Saturday, June 20, 2020

হিংসা-বিদ্বেষ নিকৃষ্ট অপরাধ: আমাদের করণীয়

 
।। প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান।।

ভূমিকা
পৃথিবীতে মানুষের অন্যতম একটি খারাপ গুণ হলো হিংসা-বিদ্বেষ । ইসলামে হিংসা কিংবা বিদ্বেষ পোষনণকারীকে খুবই নিকৃষ্ট দূষ্টিতে দেখা হয়েছে। হিংসা মানুষকে শুধুমাত্র প্রতিপন্নই করে না বরং হিংসুকের জীবন কখনই সুখের হয় না। হিংসুক তার নিজের প্রজ্জলিত আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিংসা থেকে মুক্তির জন্য দূআ করতেন। যেমন-
رَبِّ تَقَبّلْ تَوْبَتِى وَاغْسِلْ حَوْبَتِى وَأَجِبْ دَعْوَتِى وَثَبِّتْ حُجّتِى وَاهْدِ قَلْبِى وَسَدِّدْ لِسَانِى وَاسْلُلْ سَخِيمَةَ قَلْبِى.
অর্থ :প্রভু আমার! আপনি আমার তওবা কবুল করুন, আমার পাপরাশি ধুয়ে দিন, আমার ডাকে সাড়া দিন, আমার দলীল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করুন, আমার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার যবানকে সঠিক রাখুন আর আপনি আমার অন্তরের যাবতীয় কলুষতা দূর করে দিন। (আবু দাউদ, হাদীস ১৫১২) আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
, هَا أَنتُمْ أُولَاءِ تُحِبُّونَهُمْ وَلَا يُحِبُّونَكُمْ وَتُؤْمِنُونَ بِالْكِتَابِ كُلِّهِ وَإِذَا لَقُوكُمْ قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا عَضُّوا عَلَيْكُمُ الْأَنَامِلَ مِنَ الْغَيْظِ ۚ قُلْ مُوتُوا بِغَيْظِكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ

অর্থ :তোমরা তাদেরকে ভালোবাসো কিন্তু তারা তোমাদেরকে ভালোবাসে না অথচ তোমরা সমস্ত আসমানী কিতাবকে মানো৷ তারা তোমাদের সাথে মিলিত হলে বলে, আমরাও (তোমাদের রসূল ও কিতাবকে) মেনে নিয়েছি৷ কিন্তু তোমাদের থেকে আলাদা হয়ে যাবার পর তোমাদের বিরুদ্ধে তাদের ক্রোধ ও আক্রোশ এতবেশী বেড়ে যায় যে, তারা নিজেদের আঙুল কামড়াতে থাকে৷ তাদেরকে বলে দাও, নিজেদের ক্রোধ ও আক্রোশে তোমরা নিজেরাই জ্বলে পুড়ে মরো৷ আল্লাহ মনের গোপন কথাও জানেন ৷
وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ
ব্যক্তি জীবনে মানুষের অন্যতম একটি খারাপ গুণ হলো হিংসা। সে সবসময় সব জিনিসের অধিকারী হতে চায়। তার সর্বদা এই চেষ্টাই থাকে যে, অন্যের কাছে যা আছে তার চেয়ে তার জিনিসটা ভালো হওয়া চাই। আর এই হিংসুক ব্যক্তি সমাজের অন্যান্য সন্মানিত ব্যক্তিদের ব্যক্তিত্বকে হেয় করার চেষ্টা করে। সে নিজের এবং সমাজের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে যায়। কেননা তার দৃষ্টিতে সে একাই সমাজে সন্মানিত ব্যক্তি, বাকিরা সবাই তারচেয়ে নগন্য ও অথর্ব ।

