।। হাফিজ
মোঃ মাশহুদ চৌধুরী।।
ধর্মগ্রন্থের সকল অনুসারীদেরকে এমন কিছু কথার দিকে
আহবান করতে চাই, যেসব বিষয়ে সকল ধর্ম ও মতের লোকদের ঐকমত্য রয়েছে। কেননা, আল্লাহ বলেছেন, বলে দাও, "হে ধর্মগ্রন্থের
ধারকরা, তোমরা সবাই এমন কথার দিকে এসো, যে কথা আমাদের
ও তোমাদের সকলের কাছে সমান।" (আল-ইমরান, আয়াত ৬৪)
আল্লাহর এ নির্দেশ পালনের জন্যে নিম্নোক্ত দুটি
কাজ করা প্রয়োজনঃ---
১. সকল ধর্ম ও মতের অনুসারীদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞদের নিয়ে সর্বজনীন
মতৈক্যের বিষয়গুলোর তালিকা তৈরি করা।
উল্লেখ্য প্রায় সকল ধর্মের বাণী সমূহের মধ্যে কিছু
ঐক্য রয়েছে। অভিজ্ঞ ধর্মগুরুগণ এবং আধ্যাত্মিকতায় যাঁরা এগিয়ে আছেন, তাঁরা তা জানেন।
২. উক্ত তালিকাভুক্ত বিষয়গুলোর ভিত্তিতে বিশ্বজনীন ঐক্য প্রতিষ্ঠায়
এগিয়ে যাওয়া।
উপরোক্ত কাজের অন্তরায়সমূহ--------------
১. ব্যতিক্রম বাদে প্রায় সকল ইমাম মুয়াজ্জিন সেবায়েত পুরোহিত
ও ধর্মগুরুগণ আর্থিকভাবে পরনির্ভরশীল।
তারা স্বল্প আয়ের রুজি যেটুকুই করছেন সেসবও অনেক
ক্ষেত্রে বিতর্কিত। যেমন ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে বিনিময় গ্রহণ, ইবাদাত বা ধর্মীয়
বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা করে বিনিময় গ্রহণ, ঝাড়ফুঁক তাবিজ-তুম্বা, নজর-নেয়াজ, অনুদান-অনুগ্রহ, লিল্লাহ-সাদকা, দান-খয়রাত
ইত্যাদি হচ্ছে তাদের আয়ের উৎস। বিতর্কিত এসব আয় ইনকামের কারণে তারা নিজেরাও বিতর্কিত
ও পরনির্ভরশীল হয়ে রয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে।
অথচ বুখারী শরীফের হাদিসে আছে "উপরের হাত নিচের
হাতের চেয়ে উত্তম"। অর্থাৎ দাতার মর্যাদা দান গ্রহীতার চেয়ে বেশি। অন্য কথায় দাতার
চেয়ে দান গ্রহীতার মর্যাদা কম। তাই দান গ্রহণের উপর নির্ভরশীল হবার কারণে আমাদের ধর্মগুরুগণের
গুরুত্ব ও মর্যাদা সমাজে কমে গেছে।
এ মর্যাদাহানিকর অবস্থান থেকে মর্যাদাকর অবস্থায়
পৌঁছানোর লক্ষ্যে আমি কিছু যৌক্তিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে চাই।
২. সৃষ্টিকর্তা মহাবিজ্ঞানী ও মহাকৌশলী। বিজ্ঞান হচ্ছে ধর্মের
অপরিহার্য অংশ।
বিজ্ঞানের অপরিহার্যতার বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেছেন, "পৃথিবী ও আকাশের
সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের পালাক্রমে যাওয়া-আসার মধ্যে যে সমস্ত বুদ্ধিমান লোক উঠতে-বসতে
ও শয়নে সব অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আকাশ ও পৃথিবীর গঠন আকৃতি নিয়ে চিন্তাভাবনা
করে, তাদের জন্যে রয়েছে বহুতর নিদর্শন। (তারা আপনি বলে ওঠে) হে আমাদের
প্রভু! এসব তুমি অনর্থক ও উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি করোনি। বাজে ও নিরর্থক কাজ করা থেকে
তুমি পাক-পবিত্র মুক্ত"। (আল
ইমরান ১৯০-১৯১ নম্বর আয়াত)
আল্লাহ আরও বলেন, "যাদের বিবেক-বুদ্ধি
আছে তাদের জন্য অগণিত নিদর্শন রয়েছে আসমান ও জমিনের সৃষ্টির মধ্যে, রাত ও দিনের
পালাক্রমে আসার মধ্যে, ঐ নৌযান সমূহের মধ্যে যা মানুষের জন্য উপকারী জিনিস নিয়ে নদী
সমুদ্রে চলাচল করে, বৃষ্টির পানির মধ্যে যা আল্লাহ উপর থেকে নাযিল করেন, তারপর এর দ্বারা
মরা জমিনকে জীবিত করেন এবং এ ব্যবস্থা দ্বারা পৃথিবীতে সব রকম জীবজন্তুর বিস্তার সাধন
করেন, বাতাসের প্রবাহের মধ্যে এবং ঐ মেঘমালার মধ্যে, যাকে আসমান
ও জমিনের মাঝখানে অনুগত করে রাখা হয়েছে"।(সূরা বাকারা ১৬৪ নম্বর আয়াত)
আল্লাহ সূরা হাশরের ২২ নম্বর আয়াতে বলেন, "হে অন্তরচক্ষুর
অধিকারী লোকেরা, তোমরা চিন্তাভাবনা গবেষণা করো"।
এ ধরণের আরও অসংখ্য স্থানে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা
প্রশাখায় গবেষণা চালাতে মহান আল্লাহ জোর তাকিদ দিয়েছেন।
কাজেই ধার্মিকরা হবে বিজ্ঞানমনস্ক। অথচ আজ ধর্ম
থেকে বিজ্ঞানকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় ধর্মকে বৈজ্ঞানিক
উপায়ে উপস্থাপন করতে না পারার কারণে বিজ্ঞানের সাথে তাঁদের সংঘাত বেঁধে যায় অনেক ক্ষেত্রে।
তাই প্রকৃত ধর্ম এখন বিজ্ঞানবিহীন ধর্ম ও ধর্মবিহীন
বিজ্ঞান দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
অথচ একটু অতীতের দিকে তাকালেও দেখা যায় উপাসনালয়
ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় উভয় শিক্ষার সমন্বয় ছিল।
(চলবে)
লেখকঃ
হাফিজ মোঃ
মাশহুদ চৌধুরী,
(জাতীয়
পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত)
প্রধান
শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত)
সরকারি এস.
সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ।
মোবাইলঃ
01715 142715
ইমেইল:
mashhudchowdhury@gmail.com
mashhudchowdhury@gmail.com
ইউটিউব চ্যানেল:
https://www.youtube.com/channel/UC8ZSiWdwj6NkC67WPd5I1sQ?view_as=subscriber
শুভেচ্ছা টিভি - Shuveccha TV
শুভেচ্ছা টিভি - Shuveccha TV
Facebook:
Hafiz Md Mashhud Chowdhury
Hafiz Md Mashhud Chowdhury
Facebook Page:
হাফিজ মোঃ
মাশহুদ চৌধুরী
Somewhereinblog.net:
হাফিজ মোঃ
মাশহুদ চৌধুরী
0 coment rios:
You can comment here