Thursday, June 11, 2020

আত্মসমালোচনা উত্তম চরিত্রের সোপান : ইসলামী দৃষ্টিকোণ


।। প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান।।

ভূমিকা
আত্মসমালোচনা একটি উত্তম ও উন্নত চরিত্রের সোপান। আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি মানুষ সর্বদা নিজেকে নিস্কলুষ বা উত্তম মনে করে। অপরের দোষ ত্রুটি তার নিকট প্রতিয়মান হয়। নিজের ক্ষেত্রে সে এ বিষয়ে চিন্তা করে না। এ জন্য আত্মসমালোচনা না করে অন্যের সমালোচনা ব্যস্ত থাকে। এ ধরনের আচরণ জঘন্যতম অপরাধ। এ থেকে উত্তোলনের উপায় হলো আত্মসমালোচনা করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
أَيَحْسَبُ الْإِنسَانُ أَن يُتْرَكَ سُدًى
অর্থ :মানুষ কি মনে করে যে, তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে?
ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا حِسَابَهُم﴾
অর্থ :তারপর এদের হিসেব নেয়া হবে আমারই দায়িত্ব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
 قال النبي -صلى الله عليه وسلم-:إن الله -تبارك وتعالى- إذا كان يوم القيامة ينزل إلى العباد ليقضي بينهم وكل أمة جاثية  حديث صحيح [
হাসান আল বাসরী রহিমাহুল্লাহ তাআল বলেছেন,
 قال الحسن البصري: "لا تلقى المؤمن إلا يحاسب نفسه، ماذا أردتِ تعملين؟ وماذا أردتِ تأكلين؟ وماذا أردتِ تشربين؟ وإن الفاجر يمضي قدمًا ما يعاتب نفسه"
অর্থ : "মুমিন নিজেকে জবাবদিহি করা ছাড়া কিছুই পায় না, আপনি কী করতে চান? আপনি কী খেতে চান? এবং আপনি কী পান করতে চান? এবং অধার্মিক নিজেকে দোষ দিয়ে এগিয়ে চলেছে। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তোমাদের নিজেদের হিসাব নিজেরা কর কেউ হিসাব গ্রহণ করার পূর্বে।
قَالَ عمر بن الخطاب رضي اللهُ عنه: "حَاسِبُو ا أَنفُسَكُم قَبلَ أَن تُحَاسَبُوا، وَزِنُوا أَنفُسَكُم قَبلَ أَن تُوزَنُوا، فَإِنَّهُ أَهوَنُ عَلَيكُم فِي الحِسَابِ غَدًا، أَن تُحَاسِبُوا أَنفُسَكُمُ اليَومَ، وَتَزَيَّنُوا لِلعَرضِ الأَكبَرِ، يَومَئِذٍ تُعرَضُونَ لَا تَخفَى مِنكُم خَافِيَةٌ
এ সকল গুণাবলী আয়ত্ব করতে পারলে একজন ব্যক্তি উন্নত চরিত্রের অধিকারী হবেন। আল্লাহ তাআলার নিকট উত্তম প্রতিদান পাবেন।
আলোচ্য প্রবন্ধে আত্মসমালোচনা মুমিনের জীবনে কেন জরুরি সে সকল দিক আলোচনা করা হয়েছে।
আত্মসমালোচনা এর পরিচয়
এই শব্দটি আরবি ভাষায় النقد الذاتي বা محاسبة النفس বলা হয়।আর আরবীতে বলা হয়-  নিজের আত্মার হিসাব নিজেগ্রহণ করা।
 ﻭﻫﻮ ﻣﺄﺧﻮﺫ ﻣﻦ  ‏( ﺡ ﺱﺏ ‏) ﺍﻟّﺘﻲ ﺗﺪﻝّﻋﻠﻰ ﺍﻟﻌﺪّ، ﺗﻘﻮﻝ : ﺣﺴﺒﺖ ﺍﻟﺸّﻲ ﺀ ﺃﺣﺴﺒﻪ ﺣﺴﺒﺎﻭﺣﺴﺒﺎﻧﺎ، ﻭﺣﺴﺎﺑﺎ ﻭﺣﺴﺎﺑﺔ ﺇﺫﺍﻋﺪﺩﺗﻪ، *
সারসংক্ষেপ হলো আত্মার হিসাব গ্রহণ করা। ইংরেজীতে একে বলাহয়, self-criticism বা Self-criticism বা আত্মসমীক্ষা।
 আত্মসমালোচনা বলতে বুঝায়, কোন কাজ করা বা ছাড়ার পূর্বে এমনভাবে সচেতন থাকা, বা গভীরভাবে চিন্তা করা যেন আমি কী করতে যাচ্ছি বা কী ত্যাগ করছি তা স্পষ্ট থাকা। যদি তা দেখা যায় যে, আল্লাহ  তাআলার শুধু মাত্র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য, তবে তা নিষ্ঠার সাথে পালনকরা। আর যদি তা হয় আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক তবে তা থেকে সর্বতোভাবে বিরত থাকা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ  অর্থ : আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ইবাদাত করে তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে, সালাত কায়েম করে এবংসাথে সাথে নিজেকে সর্বদা আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক কাজ তথা ফরয ও নফল, আল্লাহ তায়ালা বলেন-
-يَوْمَ تَجِدُ كُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ مِنْ خَيْرٍ مُّحْضَرًا وَمَا عَمِلَتْ مِن سُوَءٍ تَوَدُّ لَوْ أَنَّ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُ أَمَدًا بَعِيدًا} [آل عمران:30
অর্থ :কিয়ামতের দিন প্রত্যেকেই তার ভাল ও মন্দ কাজ দেখতে পাবে। সেদিন তারা বলবে হায়! যদি আমাদের ও আমাদের খারাপ কাজের মধ্যে সুদূর ব্যবধান থাকতো! আল্লাহ তাঁর নির্দেশ অমান্য করার ব্যাপারে তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছেন। আল্লাহ পাক তার বান্দাদের প্রতি দয়ালু।" (৩:৩০)

