।। মাওলানা নুরুর
রহমান।।
করোনা ভাইরাস থেকে
বাচঁতে কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দোয়াসমূহ
আল কুরআন হচ্ছে মানব জাতির হেদায়ত সমেত মহা নেয়ামত। কুরআন
কারিম হেদায়েত প্রাপ্তদের জন্য অবতীর্ণ হলেও সব মানুষের কথাই কুরআনে বলা হয়েছে।
দেখানো হয়েছে মুক্তির পথ। আশার বাণী শুনিয়েছেন রহমত ও মাগফিরাতের। যার স্বপক্ষে
অগণিত আয়াত ও হাদীস রয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার রহমত আমার গোস্বাকে অতিক্রম করেছে। (মুসলিম) অর্থাৎ আল্লাহ
তাআলার রহমত এত ব্যাপক যে তাঁর গোস্বা তাঁর দয়ার কাছে হার মেনেছে। আল্লাহর রাগের
তুলনায় রহমতের স্থান অনেক ব্যাপক। বিধায় বান্দা যতই রাগ হওয়ার মতো কাজ করুক না
কেন, ক্ষমা চাইতে দেরি, মাপ করে দিতে দেরি করেন না।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে আমার বান্দারা! যারা নিজের আত্মার
ওপর জুলুম করেছো। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হ্ইও না। নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ সমস্ত
গুনাহ মাপ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (সূরা যুমার: আয়াত ৫৩) জাহেলি যুগে যারা
হত্যা, ব্যভিচার, চুরি, ডাকাতি এবং এ ধরনের বড়
বড় গুনাহর কাজে লিপ্ত ছিলেন আর এসব অপরাধের কখনও মাপ হবে বলে নিরাশ ছিল। তাদের
বলা হয়েছে, তোমরা যা কিছুই
করেছো এখনও যদি তোমরা আল্লাহর আনুগত্যের দিকে ফিরে আস তাহলে সব বড় বড় অপরাধ মাপ
হয়ে যাবে। আর আমরাতো মুসলমান। আল্লাহকে বিশ্বাস করি। হয়ত না জেনে বা না বুঝে
অন্যায় করি; আমরা আল্লাহর দরবারে
ক্ষমা প্রাথর্না করলে তিনি মাপ করে দিবেন। এই আশা পোষণ করাই ঈমানের দাবি। বর্তমান
সমাজে এক শ্রেণির লোক মানুষের গুনাহ দেখে বলে থাকেন- এ লোক একেবারে শেষ, জাহান্নামে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আল্লাহর রহমত তাদের জন্য
অনেক বেশি যারা তাদের অভিসম্পাত করেন। কারণ ঐ বান্দা যদি আল্লাহর দরবারে চোখের
পানি ছেড়ে দিয়ে তাওবা করে তবে আল্লাহর রহমতের দরিয়া ঢেউ শুরু হয়ে যায়। আল্লাহ
ঐ বান্দাকে মাপ করে দেন। কুরআন ও হাদীসের বক্তব্য থেকে আমরা বলতে পারি যে, বান্দাহ
যতই পাপি হোক না কেন যদি কুরআন ও হাদীসের বর্ণিত দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা
প্রার্থী হয় আল্লাহ অবশ্যই বান্দাকে ক্ষমা করে দিবেন। নিম্নে কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত
দোয়াসমূহ উল্লেখ করা হলো।
আল কুরআনে বর্ণিত দোয়াসমূহ:
(১) হে আল্লাহ! আপনি
প্রিয় বান্দাদের জন্য বেহেশত প্রস্তুত করেছেন। কাফের মুশরেকদের ইহা হতে নিরাশ ও
বঞ্চিত করেছেন। ফিরিশতাদের জন্যও বেহেশত প্রয়োজন নাই। আপনি নিজেও বেহেশতের
মুখাপেক্ষী নন। সুতরাং বেহেশত আমাদের ব্যতিত আর কার জন্য? হে আল্লাহ! আপনি আমাদের বেহেশত দান করুন। আল্লাহ মানবজাতিকে
কুলুষমুক্ত জীবন দান করুন। রহমতের হকদার বানিয়ে দিন। সারা পৃথিবী আল্লাহ এবং
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আনুগত্যের মাধ্যমে ইসলামি সমাজ কয়েম
করুন। আমিন। সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি
জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের
নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, আপনি যদি আমাদেরকে
ক্ষমা না করেন, তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের
অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ব। [সূরা-
আরাফ ২৩]
(২) হে আমার প্রতিপালক!
