Saturday, June 13, 2020

উচ্চতর গবেষণায় ইসলামী শিক্ষার ক্ষেত্র: একটি বিশ্লেষণ

 
।। প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান।।


ভূমিকা :
মানুষের কল্যাণে ইসলাম সর্বদা উৎসাহিত করেছে। ইসলামে শিক্ষা গ্রহণ এবং বিতরণ দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য ইসলামে কোন মানুষ অজ্ঞ থাকার সুযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে তুমি পড় এবং প্রভুর নামে পড়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
অর্থ : শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَ
আয়াত-১ অর্থ : পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন।

خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ
আয়াত-২ অর্থ : সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।

اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ
আয়াত-৩ অর্থ : পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু

الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ
আয়াত-৪ অর্থ : যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন

عَلَّمَ الْإِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
আয়াত-৫ অর্থ : শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
 وعن عبد الله بن مسعود -رضي الله عنه- إنَّ رسول الله قال: "من قرأ حرفًا من كتابِ اللهِ فلهُ به حسنةٌ والحسنةُ بعشرِ أمثالِها، لا أقولُ آلم حرفٌ، ولكن ألفٌ حرفٌ ولامٌ
حرفٌ وميمٌ حرفٌ".
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি পবিত্র কুরআনের একটি অক্ষর পড়বে, সে একটি নেকী পাবে। আর একটি নেকী দশটি নেকীর সমপরিমাণ। আমি এটা বলব না আলিফ লাম মীম একটা হরফ। বরং এখানে আলিফ একটা লাম একটা এবং মীম একটা হরফ। (তিরমিজি)
তিনি ইরশাদ করেন,
تَعَلَّمُوا الْقُرْآنَ ، وَاتْلُوهُ»
অর্থ: তোমরা কুরআন শিক্ষা কর এবং তিলাওয়াত কর [মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবাহ:৮৫৭২]।
আলোচ্য প্রবন্ধে ইসলামী শিক্ষায় গবেষণার ক্ষেত্র এবং সম্ভবনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যেন গবেষগণ মানবতার কল্যাণে কাজ করতে পারে।
গবেষণা :
গবেষণ, গবেষণা   বি তত্ত্বানিরূপণার্থ অন্বেষণ।
পরিভাষা:
গবেষণা কী এ ব্যাপারে অনেক বক্তব্য পাওয়া যায়। পাঠকদের সুবিধার্থে শুধু মাত্র বোধগম্য বিষয় আলোকপাত করা হল।

গবেষণা হল সত্য অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া যার সাধারণ অর্থ হল সত্য ও জ্ঞানের অনুসন্ধান। এর সমার্থবোধক শব্দ হল জিজ্ঞাসা, তদন্ত, অণ্বেষা, অনুসন্ধান, বিকিরণ এবং নিরুপুণ। গবেষণা হল জিজ্ঞাসার উত্তর অন্বেষণের লক্ষ্যে তদন্ত করা, তদন্তের মাধ্যমে তথ্যসংগ্রহ করা, সংগৃহীত তথ্যে...রচিতর অনুসন্ধান করে জিজ্ঞাসার উত্তর বের করা।

গবেষণা হল পুনঃসন্ধান অর্থাৎ, তুলনামূলক উন্নত পর্যবেক্ষণ করা, ইংরেজি ভাষায়-
Research is "creative and systematic work undertaken to increase the stock of knowledge, including knowledge of humans, culture and society, and the use of this stock of knowledge to devise new applications.
অর্থ : গবেষণা হ'ল মানব, সংস্কৃতি এবং সমাজের জ্ঞানসহ জ্ঞানের মজুদ বৃদ্ধির জন্য সৃজনশীল এবং নিয়মিত পদ্ধতিতে কাজ করা এবং নতুন অ্যাপ্লিকেশন গঠনের জন্য জ্ঞানের এই স্টকের ব্যবহার। আরবি ভাষায়
 البحث العلمي أو البحث أو التجربة التنموية هو أسلوب منظم في جمع المعلومات الموثوقة وتدوين الملاحظات والتحليل الموضوعي لتلك المعلومات باتباع أساليب ومناهج علمية محددة بقصد التأكد من صحتها أو تعديلها أو إضافة الجديد لها، ومن ثم التوصل إلى بعض القوانين والنظريات والتنبؤ بحدوث مثل هذه الظواهر والتحكم في أسبابها
অর্থ :বৈজ্ঞানিক গবেষণা, গবেষণা বা বিকাশের অভিজ্ঞতা নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ, নোট গ্রহণ এবং এর বৈধতা, সংশোধন বা এটিতে নতুন সংযোজন করার উদ্দেশ্যে একটি নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং পদ্ধতির অনুসরণ করে সেই তথ্যের উদ্দেশ্য বিশ্লেষণের পদ্ধতিগত পদ্ধতি এবং এরপরে কিছু আইন এবং তত্ত্বগুলিতে পৌঁছে এবং এই জাতীয় ঘটনার সংস্থান এবং নিয়ন্ত্রণের ভবিষ্যদ্বাণী করা  এর কারণগুলি।

