।। হাফিজ মোঃ মাশহুদ চৌধুরী।।
যাবতীয়
প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য, যিনি সারা বিশ্বের মালিক, শাসক ও পরিচালক বা “রাব্বুল আ’লামীন”। তিনি কুরআন মাজিদ নাযিল
করেছেন সারা বিশ্বের জন্য উপদেশ স্বরূপ করে, যার নাম “যিকরুল লিল আ’লামীন’।
সালাত
ও সালাম পেশ করছি সেই নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি, যিনি সারা বিশ্বের জন্য রহমত
(অনুগ্রহের আধার) স্বরূপ বা “রাহমাতুল লিল আ’লামীন”।
বর্তমানে
বিশ্বের সর্বত্র যখন প্রকৃত মানবতাবাদী নেতৃত্বের জন্য হাহাকার চলছে, তখন বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার
জন্য রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মতো একজন মহান বিশ্ব
নেতার একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ
নবি বা খাতামুন নাবিয়্যীন হবার কারণে এখন আর নতুন কোনো নবি আসবেন না—এটাই সঠিক কথা।
কিন্তু
নবিগণের দেখানো পথে বিশ্বের মানুষদেরকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য নবীর স্থলাভিষিক্ত
খলীফা বা প্রতিনিধি আগমনের সিস্টেম বা ধারা বন্ধ করা হয়নি। তাই আজ অশান্ত বিশ্বে
শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এবং বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে পৃথিবীকে উপভোগ্য করে তোলার
জন্য একজন বিশ্বনেতা বা “খলীফাতুল লিল আ’লামীন” অতীব প্রয়োজন।
মোটকথা-
রাব্বুল আ’লামীনের পক্ষ থেকে
নাযিলকৃত যিকরুল লিল আ’লামীনের বিধান অনুযায়ী, রাহমাতুল লিল আ’লামীনের পদ্ধতি মতে তার স্থলাভিষিক্ত একজন খলীফাতুল লিল আ’লামীন বর্তমানে একান্ত আবশ্যক।
যিনি বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবেন। তাদের সকলের সমস্যার সমাধান, তাদের শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক এবং আর্থ-সামাজিক
উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা রাখবেন। তিনি বর্তমান বিশ্বের সকল দল ও নেতৃত্বের কল্যাণকামী
হিসাবে তাদেরকে দোষণমুক্ত করে সঠিক ধারায় পরিচালিত করতে সহায়তা করবেন। এ রকম একজন
নেতাকে সাদরে গ্রহণ করার জন্য আজ পৃথিবী সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হয়ে আছে। বিশ্বের
সকল ধর্মের ভবিষ্যদ্বাণী পর্যালোচনা করলে এ তত্ত্বই পাওয়া যায়।
আজ
জুমুয়া’বারের গভীর রাতে
কায়মনোবাক্যে সকল দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে শুধুমাত্র আল্লাহর প্রতি একমুখী হয়ে
একনিষ্ঠভাবে দোয়া করছি “হে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন, আমাদেরকে শীঘ্রই একজন খলীফাতুল লিল আ’লামীন দান করো। যিনি আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে সঠিক ও
কল্যাণমুখী ধারায় পরিচালিত করতে সক্ষম হবেন। যারাই এ নেতৃত্বকে সাদরে ও সহজে গ্রহণ
করবেন তাদেরকে তিনি বিশ্বের নেতৃত্ব ও মর্যাদায় আসীন হতে সহায়তা করবেন। যেভাবে বনী
ইসরাঈল জাতিকে এক সময় সমগ্র বিশ্বের নেতৃত্ব ও মর্যাদার আসনে আসীন করা হয়েছিল।
(কুরআন মাজীদের সূরা বাক্বারার ৪৭ ও ১২২নম্বর আয়াত দ্রষ্টব্য।)
(কুরআন মাজীদের সূরা বাক্বারার ৪৭ ও ১২২নম্বর আয়াত দ্রষ্টব্য।)
উক্ত
নেতৃত্ব মানুষের জাগতিক ও ধর্মীয় উভয় বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত এবং সঠিক নির্দেশনা দান
করবেন এবং ভ্রষ্ট নীতি থেকে বেঁচে থাকার পথ ও পন্থা বলে দিবেন। স্বাভাবিক কারণেই
তাঁর কার্যপ্রণালী হবে প্রচলিত ধারা থেকে একটু ভিন্ন। তিনি ওয়াজ-নসীহত ও
বক্তব্য-ভাষণের চেয়ে বাস্তবমূখী কাজকে গুরুত্ব দিবেন বেশি। তিনি নিজে নতুন কোনো দল
গঠন করবেন না, বরং প্রচলিত দল ও নেতৃত্বকে দরদ ভরা মন নিয়ে সংশোধন করে পরিবর্তিত নতুন বিশ্ব
গঠনে উপযোগী হতে সাহায্য করবেন। সূরা আন- নাহলের ১২০নং আয়াতের আলোকে তিনি নিজে
হবেন একটি প্রতিষ্ঠান, একটি দল বা একটি জাতির গুরুত্ব বহনকারী ব্যক্তিত্ব। তিনি অতি সাধারণ মানুষ
থেকেই আত্মপ্রকাশ করবেন। যার ফলে প্রকৃত (আধ্যাত্মিক) চক্ষুষ্মান লোক ছাড়া অনেকেই
প্রথমে বুঝতে দেরি করবে। পরে অবশ্য সবাই নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে এবং নিজেদের
ভুলের জন্য ও বুঝতে দেরি করার জন্য আফসোস করবে।
হে
আল্লাহ, আমার প্রিয় বাংলাদেশের
প্রায় ১৬কোটি মানুষের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা তাকে তুমি এ মর্যাদায় আসীন করো। অথবা
সারা বিশ্বে অনেকগুলো ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী, দল ও মতের মানুষ রয়েছে, তাদের মধ্য থেকে অর্থাৎ পৃথিবীর
প্রায় সাড়ে সাত শো কোটি মানুষের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা তাকে তুমি এ গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিযুক্ত করো। আমি তোমাকে
সাক্ষী রেখে ওয়াদা করছি যে, ঐ মহান ব্যক্তি যে কোনো ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী, দল ও মত থেকে আসা লোক হোন না কেনো, তাকে আন্তরিকভাবে আগ্রহ ভরে মেনে
নিতে কোনো প্রকার কার্পণ্য করবো না বা জেদ ধরবো না। আমীন!
(উক্ত লেখাটি ২৬/০৮/২০১৬ তারিখে ফেইসবুকে প্রচারিত এবং শান্তির ডাক বইয়ের ১৬
ও ১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত।)
0 coment rios:
You can comment here