আরবি ভাষায়-
يعرف النقد الذاتي بأنّه التفكير بتمعُّن في الصفات الفرديّة، من أفكار ومعتقدات وسلوكيات بهدف تحديد النقاط السلبية في جوانب الشخصيّة، ويُمكن أن تُناقش هذه النقاط مع مجموعة من الأشخاص أو أن يكتفي الفرد بنقد ذاته بنفسه حتى يُحسّن ما في شخصيته من سلبيّات، وللنقد الذاتي أهميّة كبيرة في إصلاح الفرد وبالتالي إصلاح المجتمع.

ইংরেজি ভাষায়-
Self-criticism involves how an individual evaluates oneself.  Self-criticism in psychology is typically studied and discussed as a negative personality trait in which a person has a disrupted self-identity
এখানে একটি দর্শন পেশ করা হয়। যেমন - নিজের একটা দোষকে গোপন করার জন্য  হাজার হাজার যুক্তি খুঁজি নিজের মধ্যে বিশ্লেষণ করি। আমরা চিৎকার করে কথা বলা  ভদ্রতা নয় এটা ভালোভাবে অবগত আছি ”, অথচ সেইটা জানাতেই চিৎকার করি । আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ
অর্থ : মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না।
আদর্শ শ্রোতা হওয়া
আদর্শ শ্রোতা হওয়া এটা খুবই দরকার কারণ, ভদ্রতার মধ্যে পড়ে। অন্যের কথা শেষ হওয়ার অথচ অন্যের কথা শেষ করতে না দিয়ে আমরা বলতে থাকি দাঁড়ান, দাঁড়ান, আমার কথাটা আগে শুনুন। তবে যিনি বক্তব্য দিচ্ছেন তাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে কারোর হক নষ্ট করছেন কি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমএর ইরশাদ করেন-
 وقول النبي صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ رِضْوَانِ اللَّهِ لاَ يُلْقِي لَهَا بَالاً، يَرْفَعُ اللَّهُ بِهَا دَرَجَاتٍ، وَإِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللَّهِ لاَ يُلْقِي لَهَا بَالاً يَهْوِي بِهَا فِي جَهَنَّمَ» رواه البخاري. وقد يتكلَّم بكلمة تُوبق دنياه وآخرته؛ لقوله صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مَا يَتَبَيَّنُ مَا فِيهَا؛ يَهْوِي بِهَا فِي النَّارِ
ইবনু মাসুদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন
وقول ابن مسعود - رضي الله عنه -: (مَا أَنْتَ بِمُحَدِّثٍ قَوْمًا حَدِيثًا لاَ تَبْلُغُهُ عُقُولُهُمْ؛ إِلاَّ كَانَ لِبَعْضِهِمْ فِتْنَةً
নিজের দোষ ত্রুটিগুলো ততোটা প্রকট হয়ে উঠে না নিজের কাছে। কারণ, নিজের নেতিবাচক দিকটাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখি কিন্তু অন্যের ক্ষেত্রে চুলচেরা বিশ্লেষণে ব্যাপৃত হই।

