লকডাউনের হালচাল:
আমাদের করণীয়
মাত্র তিন সপ্তাহ লকডাউনে ষোল কোটি মানুষ অতিষ্ট হয়ে পেড়েছে।
কর্তা ব্যক্তিসহ কিছু অসাধু লোভী মানুষ নামের কলঙ্ক এমন কিছু জীব করোনার এ কঠিন
পরিস্থিতিতে ত্রাণ ছিনিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে হাজার হাজার মানুষ অন্যান্য সাধারণ রোগে আক্রান্ত হয়ে
হয়রানির শিকার হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালে তারা সাধারণ চিকিৎসা পাচ্ছে না।
রোগীগণ চিকিৎসা সেবা না পেয়ে কষ্ট করছে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থমকে গেছে। অথচ দিন দিন করোনা ভাইরাসের রোগী দ্রুত
ব্যাপকহারে বেড়ে চলেছে। এভাবে বাড়তে থাকলে রাস্তা ঘাটে, বাড়িতে বাড়িতে হাজার
হাজার লাশ পড়ে থাকবে, পরীক্ষা, চিকিৎসা তো দূরের কথা
লাশ মাটি দেওয়ার মানুষও পাওয়া যাবে না। অসংখ্য মানুষ হয়তো করোনায় আক্রান্ত, লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে
না তাই পরীক্ষা না করে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর রোগ ছড়াচ্ছে।
এই মুহূর্তে রাষ্ট্রের সবচেয়ে
বড় কাজই হলো করোনা প্রতিরোধ করা। তাহলেই সব কিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এজন্য যা করণীয় তা হলো:
১। করোনা পরীক্ষা শুধু
ঢাকা, বিভাগী শহর বা বিশেষ কেন্দ্রে না করে ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা করা।
প্রতিটা ইউনিয়নে সম্ভাব্যদের নমুনা সংগ্রহ করা, উপজেলায় তা পরীক্ষা করে একদিনেই জানিয়ে দেওয়া, পরীক্ষা আক্রান্তদের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া।
২। ব্যাপক হারে পরীক্ষা
কীট, চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তার আমদানী করা।
৩। যারা বিদেশ থেকে এসেছে
বা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় গমন করেছে তাদেরকে বাধ্যতামূলক পরীক্ষা করা।
৪। শহরে ওয়ার্ড, গ্রামে ইউনিয়ন ভিত্তিক ত্রাণ কেন্দ্র করা, যাতে অভাবী মানুষ সেচ্ছায়
গিয়ে ত্রাণ নিয়ে আসতে পারে।
৫। বিদেশ বা অন্য জায়গা
হতে আসা ব্যক্তি যদি সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হয় তিনি যেন হাসপাতাল, ফার্মেসী, এমনকি বাড়ির বাহিরে বের
না হন তা নিশ্চিত করা। প্রয়োজনে ঔষধ তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া।
৬। ইউনিয়ন/শহরে ওয়ার্ড
ভিত্তিক স্থাস্থ্য সহকারিদের নিয়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটি করা। যারা সম্ভাব্য রোগীদের তালিকা তৈরি করে পরীক্ষা, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশনের ব্যবস্থা
করবে, জনগণকে সচেতন করবে।
৭। করোনা প্রতিরোধে সরাসরি
নিয়োজিত প্রত্যেকের নিরাপত্তা বীমা করা।
৮। ব্যাংক সেবা প্রদানকারী
ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ কারীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।
৯। পিপিই যেন জীবানু মুক্ত
করে বারবার ব্যবহার করা যায় তার ব্যবস্থা করা।
১০। পর্যাপ্ত খাদ্য আমাদানীর
ব্যবস্থা করা ও উন্নত রাষ্ট্রের আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্য গ্রহণ করা।
১১। ত্রাণ বিতরণে
প্রয়োজনে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া।
১২। প্রবাসীদেরকে দূতাবাসের
মাধ্যমে চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা করা।
১৩। ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক
প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ সংগ্রহ করা। এমনকি ধনীদের থেকে বাধ্যতামূলক অর্থ সহায়তা গ্রহণ
করা। যেমন চাকুরীজীবিদের থেকে বেতনের অংশ নেওয়া হয়েছে বাধ্যতা মূলক।
১৪। করোনা সংক্রান্ত তথ্য
সহজ লভ্য করা। এ লক্ষ্যে আইইডিসিআর প্রতিদিনের সংক্ষিপ্ত আপডেট সকলের কাছে মোবাইলে
মেসেজের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া। এমকি এই দূর্যোগ কালীন সময়ে সকল মোবাইল কোম্পানী তাদের
দায়বদ্ধার জন্য সপ্তাহে অন্তত ৫০০ এম. বি. ফ্রি দেওয়া যাতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে করোনা
সংবাদ জানতে পারে।
১৫। ত্রাণ চুরি, চিকিৎসা সহায়তা দিতে অস্বীকার করা ডাক্তার, হাত পা গোটিয়ে রাখা জনপ্রতিনিধি, সেবা দিতে অস্বীকার করা সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে
দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সর্বোপরি
জনগণকে শান্ত থেকে সাহসিকতার সহিত করোনা মোকাবেলার জন্য উদ্ভুদ্ধ করা।
আল্লাহ আমাদের এই মহাদূর্যোগ থেকে রক্ষা করুক। আমিন।
লেখকঃ
শিক্ষক,
লিয়াকতগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ।
মোবাইল: 01813-319490
0 coment rios:
You can comment here