সর্বোপরি তুলনামূলক উন্নত পর্যবেক্ষণ করা, ভিন্ন প্রেক্ষিতে খোঁজা এবং বাড়তি জ্ঞানের সংযোজন করার সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা। কোন নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহের জন্যে বৈজ্ঞানিক ও সুসসংবদ্ব অনুসন্ধান হল গবেষণা।

গবেষণার ইসলামী দৃষ্টিকোণ আল্লাহ তাআলা প্রকূত ঘটনা অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِنَ الْأَمْنِ أَوِ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَى أُولِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنْبِطُونَهُ مِنْهُمْ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَاتَّبَعْتُمُ الشَّيْطَانَ إِلَّا قَلِيلًا
"মোনাফিকদের কাজের ধরণ হলো, যখনই শান্তি ও নিরাপত্তা এবং পরাজয় বা ভয়ের কোন সংবাদ তাদের কাছে পৌঁছে তখনই তারা তা রটনা করে, অথচ যদি তারা রাসূলের কাছে কিংবা নেতৃস্থানীয় মুসলমানদের কাছে এসব সংবাদ পৌঁছে দিত, তাহলে বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ লোকেরা সংবাদগুলোর সত্যতা বুঝতে পারত। তোমাদের প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হতো, তাহলে তোমাদের অল্প ক'জন ছাড়া সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে।" (৪:৮৩) আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
 فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ۗ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ
আয়াত-১৯ অর্থ: জেনে রাখুন, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ক্ষমাপ্রার্থনা করুন, আপনার ক্রটির জন্যে এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্যে। আল্লাহ, তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
وقال صلى الله عليه وسلم: «من سلك طريقاً يطلب فيه علماً سلك الله به طريقاً من طرق الجنة، وإن الملائكة لتضع أجنحتها رضاء لطالب العلم، وإن العالم ليستغفر له من في السموات ومن في الأرض، والحيتان في جوف الماء، وإن فضل العالم على العابد كفضل القمر ليلة البدر على سائر الكواكب، وإن العلماء ورثة الأنبياء، وإن الأنبياء لم يورثوا ديناراً ولا درهماً، ولكن ورثوا العلم فمن أخذه أخذ بحظ وافر».
আল্লাহর রাসূল (সা.) এর পবিত্র মুখ থেকে আরও উচ্চারিত হয়েছে, ‘‘রাতের কিছু সময় জ্ঞান চর্চা করা পূর্ণ রাত্রি (এবাদতে) কাটানো অপেক্ষা উত্তম (দারেমী)।

আরেকটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যার মৃত্যু এমন সময় এসে পৌঁছেছে যখন সে ইসলামকে সমুন্নত রাখার প্রয়াসে জ্ঞান চর্চায় লিপ্ত বেহেশতে তার ও নবীদের মাঝে মাত্র এক ধাপ পার্থক্য থাকবে। (দারেমী)।

হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি জ্ঞান অনুসন্ধানে বের হয়েছে সে আল্লাহর রাস্তায় রয়েছে সে পর্যন্ত না ফিরে আসবে (তিরমিযী)। অর্থাৎ, জ্ঞান চর্চায় লিপ্ত থাকা আল্লাহর রাস্তায় থাকারই নামান্তর।

জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহর নবী আরও বলেন, জ্ঞানী ব্যক্তির মর্যাদা (জ্ঞানহীন) ইবাদতকারীর ওপর এরূপ যেরূপ আমার মর্যাদা তোমাদের সবার ওপর।

অতপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন , যে ব্যক্তি মানুষকে ভাল কথা শিক্ষা দিয়ে থাকে তার জন্য স্বয়ং আল্লাহ তালা, তাঁর ফেরেশতাগণ, আসমানবাসী, জমিনবাসী, এমনকি গর্তের পিপীলিকা পর্যন্ত দোয়া করে (তিরমিযী)