আপনি ক্ষমা করুন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে
এবং যারা মুমিন হয়ে আমার গৃহে প্রবেশ করে তাদেরকে এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন
নারীদেরকে, আর জালিমদের শুধু
ধ্বংসই বৃদ্ধি করুন। [সূরা
নূহ : ২৮]
(৩) হে আমার প্রতিপালক!
আমাকে নামাজ কায়েমকারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও; হে আমাদের প্রতিপালক! আমার দোয়া কবুল কর। হে আমার
প্রতিপালক! যেদিন হিসাব হবে সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং মুমিনদেরকে ক্ষমা করুন। [সূরা-ইব্রাহীম : ৪০-৪১]
(৪) হে আমার প্রতিপালক!
আমাকে জ্ঞান দান করুন এবং সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আমাকে মিলিয়ে দিন আমাকে
পরবর্তীদের মধ্যে যশস্বী (বিখ্যাত) করুন। এবং আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের
অন্তর্ভুক্ত করুন! এবং আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না পুনরুত্থান দিবসে। [সূরা-শুআরা : ৮৩-৮৭]
(৫) হে আমাদের প্রতিপালক!
আমরা তো আপনারই উপর নির্ভর করছি, আপনারই অভীমুখী
হয়েছি এবং প্রত্যাবর্তন তো আপনারই নিকট। [সূরা-মুমতাহিনা : ৪]
(৬) হে আমাদের
প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে কাফেরদের পীড়নের পাত্র করবেন না, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন! আপনি তো
পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [সূরা-মুমতাহিনা : ৫]
(৭) হে আমার প্রতিপালক!
আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন। এবং আমার কর্ম সহজ করে দিন। আমার জিহ্বার জড়তা দূর
করে দিন। যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। (২৮) [সূরা- ত্বা-হা : ২৫-২৭]
(৮) হে আমার প্রভু!
আপনি যা অবতীর্ণ করেছেন, আমরা তা বিশ্বাস করি
এবং আমরা রাসূলের অনুসরণ করছি; অতএব সাক্ষীগণের
সাথে আমাদেরকে লিপিবদ্ধ করুন। [সূরা-আল-ইমরান
: ৫৩]
(৯) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদেরকে এই জালিমদের লক্ষ্যস্থল বানাবেন না। আমাদেরকে তোমার নিজ রহমতে
এই কাফেরদের (কবল) হতে মুক্তি দিন। [সূরা-ইউনুস : ৮৫-৮৬]
(১০) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদের জন্যে আমাদের অপরাধ ও আমাদের অপচয়সমূহ ক্ষমা করুন ও আমাদের
চরণসমূহ সুদৃঢ় করুন এবং অবিশ্বাসীদের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন। [সূরা-আল-ইমরান : ১৪৭]
(১১) হে আমার প্রতিপালক!
ক্ষমা কর ও দয়া কর, তুমিই তো সর্বশ্রে
দয়ালু। [সূরা- মুমিনুন :
১১৮]
(১২) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখেরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে
অগ্নির শাস্তি হতে রক্ষা। [সূরা-বাকারা
: ২০১]
(১৩) হে আমাদের
প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করনা। হে
আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীগণের যেমন গুরু-দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে আমাদের
উপর তেমন গুরু-দায়িত্ব অর্পণ করনা। হে আমাদের প্রতিপালক! এমন ভার আমাদের উপর
অর্পণ করো না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর, আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে
আমাদেরকে জয়যুক্ত কর। [সূরা-বাকারা
: ২৮৬]
(১৪) হে আমাদের
প্রতিপালক! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য লঙ্ঘন প্রবণ করো না এবং
তোমার নিকট হতে আমাদেরকে করুণা দাও, নিশ্চয় তুমি মহাদাতা। [সূরা-আল-ইমরান: ৮]
(১৫) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত কর, এর শাস্তি তো নিশ্চিত বিনাশ নিশ্চয় উহা অস্থায়ী ও স্থায়ী
আবাস হিসাবে নিকৃষ্ট। [সূরা-ফুরকান, ৬৫-৬৬]
(১৬) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য
নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে কর মুত্তাকিদের জন্য অনুসরণযোগ্য। [সূরা-ফুরকান:৭৪]
(১৭) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর এবং মুমিনদের
বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখো না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি তো দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু। [সূরা-হাশর: ১০]
(১৮) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদের জ্যোতিকে পূর্ণতা দান কর এবং আমাদেরকে ক্ষমা কর, নিশ্চয় তুমি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। [সূরা-তাহরীম : ৮]
(১৯) হে আমাদের
প্রতিপালক! আমরা ঈমান এনেছি সুতরাং তুমি আমাদের পাপ ক্ষমা কর এবং আমাদেরকে আগুনের
আজাব হতে রক্ষা কর। [সূরা-আল-ইমরান
: ১৬]
(২০) হে আমার প্রতিপালক!
