।। প্রফেসর ড. সৈয়দ মাকসুদুর রহমান।।
সারসংক্ষেপ
(Abstract
)
সাধারণত সংঘর্ষ বলতে একাধিক বিরুদ্ধপক্ষের মধ্যে
পারস্পরিক দ্বন্দ্ব বা সংঘাতকে বোঝায়। ইংরেজি ভাষায় (conflict) আরবি ভাষায়
একে বলে ( النزاع) মানব জীবনে সংঘর্ষ প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে।
বিশ্বাস ও মূল্যবোধের বৈচিত্র্য আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের বিভিন্নতা
এবং ব্যক্তি, সামাজিক শ্রেণী, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও রাষ্ট্রের
আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে সংঘর্ষে হয়। মূলত সংঘর্ষ হয় মূল্যবোধ, বিশ্বাস, স্বার্থ ও দৃষ্টিভঙ্গির
সাথে সম্পর্কিত। মানব ও রাষ্ট্রের মিথষ্ক্রিয়ার প্রতিটি স্তরেই এটি বিদ্যমান আছে।
সমাজের সার্বজনীন অবস্থা হলো সকলের উপর উঠার জন্য পারিপার্শ্বিক সকলকেই মনস্তাত্ত্বিক
সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সারসংক্ষেপ বলতে বুঝায because conflict is about values, beliefs,
interests and perceptions, it occures at every level of human and state
interaction.
ভূমিকা
(Introduction )
সমাজ ও
পরিবার গঠনে ইসলামের সঠিক নির্দেশনা আছে। একজন
সত্যিকারের মুমিনের কাজ হচ্ছে পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে ন্যায় ও শান্তিপূর্ণভাবে
বসবাস করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
أَيُّهَا
الَّذِينَ آَمَنُوا لَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَرِثُوا النِّسَاءَ كَرْهًا وَلَا
تَعْضُلُوهُنَّ لِتَذْهَبُوا بِبَعْضِ مَا آَتَيْتُمُوهُنَّ إِلَّا أَنْ يَأْتِينَ
بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ فَإِنْ كَرِهْتُمُوهُنَّ
فَعَسَى أَنْ تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য এটা বৈধ নয় যে, তোমরা জোর করে
মহিলাদের বিয়ে করে তাদের উত্তরাধিকারী হবে। তাদের কাছ থেকে মোহরানার অংশবিশেষ আদায়ের
জন্যেও চাপ প্রয়োগ করা বৈধ নয়, যদি না তারা প্রকাশ্য ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। তাদের সঙ্গে ভালো
ব্যবহার করবে এবং তাদেরকে ভালো না লাগলেও তালাক দিও না। কারণ আল্লাহ যাতে ব্যাপক কল্যাণ
ও মঙ্গল রেখেছেন তোমরা হয়তো তাই অপছন্দ করছো।" (৪:১৯)
সকলকথাবার্তা ও কাজকর্ম সুন্দরভাবে সম্পাদন করা।
সর্বদা হাসিমুখে পরিবারের আনন্দ-বিনোদনে অংশীদার হওয়া। সক্ষমতা অনুযায়ী তাদের জন্য
যথাযথ খরচ সরবরাহ করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَحَبَّكُمْ إِلَيَّ وَأَقْرَبَكُمْ مِنِّي مَجْلِسًا يَوْمَ
الْقِيَامَةِ أَحَاسِنُكُمْ أَخْلاقًا
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশা করেন,
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ
إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا وَخِيَارُكُمْ خِيَارُكُمْ لِنِسَائِهِمْ خُلُقًا
" . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ
أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ
অর্থ :তোমাদের মধ্যে সে পরিপূর্ণ ঈমানের অধিকারী, যার চরিত্র
সবচেয়ে বেশি সুন্দর। তোমাদের মধ্যে সে সর্বোত্তম, যে তার স্ত্রীর
কাছে উত্তম। আমি আমার পরিবারের কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১১৬২)
মনস্তাত্ত্বিক
এর পরিভাষাগত মর্ম
(Psychological Terminology)
একটি পরিস্থিতি যেখানে পক্ষগুলো প্রতিযোগিতার ভবিষ্যৎ
ফলাফলের যে অসামঞ্জস্যতা সেটা সম্পর্কে সচেতন থেকেই ফলাফলটি নিজেদের পক্ষে নেওয়ার
আশা করে। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, এ পরিস্থিতিতে পক্ষগুলো তাদের
নিজ নিজ অবস্থান স্পষ্টভাবে অনুধাবন করতে পারে কিন্তু সে অনুযায়ী প্রত্যক্ষ আচরণ করে
না।আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا
اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ - وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا
وَاذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنْتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ
بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِهِ إِخْوَانًا وَكُنْتُمْ عَلَى
شَفَا حُفْرَةٍ مِنَ النَّارِ فَأَنْقَذَكُمْ مِنْهَا كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ
لَكُمْ آَيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
"হে বিশ্বাসীগণ তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর এবং তোমরা মুসলমান
না হয়ে মৃত্যুবরণ করোনা।" (৩:১০২)
"তোমরা সবাই আল্লাহর রশ্মিকে দৃঢ়ভাবে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন
হয়ো না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে এবং তিনি
তোমাদের হৃদয়ে দয়ার সঞ্চার করেন, ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই ভাই হয়ে গেলে। তোমরা অগ্নিকুণ্ডের
প্রান্তে ছিলে, আল্লাহই তোমাদেরকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের
কাছে নিজের নিদর্শন তুলে ধরেন, যেন তোমরা সুপথ পাও।" (৩:১০৩) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
عَنْ
أَبِي مَسْعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّه صلى الله عليه وسلم
يَمْسَحُ مَنَاكِبَنَا فِي الصَّلاةِ وَيَقُولُ: اسْتَوُوا وَلا تَخْتَلِفُوا؛
فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ، لِيَلِنِي مِنْكُمْ أُولُو الأَحْلامِ وَالنُّهَى،
ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِين يَلُونَهُم
Conflict
may be defined as a situation of competition in which the parties are aware of
the incompatibility of potential future positions and in which each party
wishes to occupy a position that is incompatible with the wishes of others.
الصراع
بشكل عام هو ظاهرة اجتماعية تعكس حالة من عدم الارتياح أو الضغط النفسي الناتج عن
عدم التوافق بين رغبتين أو أكثر أو تعارض ارادتين أو أكثر. أما ظاهرة الصراع على المستوى الدولي فتعكس حالة من تعارض المصالح أو
اختلاف القيم بين مجموعة بشرية وأخرى. ويعبر الصراع عن الأحوال التي بمقتضاها توجد
جماعة بشرية ما تتسم بتمايز عرقي أو ثقافي أو ديني أو حتى تمايز اقتصادي أو سياسي
- تتعارض مصالحها أو قيمها مع جماعة أخرى أو أكثر، بسبب اتباعها ما لا يتلائم مع
سلوكها أو أهدافها. الصراع
আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
وَأَطِيعُوا
اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ ۖ
وَاصْبِرُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
অর্থ : আর আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ
মান্য কর এবং তাঁর রসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা কর, তবে তোমরা কাপুরুষ
হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ
তা'আলা রয়েছেন ধৈর্য্যশীলদের সাথে। (সুরা আনফাল ৮:৪৬)
মনস্তাত্ত্বিক
শব্দের অর্থ
মনস্তাত্ত্বিক বিণ. মনস্তত্ত্ব বি. মানবমনের প্রকৃতি
ক্রিয়া ও গতিপ্রকৃতি বিষয়ক বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান ইত্যাদি। ইংরেজি
ভাষায় psychology
আরবি ভাষায় (النفسي ) বলা হয়।
حالة
انفعالية مؤلمة تنتج من النزاع بين الرغبات المتضادة وعدم إشباع الحاجات أو عدم
السماح لرغبة مكبوتة بالتعبير عن ذاتها شعوريا. وهي مجموعة من الدوافع والنزاعات
التي تتصف بالأنانية. ويستمر هذا الصراع طول حياة الفرد وإن كان يتخذ صورا مختلفة.
A
painful emotional state resulting from the conflict between opposing desires
and not satisfying needs or not allowing a suppressed desire to express itself
emotionally. It is a group of selfish
motives and conflicts. This conflict
continues throughout the life of the individual, although he takes different
images.
a
serious disagreement or argument, typically a protracted one.