আলোচ্য প্রবন্ধে হিংসা ও এর কুফল এবং ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে এর থেকে উত্তোলনের উপায় আলোচনা করা হয়েছে।
হিংসার সংজ্ঞা
হিংসা শব্দের বিশেষ্য পদ বধ, হনন, অনিষ্ট, ক্ষতি, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা। হিংসা , হিংসন ইংরেজিতে-
 Noun  Malice; envy; jealousy; injury; mischief; harm; slaughter; murder
 আরবি ভাষায়-
.الحسد هو شعور عاطفي بتمني زوال قوة أو إنجاز أو ملك أو ميزة من شخص آخر والحصول عليها أو يكتفي الحاسد بالرغبة في زوالها من الآخرين.  وهو بخلاف الغبطة فإنها تمنّي مثلها من غير حب زوالها عن المغبوط.
অর্থ হিংসা হ'ল ক্ষমতা অর্জন, সম্পত্তি বা অন্য কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে অপসারণ করার সুযোগ নেওয়া। অন্যদিকে অপসারণের জন্য কামনা করার একটি সংবেদনশীল অনুভূতি বা হিংসা অন্যদের কাছ থেকে অপসারণ করার ইচ্ছাতে সন্তুষ্ট থাকা।
এর পরিচয় বিদ্বেষ, বিদ্বেষণ বা বিশেষ্য পদ এর দ্বারা হিংসা, অপ্রীতি, শত্রুতা, ঈর্ষা। বিদ্বেষ। ইংরেজিতে Noun অর্থ Envy ; malice ; hatred.
পরবর্তী শব্দ : বিদ্বেষ করা পূর্ববর্তী শব্দ : বিদ্ধিষ্ট। মূল কথা হলো অন্যের অনিষ্ট কামনা করা।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ
ইতিহাস খোঁজ করলে দেখা যায় যে হিংসা মানুষ তৈরি করার পর আদম সন্তান থেকে শুরু হয়েছে। বিয়ে করা নিয়ে হাবিল ও কাবিলের মধ্যে দন্ধ হয়। পরে আল্লাহ তাআলা বিধান দেন। যার কুরবানী কবুল হবে সে-ই তার উক্ত বোনকে বিয়ে করতে পারবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ-
اِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ اَحَدِهِمَا وَ لَمْ یُتَقَبَّلْ مِنَ الْاٰخَرِ قَالَ لَاَقْتُلَنَّكَ قَالَ اِنَّمَا یَتَقَبَّلُ اللهُ مِنَ الْمُتَّقِیْنَ  لَىِٕنْۢ بَسَطْتَّ اِلَیَّ یَدَكَ لِتَقْتُلَنِیْ مَاۤ اَنَا بِبَاسِطٍ یَّدِیَ اِلَیْكَ لِاَقْتُلَكَ  اِنِّیْۤ اَخَافُ اللهَ رَبَّ الْعٰلَمِیْنَ...
অর্থ :যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল, কিন্তু তাদের একজনের পক্ষ থেকে তা কবুল করা হল এবং অপরজনের পক্ষ থেকে কবুল করা হয়নি। সে বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। অপরজন বলল, আল্লাহ তো মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করে থাকেন। তুমি যদি আমাকে হত্যা করার জন্যে আমার দিকে তোমার হাত বাড়িয়ে দাও, তবুও আমি তোমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তোমার দিকে আমার হাত বাড়াব না। আমি অবশ্যই বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহকে ভয় করি।
 অবশ্যই আমি চাই, তুমি আমার পাপ এবং তোমার পাপ বহন কর, এরপর তুমি দোজখিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। আর এটাই জালেমদের শাস্তি। অবশেষে তার মন তাকে ভাই-হত্যার বিষয়ে প্ররোচিত করল, এরপর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে। (সূরা মায়িদা ২৭-৩০)

ইবলিসের অহংকার
আল্লাহ তাআলা যখন তাকে আদমকে সিজদা করার আদেশ করেন তখন সে হিংসা ও অহংকার করে।
যে ঔদ্ধত্য ও অহংকারের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, উল্লেখিত হয়েছে তার অভিশপ্ত হওয়ার কথা, তার মূলেও তো একই হিংসা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
قَالَ اَرَءَیْتَكَ هٰذَا الَّذِیْ كَرَّمْتَ عَلَیَّ.