এ-নগরীকে নিরাপদ কর এবং আমাকে ও আমার পুত্রগণকে প্রতিমা পূজা হতে দূরে রাখ। [সুরা-ইব্রাহীম : ৩৫]
(২১)২. হে আমাদের
প্রতিপালক! আমাদেরকে অত্যাচারী সম্প্রদায়ের সঙ্গী করবেন না। [সূরা আরাফ : ৪৭]
(২২) আমার জন্য আল্লাহই
যথেষ্ট,তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই, আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা আরশের অধিপতি। [সূরা- তাওবা : ১২৯]
আল-হাদীসে বর্ণিত দোয়াসমূহ:
(১) হে আল্লাহ, দৃষ্টির অন্তরালবর্তী ও দৃষ্টিগ্রাহ্য সকল বিষয়ে যেন
তোমাকে ভয় করতে পারি হে আল্লাহ, যদি জীবন আমার জন্য
কল্যাণকর হয়, তাহলে আমাকে জীবিত
রাখ, আর যদি মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে আমাকে
মৃত্যু দান কর। সেই তাওফিক প্রার্থনা করি। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি সত্য কথা
বলার তাওফিক, খুশি ও ক্রোধ উভয়
অবস্থাতেই। আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি মিতব্যয়িতার, সচ্ছল-অসচ্ছল উভয়াবস্থায়। প্রার্থনা করি এমন নেয়ামত যা
শেষ হবার নয়। প্রার্থনা করি যা চক্ষু জুড়াবে অনিঃশেষভাবে। আমি তোমার নিকট চাই
তকদিরের প্রতি সন্তুষ্টি। আমি তোমার নিকট চাই মৃত্যুর পর সুখময় জীবন। আমি তোমার
নিকট কামনা করি তোমাকে দেখার তৃপ্তি, আমি কামনা করি তোমার সহিত সাক্ষাৎ লাভের আগ্রহ-ব্যাকুলতা যা
লাভ করলে আমাকে স্পর্শ করবে না কোন অনিষ্ট, আর আমাকে সম্মুখীন হতে হবে না এমন কোন ফেৎনার যা আমাকে
পথভ্রষ্ট করতে পারে। হে আল্লাহ, তুমি আমাদেরকে
ঈমানের অলংকার দ্বারা বিভূষিত কর আর আমাদেরকে বানাও পথ প্রদর্শক ও হেদায়েতের
পথিক। [নাসায়ি : ৫৪/৩]
(২) হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রভু তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমি আমাকে
সৃষ্টি করেছ আর আমি হচ্ছি তোমার বান্দা এবং আমি আমার সাধ্যমত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে
তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করি। আমার প্রতি তোমার নিয়ামতের স্বীকৃতি প্রদান করছি, আর আমি আমার গুনাহ-খাতা স্বীকার করছি। অতএব তুমি আমাকে মাফ
করে দাও নিশ্চয়ই তুমি ভিন্ন আর কেউ গুনাহ মার্জনাকারী নেই। [বোখারি : ৫৮৩১]
(৩) হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি পদস্খলন অথবা পদস্খলিত
হওয়া থেকে। পথ হারিয়ে ফেলা অথবা অন্য কর্তৃক পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে। কারও উপর
জুলুম করা থেকে অথবা কারো নির্যাতিত হওয়া থেকে। কারও সাথে মূর্খতা-পূর্ণ আচরণ করা
থেকে অথবা অন্যের মূর্খতা-জনিত আচরণে আক্রান্ত হওয়া থেকে। [নাসায়ি : ৫৩৯১]
(৪) হে আল্লাহ! আমি তোমার
নিকট উপকারী বিদ্যা, গ্রহণযোগ্য আমল এবং
পবিত্র জীবিকা প্রার্থনা করি। [ইবনে
মাজা : ৯১৫]
(৫) হে আল্লাহ! তোমার
জিকির, তোমার শুকরিয়া
জ্ঞাপন করার এবং তোমার ইবাদত সঠিক ও সুন্দরভাবে সম্পাদন করার কাজে আমাকে সহায়তা
কর। [হাকিম : ৪৯৯/১]
(৬) আল্লাহ ছাড়া
ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই। তিনি এক তাঁর কোন শরিক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং
প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা প্রদান কর
তা বাধা দেয়ার কেহই নেই, আর তুমি যা দেবে না
তা দেয়ার মত কেহ নেই। তোমার গজব হতে কোন বিত্তশালী বা পদমর্যাদার অধিকারীকে তার
ধন-সম্পদ বা পদমর্যাদা রক্ষা করতে পারে না। [বোখারি : ৭৯৯]
(৭) হে আল্লাহ! আমি
আশ্রয় চাচ্ছি কৃপণতা থেকে এবং আশ্রয় চাচ্ছি কাপুরুষতা থেকে। আর আশ্রয় চাচ্ছি
বার্ধক্যের চরম পর্যায় থেকে। দুনিয়ার ফিতনা-ফাসাদ ও কবরের আজাব হতে। [বোখারি : ৫৮৮৮]
(৮) হে আল্লাহ, আমি আমার নিজের উপর অনেক বেশি জুলুম করেছি আর তুমি ছাড়া
গুনাহ্সমূহ কেহই মাফ করতে পারে না। সুতরাং তুমি তোমার নিজ গুনে মার্জনা করে দাও
এবং আমার প্রতি তুমি রহম কর। তুমি তো মার্জনাকারী ও দয়ালু। [বোখারি : ৫৮৫১]
(৯) হে আল্লাহ! আমার
অন্তরে তাকওয়া প্রদান কর, তাকে পবিত্র কর।
তুমি তার উত্তম পবিত্রকারী, তার অভিভাবক ও মনিব। [মুসলিম : ২০৮৮/৪]
(১০) হে আল্লাহ! আমি
তোমার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা কামনা করছি। হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট
আমার দ্বীন ও দুনিয়া, পরিবার ও সম্পদ
বিষয়ে ক্ষমা ও নিরাপত্তা কামনা করছি। হে আল্লাহ! তুমি গোপন ব্যাপারগুলো আচ্ছাদিত
করে রাখো। ভয়-ভীতি থেকে আমাকে নিরাপত্তা দাও। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে নিরাপদে রাখ, আমার সম্মুখের বিপদ হতে, পশ্চাতের বিপদ হতে, ডানের বিপদ হতে, বামের বিপদ হতে আর ঊর্ধ্ব দেশের গজব হতে। তোমার মহত্ত্বের
দোহাই দিয়ে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি আমার নিুদেশ হতে আগত বিপদে আকস্মিক
মৃত্যু হতে। [আবু দাউদ :
৪৪১২]
(১১) হে আল্লাহ! তুমি
ঈমানকে আমাদের নিকট সুপ্রিয় করে দাও, এবং তা আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দাও। কুফর, অবাধ্যতা ও পাপাচারকে আমাদের অন্তরে ঘৃণিত করে দাও, আর আমাদেরকে হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও। হে
আল্লাহ! আমাদেরকে মুসলমান হিসেবে মৃত্যু দাও। আমাদের মুসলমান হিসেবে বাঁচিয়ে রাখ।
লাঞ্ছিত ও বিপর্যস্ত না করে আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের সাথে সম্পৃক্ত কর। [আহমদ : ১৪৯৪৫]
(১২) হে আল্লাহ! তোমারই
রহমতের আকাক্সক্ষী আমি। সুতরাং এক পলের জন্যও তুমি আমাকে আমার নিজের আমার নিজের
উপর ছেড়ে দিয়ো না। তুমি আমার সমস্ত বিষয় সুন্দর করে দাও। তুমি ভিন্ন প্রকৃত কোন
মাবুদ নেই। [আবু দাউদ :
৪৪২৬]
(১৩) আল্লাহ ছাড়া
প্রকৃত কোন মাবুদ নেই, যিনি সহনশীল, মহীয়ান। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মাবুদ নেই, যিনি সুমহান আরশের প্রতিপালক। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন
মাবুদ নেই। তিনি আকাশম-লীর প্রতিপালক, জমিনের প্রতিপালক এবং সুমহান আরশের প্রতিপালক। [আহমদ : ৩২৮৬]
(১৪) হে আল্লাহ! তুমিই
প্রথম, তোমার পূর্বে কিছু
নেই। তুমিই সর্বশেষ, তোমার পরে কিছু নেই।
তুমি প্রকাশ্য, তোমার উপরে কিছুই
নেই। তুমি অপ্রকাশ্য, তোমার চেয়ে