আমাদের কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়েই এমন অবস্থার
মতবিরোধের সম্মুখীন হতে হয়। অনক সময় মানুষ তার স্বার্থরক্ষা খুব জরুরী হয়ে পড়ে। তখন
তার আচরণ ব্যতিক্রম হয়।
Personal
or psychological conflict refers to a situation in which a person is motivated
to engage in two or more mutually exclusive or incompatible activities. It
occurs when the overt, verbal, symbolic, or emotional responses required to
fulfill one motive are incompatible with those required to fulfill another.
ব্যক্তিগত বা মনস্তাত্ত্বিক সংঘাত বলতে এমন একটি
পরিস্থিতি নির্দেশ করে যেখানে কোনও ব্যক্তি দুটি বা আরও বেশি পারস্পরিক একচেটিয়া বা
বেমানান ক্রিয়াকলাপে জড়িত হতে অনুপ্রাণিত হয়।
এটি তখন ঘটে যখন একটি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় ওভারট, মৌখিক, প্রতীকী বা
সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলি অন্যটি পূরণের জন্য প্রয়োজনীয়গুলির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ
হয় না। এই সময় যদি কেউ নিজের নিমন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
চিহ্নিত করা হয়।
সংজ্ঞা সমূহেরবিশ্লেষণ
(Definition analysis)
সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, দ্বন্দ্ব হচ্ছে
শুধু মাত্র পার্থিব জীবনের হিংসা থেকে। নিশ্চিত না হয়ে যে কোন বিষয়ে তার নিজের জন্য
কামনা করা। কামনা বাসনা সফল হতে না পেরে বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাওয়া। অথচ
সবর করে কাজ চালিয়ে গেলে আল্লাহ তা’আলা তাকে সফলতা দান করতেন।
মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব বা একধরনের রেষারেষি বজায় থাকে। যার অধিকাংশ ক্ষেত্র নিম্ন
কারনে হতে পারে। যেমন -
ক) ব্যবসায়িক
ক্ষেত্রে প্রতিযোগিত
(Business Competition)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَيْلٌ
لِّلْمُطَفِّفِيْنَ، الَّذِيْنَ
إِذَا اكْتَالُواْ عَلَى النَّاسِ
يَسْتَوْفُوْنَ، وَإِذَا كَالُوْهُمْ
أَو وَّزَنُوْهُمْ يُخْسِرُوْنَ، أَلَا يَظُنُّ أُولَئِكَ أَنَّهُم مَّبْعُوْثُوْنَ،
لِيَوْمٍ عَظِيْمٍ، يَوْمَ يَقُوْمُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ-
‘দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়। যারা লোকদের কাছ থেকে
মেপে নেয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় নেয়। আর যখন লোকদের মেপে দেয়, তখন কম দেয়।
তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে? সেই মহা দিবসে। যেদিন মানুষ
দন্ডায়মান হবে বিশ্বপালকের সম্মুখে’وَالسَّمَاءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيْزَانَ، أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيْزَانِ، وَأَقِيْمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلاَ تُخْسِرُوا الْمِيْزَانَ- ‘তিনি আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন তুলাদন্ড
(দাঁড়িপাল্লা)। যাতে তোমরা সীমালংঘন না কর তুলাদন্ডে। তোমরা ন্যায্য ওযন কায়েম কর এবং
ওযনে কম দিও না’ (রহমান ৫৫/৭-৯)।وَأَوْفُوا
الْكَيْلَ وَالْمِيْزَانَ بِالْقِسْطِ لاَ
نُكَلِّفُ نَفْساً إِلاَّ وُسْعَهَا ‘তোমরা মাপ ও ওযন পূর্ণ
করে দাও ন্যায়নিষ্ঠার সাথে। আমরা কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কষ্ট দেই না’ (আন‘আম ৫/১৫২)।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
لاَ
يَبِعِ الرَّجُلُ عَلَى بَيْعِ أَخِيْهِ
وَلاَ يَخْطُبْ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيْهِ إِلاَّ أَنْ يَأْذَنَ لَهُ
কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপরে
ক্রয়-বিক্রয়ের কথা বলবে না এবং মুসলিম ভাইয়ের
বিবাহের প্রস্তাবের উপর নিজের প্রস্তাব দিবে না। হ্যাঁ, যদি ঐ ভাই অনুমতি প্রদান করে তবে পারবে।
খ) ভাল ফলাফলের
জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে
وَمَا
أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ ۖ فَاسْأَلُوا أَهْلَ
الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
অর্থ : আপনার পূর্বে আমি মানুষই প্রেরণ করেছি, যাদের কাছে
আমি ওহী পাঠাতাম। অতএব তোমরা যদি না জান তবে যারা স্মরণ রাখে তাদেরকে জিজ্ঞেস কর।أَهْلَ অধিকারীদের।
حديث
ابن مسعود ، عن النبي ﷺ قال: لا حسد إلا في اثنتين: رجل آتاه الله مالا فسلطه
على هلكته في الحق، ورجل آتاه الله حكمة فهو يقضي بها ويعلمها متفق عليه
আব্দুল্লাহ ইবনে মাস উদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে
বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, দুটি জিনিস
ব্যতীত হিংসা করা যায় না। যাকে আল্লাহ তা’আলা সম্পদ দান করেছেন সে তা
সৎ পথে ব্যয় করে আর যাকে ইলম দান করা হয়েছে সে সেই মোতাবেক আমল করে।
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال :
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( لا تحاسدوا ، ولا تناجشوا ، ولا تباغضوا ،
ولا تدابروا ، ولا يبع بعضكم على بيع بعض ، وكونوا عباد الله إخوانا ، المسلم أخو
المسلم ، لا يظلمه ولا يخذله ولا يحقره ، التقوى هاهنا – ويشير إلى صدره ثلاث مرات
– بحسب امرئ من الشر أن يحقر أخاه المسلم ، كل المسلم على المسلم حرام : دمه وماله
وعرضه ) رواه مسلم
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা অন্যের প্রতি মন্দ ধারণা পোষণ করা থেকে বেঁচে থাকবে, কেননা এরূপ ধারণা জঘন্যতম মিথ্যা। আর কারও দোষ অনুসন্ধান করবে না, কারও গোপনীয় বিষয় অন্বেষণ করবে না, একে অন্যকে ধোঁকা দেবে না, পরস্পর হিংসা করবে না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করবে না, পরস্পর বিরুদ্ধাচরণ করবে না, বরং তোমরা সবাই এক আল্লাহর বান্দা হিসেবে পরস্পর ভাই ভাই হয়ে থাকবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
গ) সম্পদ অর্জনের
সংঘর্ষ
(Conflict over acquisition of wealth)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা
করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোনো বান্দা
হারাম পদ্ধতিতে উপার্জিত অর্থ দান খয়রাত করলে তা কবুল হবে না এবং তা নিজ কাজে ব্যয়
করলে বরকত হবে না। আর ঐ ধন তার উত্তরাধিকারীদের জন্য রেখে গেলে তা তার দোজখের পুঁজি
হবে।’ (মিশকাত)
قَدْ
أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ
১) নিশ্চিতভাবে সফলকাম হয়েছে মু’মিনরা
الَّذِينَ
هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ
২) যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র;
وَالَّذِينَ
هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ
৩) যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,
وَالَّذِينَ
هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ
৪) যারা দান কাজে সক্রিয় ;
وَالَّذِينَ
هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ
৫) নিজেদের লজ্জা-স্থানের হেফাজত করে,
إِلَّا
عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ
مَلُومِينَ
৬)নিজেদের স্ত্রীদের ও অধিকারভুক্ত বাঁদিদের ছাড়া, এদের কাছে
(হেফাজত না করলে) তারা তিরস্কৃত হবে না,
فَمَنِ
ابْتَغَى وَرَاء ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ
৭) কিন্তু যারা এই সীমাকে অতিক্রম করতে ইচ্ছা করে, তারা সীমালংঘনকারী
وَالَّذِينَ
هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ
৮) এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুশিয়ার
থাকে।
وَالَّذِينَ
هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ
৯) এবং নিজেদের নামায গুলো রক্ষণাবেক্ষণ করে,
أُوْلَئِكَ
هُمُ الْوَارِثُونَ
১০)তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে।
ঘ) সম্মান অর্জনের
সংঘর্ষ
আল্লাহ মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন তার মর্যাদা
ও অধিকার রক্ষার মাধ্যমে। শুধু জীবনকালে নয়; বরং মৃত্যুর পর তাকে মর্যাদার