উক্ত আয়াত ও হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, ইসলামে বিভিন্ন ধরনের জ্ঞান অর্জন ও গবেষণা কর্মে উৎসাহিত করা হয়েছে।
ইসলামী শিক্ষার গবেষণা ক্ষেত্র:

ইসলামী স্টাডিজে গবেষণা করার ক্ষেত্র অনেক ব্যাপক। আমরা যদি নলেজ (knowledge) তিন ভাগে  ভাগ করি তাহলে দেখতে পাই –
১। ধর্ম বিজ্ঞান (Religion Science )
২। সামাজিক বিজ্ঞান (Social Science )
৩। প্রকৃতি বিজ্ঞান (Natural Science )

এখানে সকল শাখার সাথে ধর্ম বিজ্ঞান জড়িত। সূতরাং মানব কল্যাণ সাধিত হয় এমন সকল ক্ষেত্রে গবেষণা করার সুযোগ আছে। আমি গবেষণা করার ক্ষেত্রে সুবিধার্থে কয়েকটি বিষয় চিহ্নিত করেছি।
যেমন - আল-আকীদাহ, আল - কুরআনে, আল - হাদীস, ফিকহ, উসূলে ফিক্হ, আখলাক, ইজমা, কিয়াস, ইজতিহাদ, জনস্বার্থ (المصلحه المرسله ), অনুমান (استدلال), স্থানীয় রীতি (عرف) তাওহীদ এবং ইসলামী বিধানের উদ্দেশ্য (مفاصد الشريعه) এ ছাড়া মানুষের জীবনের সাথে জড়িত যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য ইসলামী দৃষ্টিকোণের আলোকে গবেষণা করার সুযোগ আছে। বর্তমান এর আলোকে অনেক গবেষণা সম্পাদিত হয়েছে।

নিযমাবলী:
প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণা করতে হলে কোন বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ইনস্টিটিউট বা কোন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে করা যাবে। এ ক্ষেত্রে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্ত এক রকম নয়। যে প্রতিষ্ঠান যে সকল শর্ত আরোপ করে তার আলোকে আবেদন করতে হবে। তাদের নির্দেশনার আলোকে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষায় নম্বরের ভিন্নতা আছে।

বাংলাদেশে সুযোগ:
বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধীনে করা যেতে পারে। তবে যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ আছে সেটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ। 
যেমন - ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের অধীনে
১. আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
২. আল হাদীস এন্ড ইসলামিক বিভাগ
৩.  দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ।
এছাড়া কলা অনুষদের অধীনে আছে,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ আছে। এ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার সুযোগ বিদ্যমান। অন্যদিকে ইউজিসি প্রদত্ত প্রকল্পে গবেষণা করার ও সুযোগ আছে।
গবেষণা অবগত হওয়া
গবেষণার সমস্যা চিহ্নিতকরণ
প্রাসঙ্গিক গবেষণা ও তথ্য পর্যালোচনা (Relevant research and data review)
গবেষণার সমস্যা নির্দিষ্টকরণ
অনুমিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও গবেষণার প্রশ্ন (Hypothetical decision making and research questions) নির্দিষ্টকরণ

তথ্য সংগ্রহ (Data Collection )

তথ্য বিশ্লেষণ ও বর্ণনাকরণ (Analyze and describe data)

প্রতিবেদন তৈরি (Report creation)
এছাড়া গবেষণা করার ক্ষেত্রে কয়েকটি মৌলিক বিষয় লক্ষ্য করা যায়

নৈতিকতা নিশ্চিতকরণ (Ethics Confirmation)
নিজের তথ্য সরবরাহ করার মাধ্যমে গবেষণাতে অংশ নেয়ার আগে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবহিত হওয়া প্রয়োজন, যেমন
১। মানুষ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে গবেষকদের পূর্ব অভিজ্ঞতা
২। মানুষ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও দায়িত্বশীলতা
৩। সংগৃহীত তথ্য কীভাবে ব্যবহৃত হবে এবং কোথায় প্রকাশিত হবে। এ ক্ষেত্রে নিজের বিশ্লেষণ ছাড়া অন্যের বিশ্লেষণ নিজের নামে ব্যবহার করা। এসকল কর্ম থেকে প্রথমে ত্যাগ করতে হবে। গবেষণার ক্ষেত্রে এটা মহা অপরাধ।
 শিরোনাম নির্বাচন : (Title selection)
যে কোন গবেষণার স্পষ্ট প্রতিফলন হলো তার নির্বাচিত শিরোনাম।