নিকটবর্তী কিছুই নেই; তুমি আমার ঋণ পরিশোধ
করে দাও, আমাকে
দারিদ্র্যমুক্ত করে সম্পদশালী বানাও। [মুসলিম : ৪৮৮৮]
(১৫) হে আল্লাহ! সমস্ত
প্রশংসা তোমার জন্য। তুমি আকাশমণ্ডলী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার সকল কিছুর নূর। সমস্ত প্রশংসা
তোমার জন্যই। তুমি আকাশম-লী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার সকল কিছুর রক্ষক। সকল প্রশংসা
তোমার, তুমি
আকাশম-লী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার সকল কিছুর প্রতিপালক। তুমি সত্য, তোমার প্রতিশ্র“তি সত্য। তোমার বাণী সত্য। তোমার দর্শন লাভ সত্য। জান্নাত
সত্য। জাহান্নাম সত্য। নবিগণ সত্য। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
সত্য। কেয়ামত সত্য। [বোখারি
: ৫৮৪২]
(১৬) হে আল্লাহ! তোমার
কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। তোমার উপর ভরসা করলাম। তোমার প্রতি ঈমান আনলাম। তোমার দিকে
প্রত্যাবর্তন করলাম। তোমাকে কেন্দ্র করে বিবাদে লিপ্ত হলাম। তোমার নিকট বিচার
ফয়সালা সোপর্দ করলাম। অতঃপর আমাকে ক্ষমা কর, যা আগে করেছি এবং যা পরে করব, যা প্রকাশ্যে করেছি এবং যা গোপনে করেছি। তুমিই আমার মাবুদ।
তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোন মাবুদ নেই। [বোখারি : ৫৮৪৩]
(১৭) হে আল্লাহ! তুমি
তোমার হারাম বস্তু হতে বাঁচিয়ে তোমার হালাল বস্তু দিয়ে আমার প্রয়োজন মিটিয়ে
দাও। এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা সমৃদ্ধ করে তুমি ভিন্ন অন্য সবার থেকে আমাকে
অমুখাপেক্ষী করে দাও। [তিরমিজি
: ৩৪৮৬]
(১৮) হে আল্লাহ! আমি
তোমার আশ্রয় চাচ্ছি জাহান্নামের আজাব হতে, কবরের আজাব হতে, মসিহ দজ্জালের ফিতনা হতে এবং জীবন মৃত্যুর ফেনা হতে। [মুসলিম : ৯৩০]
(১৯) হে আল্লাহ! আমি
তোমার কাছে প্রার্থনা করছি, আমি সাক্ষ্য দিই যে-
তুমিই আল্লাহ। তুমি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তুমি একক অদ্বিতীয়। সকল কিছুই যার
মুখাপেক্ষী। যিনি জন্ম দেন নাই এবং জন্ম নেন নাই এবং যার সমকক্ষ কেউ নেই। [তিরমিজি : ৩৩৯৭]
(২০) হে আল্লাহ! আমি
আশ্রয় প্রার্থনা করছি বিপদের কষ্ট, নিয়তির অমঙ্গল, দুর্ভাগ্যের স্পর্শ ও বিপদে শক্রর উপহাস হতে। [বোখারি : ৫৮৭১]
(২১) হে আল্লাহ! আমি সকল
বিরোধ, মুনাফেকি এবং বদ
চরিত্র হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [বোখারি : ৫৩৭৬]
(২২) হে আল্লাহ! আমার সমস্ত
গুনাহ মাফ করে দাও ছোট গুনাহ, বড় গুনাহ, প্রকাশ্য ও গোপন গুনাহ, আগের গুনাহ, পরের গুনাহ। [মুসলিম : ৭৪৫]
(২৩) হে আল্লাহ! তুমি
যাদেরকে হেদায়েত করেছ, আমাকে তাদের
অন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যাদেরকে নিরাপদ রেখেছ আমাকে তাদের দলভুক্ত কর। তুমি যাদের
অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, আমাকে তাদের দলভুক্ত
করো। তুমি আমাকে যা দিয়েছ তাতে বরকত দাও। তুমি যে অমঙ্গল নির্দিষ্ট করেছ তা হতে
আমাকে রক্ষা করো। কারণ তুমিই তো ভাগ্য নির্ধারণ কর। তোমার উপরে তো কেউ ভাগ্য
নির্ধারণ করার নেই। তুমি যার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, সে কোন দিন অপমানিত হবে না এবং তুমি যার সাথে শত্রট্টতা