অধিকারী করেছেন। ইসলামী আইনজ্ঞরা ইসলামী শরিয়তের যে মৌলিক পাঁচটি উদ্দেশ্য নির্ণয় করেছেন, তার চারটিই
মানুষের পার্থিব অধিকার, সম্মান ও মর্যাদা সংশ্লিষ্ট এবং সাধারণভাবে সব মানুষের জন্য
প্রযোজ্য। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
, يَحْزُنكَ
قَوْلُهُمْ إِنَّ الْعِزَّةَ لِلّهِ جَمِيعًا هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
আর তাদের কথায় দুঃখ নিয়ো না। আসলে সমস্ত ক্ষমতা
আল্লাহর। তিনিই শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ। [ সুরা ইউনুস ১০:৬৫ ]
قُلِ
اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ
الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ بِيَدِكَ
الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ (26) تُولِجُ اللَّيْلَ فِي
النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ
الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَتَرْزُقُ مَنْ تَشَاءُ بِغَيْرِ
حِسَابٍ
"বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা
রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর
আর যাকে ইচ্ছা অপমানিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে
ক্ষমতাশীল।" (৩:২৬)
"তুমি রাতকে দিনে এবং দিনকে রাতে পরিবর্তন কর আর তুমিই মৃত হতে
জীবন্তের আবির্ভাব ঘটাও। তুমি যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবনোপকরণ দান কর।" (৩:২৭)
وعن
أبي هريرة قَالَ:
قَالَ رسولُ اللَّهِ ﷺ: قَالَ اللَّه عزَّ وجلَّ: العِزُّ إِزاري، والكِبْرياءُ
رِدَائِي، فَمَنْ يُنَازعُني في واحدٍ منهُما فقَدْ عذَّبتُه رواه مسلم.
সূনাম অর্জনের
সংঘর্ষ
(The clash of reputations)
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تُبْطِلُواْ صَدَقَاتِكُم بِالْمَنِّ وَالأذَى
كَالَّذِي يُنفِقُ مَالَهُ رِئَاء النَّاسِ وَلاَ يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ
الآخِرِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَيْهِ تُرَابٌ فَأَصَابَهُ وَابِلٌ
فَتَرَكَهُ صَلْدًا لاَّ يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِّمَّا كَسَبُواْ وَاللّهُ لاَ
يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
হে ঈমানদারগণ!ত তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে
এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ
লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। অতএব, এ ব্যাক্তির
দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি পড়েছিল। অতঃপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি
বর্ষিত হলো, অনন্তর তাকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তারা ঐ বস্তুর কোন সওয়াব
পায় না, যা তারা উপার্জন করেছে। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন
করেন না। [ সুরা বাকারা ২:২৬৪ ]
إِنَّ
الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ
اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ (161) خَالِدِينَ فِيهَا لَا
يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنْظَرُونَ
আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, "যারা কাফের
হয়েছে এবং কাফের অবস্থায় মারা গেছে তাদের ওপর আল্লাহর, ফেরেশতাদের
এবং সমগ্র মানব জাতির অভিশাপ।" (২:১৬১)
"এরা চিরকাল অভিশপ্ত অবস্থার মধ্যেই থাকবে। তাদের শাস্তি কমানো হবে না এবং তাদের কোন অবকাশ দেয়া হবে না।" (২:১৬১-১৬২)
মনস্তাত্ত্বিক
দ্বন্দ্বের কুফল
(The evils of psychological conflict)
উদ্বেগ বা ভয় যা স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত
করে (Anxiety
or fear that disrupts normal activities)
উদ্বেগ
যখন প্রতিদিনের সঙ্গী হয়ে পড়ে তখন তা রূপ নেয় মানসিক সমস্যায়। কিন্তু এই অ্যাংজাইটি
বা উদ্বেগ আসলে কি? আসুন জেনে নেই মনের এই জটিল অনুভূতি সম্পর্কে।আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ
مَعَ الصَّابِرِينَ
"হে বিশ্বাসীগণ! ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে তোমরা আল্লাহর সাহায্য
প্রার্থনা কর। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গী।" (২:১৫৩)
অন্যান্য আবেগপূর্ণ (আবেগ / মেজাজ) প্রসেসগুলিও
ব্যাধি হিসেবে মনে করা যেতে পারে ।
مَآ
أَصَابَ مِنْ مُّصِيْبَةٍ فِى الأَرْضِ وَلاَ فِىْ أَنْفُسِكُمْ اِلاَّ فِىْ كِتَابٍ مِّنْ قَبْلِ أَنْ نَبْرَأَهَا ج اِنَّ
ذلِكَ عَلَى اللهِ يَسِيْرٌ ০ لِّكَيْلاَ تَأْسَوْا عَلى مَا فَاتَكُمْ وَلاَ
تَفْرَحُوْا بِمَآ اتكُمْ ط وَاللهُ لاَيُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُوْرٍ ০
‘পৃথিবীতে এবং
তোমাদের ব্যক্তি সত্তার উপর যেসব বিপদ-মুছীবাত আপতিত হয় তার একটিও এমন নয় যে, তা সংঘটিত হওয়ার
পূর্বে আমি একটি কিতাবে লিপিবদ্ধ করে রাখিনি। অবশ্যই এমনটি করা আল্লাহর জন্য একেবারেই
সহজ।
(এসব এজন্য) যাতে কোন কিছু হারালেই তোমরা ভেঙ্গে
না পড় এবং তিনি তোমাদেরকে বড় কিছু দিলে তোমরা উল্লাসে ফেটে না পড়। আল্লাহ উদ্ধত-অহংকারীদেরকে
পছন্দ করেন না।’
স্বাভাবিক ঘুমের
ব্যাঘাত হওয়া,
(Disruption of normal sleep)
মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের কারনে তার ঘুম ব্যাঘাত
ঘটে। এতে করে সে নিরবে রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
وَهُوَ
الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِبَاسًا
وَالنَّوْمَ سُبَاتًا وَجَعَلَ النَّهَارَ نُشُورًا
অর্থ :তিনিই
তো তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে বিশ্রাম এবং দিনকে
করেছেন বাইরে গমনের জন্যে। [ সুরা ফুরকান ২৫:৪৭ ]আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
اللَّهُ
يَتَوَفَّى الْأَنفُسَ حِينَ مَوْتِهَا وَالَّتِي لَمْ تَمُتْ فِي مَنَامِهَا
فَيُمْسِكُ الَّتِي قَضَى عَلَيْهَا الْمَوْتَ وَيُرْسِلُ الْأُخْرَى إِلَى أَجَلٍ
مُسَمًّى إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ : لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
আল্লাহ মানুষের প্রাণ হরণ করেন তার মৃত্যুর সময়, আর যে মরে না, তার নিদ্রাকালে।
অতঃপর যার মৃত্যু অবধারিত করেন, তার প্রাণ ছাড়েন না এবং অন্যান্যদের ছেড়ে দেন এক নির্দিষ্ট
সময়ের জন্যে। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
وَجَعَلْنَا
اللَّيْلَ لِبَاسًا
রাত্রিকে করেছি আবরণ।
وَجَعَلْنَا
النَّهَارَ مَعَاشًا
দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়,
খাওয়ার গ্রহণ করার জন্য ব্যাধি
(Eating
Disorders )
মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের কারণে সে অপরিমিত খাবার
খেয়ে ফেলে। অন্যদিকে সে খাবার ত্যাগ করে ফলে তার শরীরে বিডিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধে।
আস্তে আস্তে সে ধ্বংসের দিকে ঝুঁকে পড়ে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
وَهُوَ
الَّذِي أَنشَأَ جَنَّاتٍ مَّعْرُوشَاتٍ وَغَيْرَ مَعْرُوشَاتٍ وَالنَّخْلَ
وَالزَّرْعَ مُخْتَلِفًا أُكُلُهُ وَالزَّيْتُونَ وَالرُّمَّانَ مُتَشَابِهًا
وَغَيْرَ مُتَشَابِهٍ كُلُوا مِن ثَمَرِهِ إِذَا أَثْمَرَ وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ
حَصَادِهِ وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ
তিনিই উদ্যান সমূহ সৃষ্টি করেছে-তাও, যা মাচার উপর
তুলে দেয়া হয়, এবং যা মাচার উপর তোলা হয় না এবং খর্জুর বৃক্ষ ও শস্যক্ষেত্র
যেসবের স্বাদ বিশিষ্ট এবং যয়তুন ও আনার সৃষ্টি করেছেন-একে অন্যের সাদৃশ্যশীল এবং সাদৃশ্যহীন।
এগুলোর ফল খাও, যখন ফলন্ত হয় এবং হক দান কর কর্তনের সময়ে এবং অপব্যয় করো না।
নিশ্চয় তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
حديث
أبي هريرة – رضي الله عنه - : «ما عاب رسول الله – صلى الله عليه وسلم – طعاماً
قط، إن اشتهاه أكل، وإن كرهه ترك» (رواه أبو داود ) .