অর্থ : সে বলল, দেখুন তো, এই কি সেই সৃষ্টি, যাকে আপনি আমার ওপর মর্যাদা দান করেছেন? (সূরা ইসরা, আয়াত: ৬২)
অন্যের ভালো জিনিস ধ্বংস কামনা
হিংসা হচ্ছে অন্যের ভালো কোনো কিছু দেখে তা ধ্বংস হওয়া বা হারিয়ে যাওয়ার কামনা করা। অন্যের উন্নয়ন ও আর্থিক অবস্থা ধ্বংস কামনা করা। কেউ ভালো পথে চলতে থাকলে কিংবা ভালো কোনো কাজ করতে গেলে সেখান থেকে সে ফিরে আসা, বাধাগ্রস্ত হওয়া কিংবা ব্যর্থ হওয়ার কামনা করা। এগুলোই হিংসা।  আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَاُحْضِرَتِ الْاَنْفُسُ الشُّحَّ.
 অর্থ :মানুষকে কৃপণতাপ্রবণ করেই সৃষ্টি করা হয়েছে। (সূরা নিসা, আয়াত:  ১২৮)

হিংসার কারনে রাসূলকে অস্বীকার করা
আরবের মুনাফিকরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে মেনে নিয়েছে, তারা যেন এ সঠিক ও সরল পথ ছেড়ে আগের ভ্রান্ত ও বাঁকা পথে ফিরে যায় তারা সে কামনাও করত। এর মূলে ছিল কেবলই হিংসা। সঠিক দ্বীন আমরা মানি না তো তারা মানবে না। এই পর্যায়ের হিংসার ঘটনা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَدَّ كَثِیْرٌ مِّنْ اَهْلِ الْكِتٰبِ لَوْ یَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ اِیْمَانِكُمْ كُفَّارًا   حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ اَنْفُسِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ.
অর্থ :আহলে কিতাবদের অনেকেই তাদের নিকট সত্য স্পষ্ট হওয়ার পরও হিংসাবশত কামনা করে। তোমাদের ঈমান আনার পরও যদি তারা তোমাদের কাফের  অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারত! (সূরা বাকারা ১০৯) এ ছাড়া হাদীসে হিংসার ক্ষতিকর অনেক দিক বর্ণনা করা হয়েছে।
عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم، قال : "لا تحاسدوا ولا تناجشوا، ولا تباغضوا ولا تدابروا، وكونوا عباد الله إخوانا" صحيح مسلم بشرح النووي 254/35
অর্থ :.আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরের জন্য নিলাম ডেকে দাম বাড়াবে না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ করবে, একে অপর থেকে আলাদা হয়ে যেও না। হে আল্লাহর বান্দাগণ! পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও।
وعن أبي هريرة قال أن النبي قال: "لا يجتمع في جوف عبد الإيمان والحسد" صحيح مسلم.
অর্থ :আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, বান্দার মধ্যে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হয় না। (সহীহ মুসলিম)
وعن أبي هريرة أيضا رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال:"إياكم والحسد فإن الحسد يأكل الحسنات كما تأكل النار الحطب أو قال العشب" أخرج أبو داود والبيهقي.
অর্থ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা হিংসা থেকে বিরত থাকো। কেননা হিংসা সমস্ত সৎ আমল গ্রাস করে যেমন আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে। (সুনানু আবি দাউদ) উপরের আয়াত ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় হিংসা করা ইসলাম সমর্থন করে না।
 وقال أبو الليث السمرقندي : (يصل إلى الحاسد خمس عقوبات قبل أن يصل حسده إلى المحسود: أولاها: غمٌّ لا ينقطع. الثانية: مصيبة لا يُؤجر عليها. الثالثة: مذمَّة لا يُحمد عليها. الرابعة: سخط الرب. الخامسة: يغلق عنه باب التوفيق
মুমিনগণের জন্য করণীয়
কোন মুমিন হিংসা করবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
, عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: (لَا يَجْتَمِعَانِ فِي النَّارِ مُسْلِمٌ قَتَلَ كَافِرًا، ثُمَّ سَدَّدَ وَقَارَبَ، وَلَا يَجْتَمِعَانِ فِي جَوْفِ مُؤْمِنٍ غُبَارٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَفَيْحُ جَهَنَّمَ، وَلَا يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ الْإِيمَانُ وَالْحَسَدُ
কোনো বান্দার হৃদয়ে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না। (সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৩১০৯)
লুকমান  আলাইহিস সালাম স্বীয় পুত্রকে উপদেশ প্রদানকালে বলেন,
للحاسد ثلاث علامات: يغتاب صاحبه إذا غاب، ويتملق إذا شهد، ويشمت بالمصيبة
অর্থ :হিংসুকের তিনটি চিহ্ন রয়েছে- পিছনে গীবত করা, সামনা সামনি তোষামোদ করা এবং অন্যের বিপদে আনন্দিত হওয়া। এ ধরনের খারাপ চরিত্র থেকে দূরে থাকবে।
আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হিংসা থেকে দুরে থাকার প্রার্থনা শিখিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وَ مِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ.
অর্থ :এবং (আমি আশ্রয় চাই) হিংসুকের অনিষ্ট থেকে, যখন সে হিংসা করে। (সূরা ফালাক, আয়াত: 5)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَقَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ: إِيَّاكُمْ وَالْحَسَدَ، فَإِنَّ الْحَسَدَ يَأْكُلُ الْحَسَنَاتِ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ. أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ.
অর্থ :তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থেকো। কারণ হিংসা নেক আমলসমূহকে গ্রাস করে নেয়, যেভাবে আগুন গ্রাস করে লাকড়ি (অথবা ঘাস)। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৫ হাদীসের ভাষ্য এমন-
إِنّ الْحَسَدَ يُطْفِئُ نُورَ الْحَسَنَاتِ.
সন্দেহ নেই, হিংসা নেক আমলসমূহের নূর ও আলোকে নিভিয়ে দেয়। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৬)
عن معاذ بن جبل قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم "استعينوا على قضاء حوائجكم بالكتمان فإن كل ذي نعمة محسود
গোপনীয়তার সাথে আপনার চাহিদা মেটাতে থাকুন কারন, যার উপর অনুগ্রহ রয়েছে তার জন্য হিংসুক রয়েছে।