করেছ, সে কখনো সম্মানিত
হতে পারে না। হে আমাদের প্রভু! তুমি বরকতপূর্ণ ও সুমহান। [তিরমিজি : ৪২৬]
(২৪) হে আল্লাহ! তোমার
কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। তোমার প্রতি ঈমান আনলাম। তোমার উপর ভরসা করলাম। তোমার দিকে
প্রত্যাবর্তন করলাম। তোমার উদ্দেশ্যে বিবাদে লিপ্ত হলাম। তোমার নিকট বিচার
ফয়সালার ভার সোপর্দ করলাম। অতঃপর তুমি আমাকে ক্ষমা কর, যা আগে করেছি ও পরে করব, যা প্রকাশ্যে করেছি ও যা গোপনে করেছি। এবং যে বিষয়ে আমার
থেকেও তুমি অধিক অবহিত আছ। তুমিই আমার মাবুদ। তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। [বোখারি : ৫৮৪২]
(২৫) হে আল্লাহ! তুমি
আমার অন্তর আলোকময় কর। আমার কর্ণ আলোকময় কর। আমার চোখ জ্যোতির্ময় কর। আমার
সম্মুখ আলোকময় কর। আমার পশ্চাৎ আলোকময় কর। আমার ডানে, আমার বামে, আমার সামনে, আমার পিছনে জ্যোতি ছড়িয়ে দাও। আমার নূরকে তুমি বৃহদাকার
করে দাও। হে বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক। [মুসলিম : ১২৭৯]
(২৬) হে আল্লাহ! তোমারই
রহমতের আকাক্সক্ষী আমি, সুতরাং তুমি এক পলক
পরিমাণ সময়ের জন্যও আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়ো না। তুমি আমার সমস্ত বিষয়
সুন্দর করে দাও। তুমি ভিন্ন প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। [আবু দাউদ : ৪৪২৬]
(২৭) হে আল্লাহ! আমি
তোমার বান্দা, তোমারই এক বান্দার
পুত্র আর তোমার এক বান্দির পুত্র। আমার ভাগ্য তোমারই হাতে। আমার উপর তোমার নির্দেশ
কার্যকর। আমার প্রতি তোমার ফয়সালা ইনসাফপূর্ণ। আমি সেই সমস্ত নামের প্রত্যেকটির
বদৌলতে, যে নাম তুমি নিজের
জন্য নিজে রেখেছ, অথবা তোমার যে নাম
তুমি তোমার কিতাবে নাজিল করেছ, অথবা তোমার সৃষ্ট
জীবের মধ্যে কাউকে যে নাম শিখিয়েছ, অথবা স্বীয় ইলমের ভান্ডারে নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছ, তোমার নিকট এই কাতর প্রার্থনা জানাই-তুমি কুরআন মাজিদকে
আমার হৃদয়ের প্রশান্তি, আমার বক্ষের জ্যোতি, আমার চিন্তা-ভাবনার অপসারণকারী এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার
বিদূরণকারীতে পরিণত কর। [আহমদ
: ৩৫২৮]
(২৮) হে অন্তর সমূহের
পরিবর্তনকারী! তোমার দ্বীনের উপর আমার অন্তরকে অবিচল রাখ। [তিরমিজি : ৩৪৪৪]
(২৯) হে আল্লাহ! আমি
তোমার কাছে কল্যাণময় সকল বিষয় কামনা করি, কল্যাণের আগত ও অনাগত বিষয়গুলো; যা আমি জানতে পেরেছি এবং যা আমি জানতে পারিনি। আর আমি তোমার
আশ্রয় কামনা করছি সকল প্রকার অনিষ্ট হতে, অনিষ্টের আগত ও অনাগত সকল বিষয় হতে, যা আমি জানতে পেরেছি এবং যা আমি জানতে পারিনি। [ইবনে মাজা : ৩৮৩৬]
(৩০) হে আল্লাহ! আমি
তোমার আশ্রয় কামনা করছি অসার জ্ঞান হতে, অশ্র“ত দোআ হতে, এবং এমন প্রবৃত্তি হতে যা পরিতৃপ্ত হয় না, এমন অন্তর হতে যা বিগলিত হয় না। [মুসলিম : ৪৮৯৯]
(৩১) হে আল্লাহ! তুমি
আমাকে সকল ঘৃণিত স্বভাব, অবাঞ্ছিত আচরণ, কুপ্রবৃত্তির তাড়না ও রোগ-ব্যাধি হতে দূরে রাখ। [তিরমিজি : ৩৫১৫]
(৩২) হে আল্লাহ! আমি
