপরোক্ত পন্থায়) যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তাছাড়া
২. ক্ষমা প্রার্থনা দুয়া ও তাওবার অনুষ্ঠানটি
সঠিক ও যথাযথভাবে রাসূলের শেখানো পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়নি।
উক্ত ত্রুটির কারণে পাকিস্তানের এমন একটি মহৎ আয়োজনের
কাঙ্ক্ষিত ফলাফল তেমন একটা আশা করা যায় না।
কাজেই পাকিস্তানের ভুল থেকে আমাদের সকলেরই শিক্ষা
নিয়ে অনুরূপ ভুল না করার শিক্ষা নেয়া উচিত।
বর্তমান পরিস্থিতি থেকে সফল উত্তরণের জন্যে গোটা
বিশ্বের বিশেষ করে আমাদের দেশের সরকার ও প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল নাগরিককে সংশোধন
প্রয়াসের আওতায় আনার জন্যে একটি জাতীয় দায়মুক্তি দিবস পালন সময়ের অপরিহার্য দাবি। এ
বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা আমার লেখা 'শান্তির ডাক' ও 'প্রগতির ডাক' বই দু'টিতে উল্লেখ
রয়েছে। বিষয়টির প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
(চলবে)
লেখকঃ
হাফিজ মোঃ
মাশহুদ চৌধুরী,
(জাতীয়
পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত)
প্রধান
শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত)
সরকারি এস.
সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ।
মোবাইলঃ
01715 142715
ইমেইল:
mashhudchowdhury@gmail.com
mashhudchowdhury@gmail.com
ইউটিউব চ্যানেল:
https://www.youtube.com/channel/UC8ZSiWdwj6NkC67WPd5I1sQ?view_as=subscriber
শুভেচ্ছা টিভি - Shuveccha TV
শুভেচ্ছা টিভি - Shuveccha TV
Facebook:
Hafiz Md Mashhud Chowdhury
Hafiz Md Mashhud Chowdhury
Facebook Page:
হাফিজ মোঃ
মাশহুদ চৌধুরী
Somewhereinblog.net:
হাফিজ মোঃ
মাশহুদ চৌধুরী
0 coment rios:
You can comment here