আল হাসান আল-বাসরী রহিমাহুল্লাহর তাআলা আনহু
 وقال الحسن البصري: (ما رأيت ظالـمًا أشبه بمظلوم من حاسد، نفس  - دائم، وحزن لازم، وغمٌّ لا ينفد
মন্দের মূল তিনটি এবং শাখা ছয়টি।
মূল তিনটি হলো
১) হিংসা-বিদ্বেষ,
২) লোভ-লালসা এবং
৩) দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা।
ইমাম কুরতুবী রহিমাহুল্লাহর বলেছেন,
হিংসা ও বিদ্বেষকারী ব্যক্তি সর্বদা শোকার্ত হয়। কারণ সে অন্যের ভালো কোনো কিছু সহ্য করতে পারে না। তাই মনে কষ্টে নীল হতে থাকে। তিনি আরো বলেন, ‘হিংসা ও বিদ্বেষ মানুষের কোনো উপকারে আসে না।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহিমাহুল্লাহর বলেছেন, একে অপরের সাথে হিংসা করা থেকে বিরত থাকো, কেননা হিংসা হলো কুফরের ভিত্তিস্বরূপ।
দুটি জিনিস ছাড়া হিংসা করা জায়েজ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
 عن سالم عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال:" لا حسد إلا في اثنتين : رجل آتاه الله القرآن فهو يقوم به آناء الليل وآناء النهار ورجل آتاه الله مالا فهو ينفقه آناء الليل وآناء النهار "

উপসংহার
আমরা মানুষ, আমাদের মাঝে মানবীয় দোষ-ত্রুটির অন্যতম হিংসা কোনো না কোনোভাবে জায়গা করে নিতে পারে। এটা বিচিত্র কিছু নয়। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে, কারো মাঝে এমন ত্রুটি থাকলে থাকলে তা দ্রুত শোধরে নেওয়া, যে সব কারণে এমন বদঅভ্যাস মনে জায়গা করে নিতে পারে, সেসব থেকে দূরে থাকা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
عن الزُّبير بن العوَّام رضي الله عنه أنَّ النَّبيَّ صلى الله عليه وسلم قال: دبَّ إليكم داء الأمم قبلكم: الحسد والبَغْضَاء
অর্থ: পূর্ববর্তী জাতিসমূহের রোগব্যাধি তোমাদের কাছেও এসে পৌঁছেছে। তা হল হিংসা-বিদ্বেষ।
প্রকৃতপক্ষে বর্তমান অবস্থা হিংসা-বিদ্বেষ সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। এ ধরনের নিকৃষ্ট  কাজ থেকে আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হিফাযত করুন, আমীন ।


লেখক:
প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া
বাংলাদেশ।


শেয়ার করুন

Author:

0 coment rios:

You can comment here