ভূমিকা : (Introduction )
ভূমিকা লেখার জন্য বা গবেষণার বিষয় বিশ্ব (Gglobal View) কিভাবে মূল্যায়ন করছে। এ ছাড়া গবেষণার সার্বিক পরিস্থিতি বর্ণনা করা।

সমস্যা চিহ্নিত করা (Problem identification)
এ গবেষণার সামাজিক অবস্থান এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছু সমস্যা তুলে ধরা এবং তার সমাধান করার কী চেষ্টা তা বর্ণনা করা।

গবেষণার উদ্দেশ্য (Research Objectives)

কেন এ গবেষণা করা হয়েছে? সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে প্রকাশ করা। জাতির কী উপকার হবে বা নিজের কী উপকার হবে তা বর্ণনা করা।

সাহিত্য পর্যালোচনা (Literary Review)
সাহিত্য পর্যালোচনা যে কোন গবেষণার জন্য অতীব জরুরি। আর এই কার্যটি সর্বপ্রথমে করতে হবে। প্রথমত, আপনাকে আমার গবেষণার বিষয় সংশ্লিষ্ট সাহিত্য খুঁজে বের করতে হবে। সেটি হতে পারে বই, জার্নাল, আর্টিকেল, পত্রিকার লেখনী, ওয়েবসাইট, তথ্যচিত্র ইত্যাদি।

তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটে (Theoretical context) এটা অনেকগুলো ঘটনার একটা সাধারণ রুপ। কোন কোন দেশকে বাস্তবমূখী বলা তথ্য। আর সকল দেশ বাস্তবমূখী এটা তত্ত্ব।

গবেষণার যৌক্তিকতা (Rationality of research )
এ গবেষণার যৌক্তিকতা কী আছে। ব্যক্তি ও সমাজের জন্য কী ধরনের উপকার হবে সে বিষয়ে আলোচনা করা যাবে।

ব্যবহৃত তত্ত্ব  (Theory used )
গবেষণার সাথে সম্পর্কিত কিনা সে বিষয়ে আলোচনা করা।

গবেষণা কর্ম পরিকল্পনা (Research Action Plan)
সাহিত্য পর্যালোচনা, মাঠ কর্ম তথ্য বিশ্লেষণ, খসড়া গবেষণা পত্র তৈরি এবং মূল গবেষণা পত্র তৈরি করা কত সময় এবং কিভাবে তার বর্ণনা করা।

তথ্য সূত্র

তথ্য উপস্থাপন কৌশল
(Information Presentation Techniques) আন্তর্জাতিক গবেষণা পদ্ধতি ও দেশীয় গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করার বিষয়ে বর্ণনা করা। যেমন- AAA   (AMERICAN ANTROLOGICAL ASSOCIATION) অথবা আবার APA (AMERICAN PHAYCLOGICAL ASSOCIATION)  অথবা অন্য কোনো উপায় ব্যবহার করা হলে তা আলোচনা করা। গবেষণার তথ্য, উৎস, মূখ্য উৎস এবং গৌন উৎস আলোকপাত করা।

পরিশিষ্ট সংযোজন (Appendix additions)
পরিশিষ্ট- শব্দটা বিশেষণ পদ অর্থ অবশিষ্ট, বাকী।  আর বিশেষ্য পদ অর্থ গন্থাদির শেষে সংযুক্ত অতিরিক্ত অংশ।। পরি+শিষ্‌+ত এর অর্থ উপরি, অতিরিক্ত পাতা, যোগ, যোজন, সংযোজন

উপসংহার  ও গবেষণার ফলাফল (Conclusions and research results)
উপসংহার শব্দটি বিশেষ্য পদ এর অর্থ সমাপ্তি, পরিশেষ, শেষাংশ। উপ+সম্‌+হৃ+অ।  এটা বিশেষণ পদ হলে উপসংহৃত। গবেষণা করার শেষে গবেষণার ফলাফল আলোচনা করতে হবে।

উপসংহার
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ইসলামী বিষয়ে বিশ্ব জুড়ে ব্যাপক গবেষণা করার সুযোগ আছে। আমরা যদি গবেষণার নিযমাবলী এবং আইন মেনে গবেষণা কর্ম করি তাহলে নুতন নতুন দিগন্তের উন্মোচন করতে পারবো। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এ কাজ করার তাওফীক দান করুন আমীন ।
লেখক:
প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া
বাংলাদেশ।


শেয়ার করুন

Author:

0 coment rios:

You can comment here