তোমার কাছে হেদায়েত, তাকওয়া, চারিত্রিক পবিত্রতা, সম্পদের প্রাচুর্য এবং সে কাজ করার সামর্থ্য কামনা করি যা
তুমি পছন্দ কর ও যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও। [মুসলিম : ৪৮৯৮]
(৩৩) হে আল্লাহ! আমাকে
ইসলাম সহকারে দাঁড়ানো অবস্থায় এবং বসা অবস্থায় তথা সর্বাবস্থায় হেফাজত কর।
আমার ক্ষেত্রে আমার কোন শত্রট্ট, আমার কোন নিন্দুক বা
হিংসুক খুশি হয়ে উপহাস করতে পারে এমন কোন কাজ করনা। [সহিহ জামেউস সগীর : ১২৬০]
(৩৪) হে আল্লাহ! আমি
তোমার কাছে কামনা করছি সেসব কল্যাণ ও মঙ্গল যার ভাণ্ডার তোমার হাতে। আর তোমার কাছে
আশ্রয় কামনা করছি সেসব অনিষ্ট ও ক্ষতি হতে, যার ভাণ্ডারও তোমার হাতে।
(৩৫) হে আমাদের রব! তুমি
আমাদিগকে দুনিয়া ও আখেরাতে মঙ্গল দান কর। আর জাহান্নামের শাস্তি হতে আমাদের রক্ষা
কর। [বোখারি : ১৬৩/৭]
কুরআন ও হাদীসে ব্যবহৃত শব্দগুলো ব্যবহার করে
আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের মনের কথাগুলো বলব। আর যদি সে শব্দগুলো ছাড়া নিজের ভাষায় আমাদের
মুনিবের কাছে আমরা মনের আকুতিগুলো পেশ করতে পারি। যেমন-
এক: হে আমাদের
প্রতিপালক! আমরা পাপ করে নিজেদের ওপর সীমাহীন জুলুম করেছি। তুমি যদি ক্ষমা ও দয়ার
দৃষ্টি না দাও তাহলে আমরা নির্ঘাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ব। হে আমাদের পালনকর্তা!
আমাদেরকে উভয়জগতের কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে আখেরাতের শাস্তি থেকে রক্ষা
করুন।
দুই: হে আল্লাহ!
আমাদেরকে দুনিয়ার লাঞ্ছনা এবং আখেরাতের আজাব থেকে মুক্তি দান করুন। আমরা সেসব
কল্যাণ কামনা করছি যা প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার কাছে প্রার্থনা করেছেন এবং ওই সব
অকল্যাণ থেকে আশ্রয় চাচ্ছি- যেগুলো থেকে নবীজি আশ্রয় চেয়েছেন।
তিন: হে আল্লাহ! আমরা
আপনার কাছে পরিপূর্ণ ঈমান এবং অগাধ বিশ্বাস প্রার্থনা করছি। পরকালে তোমার প্রিয়
নবীর সান্নিধ্য কামনা করছি। আমাদেরকে তোমার পথের দাঈ হিসেবে কবুল করো। তুমি যেসব
আমল ও কথা পছন্দ করো- আমাদেরকে সেসব আমলের তাওফিক দাও।
চার: ইয়া আল্লাহ!
আমাদেরকে সাহায্য করো। তোমার রহমত থেকে আমাদেরকে নিরাশ করো না। তোমার প্রিয়
বান্দাদের যা দিয়েছো আমাদেরকে তা দান করো। তোমার কাছে আমরা যাবতীয় কল্যাণ
প্রার্থনা করছি এবং সমস্ত অকল্যাণ থেকে পানাহ চাচ্ছি।
পাঁচ: হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে হেদায়েত, তাকওয়া, সৎচরিত্র ও
স্বচ্ছলতা প্রার্থনা করছি। তোমার কাছে ক্ষমা, নিরাপত্তা ও সফলতা কামনা করছি। তোমার কাছে জান্নাত
প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাচ্ছি। যেসব আমল জান্নাতে যাওয়ার
উসিলা হবে, আমাদেরকে সেসব আমলের
তাওফিক দাও এবং যেসব আমল জাহান্নামে নিয়ে যাবে, আমাদেরকে তা থেকে বিরত রাখো।
ছয়: হে আল্লাহ! আমাদের
গোনাহসমূহ মাফ করুন, আমাদের চিন্তা ও
পেরেশানি দূর করুন। আমাদের বিপদাপদ অপসারিত করুন, আমাদের জাগতিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করে দিন। যারা অসুস্থ
তাদের পূর্ণ সুস্থতা দান করুন।
সাত: হে আল্লাহ!