never
faulted food, if he desires to eat, and if he hates it, he will leave”
(Narrated by Abu Dawud).
لَّيْسَ
عَلَيْكَ هُدَاهُمْ وَلَـكِنَّ اللّهَ يَهْدِي مَن يَشَاء وَمَا تُنفِقُواْ مِنْ
خَيْرٍ فَلأنفُسِكُمْ وَمَا تُنفِقُونَ إِلاَّ ابْتِغَاء وَجْهِ اللّهِ وَمَا
تُنفِقُواْ مِنْ خَيْرٍ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لاَ تُظْلَمُونَ
তাদেরকে সৎপথে আনার দায় তোমার নয়। বরং আল্লাহ
যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। যে মাল তোমরা ব্যয় কর, তা নিজ উপাকারার্থেই
কর। আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় করো না। তোমরা যে, অর্থ ব্যয়
করবে, তার পুরস্কার পুরোপুরি পেয়ে যাবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায়
করা হবে না। [ সুরা বাকারা ২:২৭২ ]
আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত
হ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোন এলাকার
লোক এমতাবস্থায় ভোরে জাগলো যে, তাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি অনাহারে ছিল, তবে তাদের ওপর
হতে আল্লাহ তার জিম্মা প্রত্যাহার করে নেন।
জুয়া খেলায়
আসক্তিকে একটি ব্যাধি
(Gambling addiction is a disorder)
যখন কোন ব্যক্তি মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের কারণে
নিজেকে অপদার্থ মনে করে তখন তার মধ্যে বদ অভ্যাস প্রবেশ করে। জুয়া খেলা তার মধ্যে
অন্যতম। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِنَّمَا
الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالأَنصَابُ وَالأَزْلاَمُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ
الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং
ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে
বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। [ সুরা মায়েদা ৫:৯০ ]
إِنَّمَا
يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاء فِي
الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللّهِ وَعَنِ الصَّلاَةِ
فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার
মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ
ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে? [ সুরা মায়েদা
৫:৯১ ]
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা মদ, জুয়া ও বাদ্যযন্ত্র
হারাম করেছেন।’ (বায়হাকি, হাদিস: ৪৫০৩; মিশকাত, হাদিস: ৪৩০৪)
এ ছাড়া মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের কুফল হিসেবে নিম্নে আলোচিত সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে।
ইসলাম এর কোনটাই সমর্থন করে না।
১। নেশা করা;
২। অপরকে অপমান করা;
৩। মাদকাসক্তি হয়ে যাওয়া;
৪। কিছুতেই উৎসাহ না থাকা;
৫। কোনো কিছু উপভোগ করতে না পারা;
৬। ছোটোখাটো ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে না পারা;
৭। অসম্ভব বেশি ক্লান্ত লাগা ;
৯। ক্ষুধা না হওয়া এবং ওজন কমা (কিছু ক্ষেত্রে ঠিক
উল্টোটা হয়, ক্ষিদে আর ওজন দুটোই বাড়ে);
১০। ঘুম না আসা আর সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া;
১১। আত্মবিশ্বাসের অভাব;
১২। নিজেকে অপদার্থ, অক্ষম ভাবা;
১৩। অন্যের সঙ্গ বর্জন করা;
১৪। খিটখিটে হয়ে যাওয়া;
১৫। নিজের সম্বন্ধে, বর্তমান পরিস্থিতি
নিয়ে এবং
১৬। পৃথিবী সম্পর্কেই সামগ্রিক হতাশা।
লেখক:
প্রফেসর ড.
সৈয়দ মাকসুদুর রহমান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
কুষ্টিয়া
বাংলাদেশ।
0 coment rios:
You can comment here