মুসলমানদের তুমি হেফাজত করো। কাফেরদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করো। আমাদেরকে
দ্বীনের ওপর অটল-অবিচল রাখো। আমাদের সংশোধন করো, অন্তর থেকে হিংসা, বিদ্বেষ দূর করে দাও। পরস্পরে সম্প্রীতি দান করো। আমাদের অন্তরে তাকওয়ার সম্পদ ঢেলে দাও এবং অন্তরকে
কলুষমুক্ত করো।
আট: হে আল্লাহ! তুমি
সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তোমার জন্য কোনো কিছুই অসাধ্য নয়। তুমি আমাদের কাজ-কর্ম
সহজ করে দাও। আমরা তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তওবা করছি- আমাদের
হাতগুলোকে রিক্ত করে ফিরিয়ে দিও না।
নয়: হে আল্লাহ! আমরা
পাপী, তা স্বীকার করছি।
লজ্জিত হয়ে তোমার দুয়ারে তওবার হাত প্রসারিত করেছি। দয়া করে তুমি আমাদের
পাপরাশি ক্ষমা করে দাও। গোনাহের সমুদ্র থেকে তুলে হেদায়েতের রাজপথে স্থান দাও।
আমাদের মন্দকর্মগুলো নেকিতে পরিবর্তন করে দাও।
দশ: হে আল্লাহ! তোমার জিকির, শোকর ও ইবাদতের জন্য আমাদের কবুল করো। পুরো উম্মতকে
হেদায়েতের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখো। মানুষকে আঁধার থেকে আলোর ভূবনে পরিচালিত করো।
এগারো: হে আল্লাহ! আমাদেরকে নবীজির সুন্নত ও আদর্শের ওপর পরিচালিত
করো। শতধা বিচ্ছিন্নতা থেকে উম্মতকে হেফাজত করো। উম্মতের ঈমান, আমল, চরিত্র ও জান-মালকে
সংরক্ষণ করো। মাদারিসে দ্বীনিয়াকে সব ধরনের সঙ্কট থেকে রক্ষা করো। এসব দ্বীনি
মাদরাসা থেকে ইলমের যে রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়- তার মাধ্যমে সমগ্র জাহানের অজ্ঞতা ও
অন্ধকার বিদূরীত করো।
বারো: হে আল্লাহ! যারা যে
উদ্দেশ্য নিয়ে দোয়ায় অংশ নিয়েছে, প্রত্যেকের মাকসাদ পূর্ণ করো। যারা আমাদের কাছে দোয়া
চেয়েছেন, তাদের নেক নিয়ত
পুরা করো। অসুস্থদের সুস্থতা দান করো, ঋণগ্রস্তদের ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দাও, যারা মিথ্যা মামলায় পতিত হয়ে কষ্টের জীবন অতিবাহিত করছে
তাদেরকে মুক্তির ব্যবস্থা করো।
তেরো: হে আল্লাহ! যা কিছু
প্রার্থনা করা হলো- তা কবুল করো। যা চাওয়া হয়নি, অথচ আমাদের প্রয়োজন তা আমাদের দান করো। আমাদের প্রয়োজন
সম্পর্কে তুমি বেশি জানো, সুতরাং আমাদের সব
প্রয়োজন তোমার গায়েবি খাজানা থেকে পূর্ণ করে দাও। আমাদের দোয়াগুলোকে কবুল করো।
আমিন!
মহান আল্লাহ যেন তাঁর শেখানো ভাষায় তাঁরই
কাছে চাইতে পারি, মনের কথা বলতে পারি, সেই তওফীক আমাদের দান করুন। আমীন।
লেখক: বহুগ্রন্থ প্রণেতা ও ইমাম
মসজিদুল উম্মাহ
লুটন,
সেক্রেটারি-
শরীয়া কাউন্সিল
ব্যাডফোর্ড ও মিডল্যন্ড, ইউকে।
0 coment rios:
You can comment here