আখেরাতের হিসাব
আল্লাহ তায়ালা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি নির্দেশ আছে তা অবগত হতে হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
اِقۡتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُہُمۡ وَ ہُمۡ فِیۡ غَفۡلَۃٍ مُّعۡرِضُوۡنَ ۚ
অর্থ :মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে। (সুরা আন আন্বিযা আয়াত: ১)
إِنَّ إِلَيْنَا إِيَابَهُمْ - ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا حِسَابَهُمْ.
অর্থ :সন্দেহ নেই তাদেরকে আমাদের কাছেই ফিরে আসতে হবে। অতঃপর আমাকে তাদের হিসাব নিতে হবে। (আল গাশিয়াহ, আয়াত: ২৫)
إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ.
অর্থ :নিশ্চিত জেনো, আল্লাহ অতি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। (আলে ইমরান: ১৯৯)
وَإِنَّهُ لَذِكْرٌ لَكَ وَلِقَوْمِكَ وَسَوْفَ تُسْأَلُونَ.
অর্থ :অবশ্যই এই কিতাব আপনার জন্যে এবং আপনার কাওমের জন্যে একটি স্মারক, আর আপনারা সবাই অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হবেন। (আয যুখরুফ, আয়াত: ৪৪)
فَلَنَسْأَلَنَّ الَّذِينَ أُرْسِلَ إِلَيْهِمْ وَلَنَسْأَلَنَّ الْمُرْسَلِينَ.
অর্থ :যাদের প্রতি রাসূল পাঠানো হয়েছিল আমি তাদের অবশ্য অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করে ছাড়ব। আর ঐ সব নবী-রাসূলগণকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। (আল আরাফ, আয়াত: ৬)
وَلَتُسْأَلُنَّ عَمَّا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ
অর্থ :তোমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে তোমাদেরকে অবশ্য অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (আন নাহল: ৯৩)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
كلكم راع و كلكم مسئول عن رعيته فالأمير الذي على الناس راع و هو مسئول عنهم و الرجل راع إلى أهل بيته و هو مسئول عنهم و امرأة الرجل راعيته على بيت بعلها و ولده و هي مسئولة عنهم و দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হবে। দেশের শাসক একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাকে তার দেশবাসীর প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পুরুষ সংসারের দায়িত্বশীল, এই দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে জবাবদিহী করতে হবে। স্ত্রী স্বামীর সংসারে সন্তানাদি দেখাশুনার জন্যে দায়িত্বশীলা- তাকে তার ঐ দায়িত্বের জন্যে জবাবদিহি করতে হবে। জেনে রাখ, তোমরা সবাই যার যার জায়গায় দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই এইজন্যে জবাবদিহি করতে হবে। (বুখারি ও মুসলিম)

মুলত যে ব্যক্তি আত্মসমালোচনা করতে পারে না অথবা যে বা যারা ব্যক্তিগতভাবে  আত্মসমালোচনা করে অভ্যস্ত নয় সে বা তারা অন্য ভাইয়ের ভুল সংশোধনের উদ্দেশ্যে বা সামষ্টিক বা কোন ব্যক্তির সমালোচনা করার সুযোগ নেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ
মুমিনগণ! তোমরা যা কর না, তা কেন বল?
كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ أَن تَقُولُوا مَا لَا تَفْعَلُونَ
তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।

এ ছাড়া তার ভূমিকা পালন করার সুযোগ নেই। এই পর্যায়ের আত্মসমালোচনা  ব্যক্তি নিজের ভুল ত্রুটিকে বড় করে দেখতে অভ্যস্ত হয় এবং অপরের ভুল ত্রুটিকে সে তুলনায় অনেক নগন্য মনে করে।

পক্ষান্তরে নিজের ভাল কাজগুলোর পরিবর্তে অপরে ভাল কাজগুলোকে বড় করে দেখার মন মানসিকতার অধিকারী হয়। এভাবে অন্যে হেয় প্রতিপন্ন করার বা ছোট করে দেখার মানসিক ব্যধি থেকে সে মুক্ত হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ,
 أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِّن قَوْمٍ عَسَى أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاء مِّن نِّسَاء عَسَى أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الاِسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

অর্থ: মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
অর্থ: মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভাইয়ের মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।
উপসংহার:
উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারছি যে আত্মসমালোচনা মহৎ গুণাবলী। এ গুণাবলী অর্জন করা সহজ কাজ নয়। নিজেকে আল্লাহ তাআলার সামনে তার একনিষ্ঠ বান্দা হিসেবে যারা উপস্থাপন করতে পারে না তাদের জন্য এ আমল করা সম্ভব নয়। আমরা যদি আল্লাহকে ভয় করি তাহলে এ আমল করতে পারব। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
অর্থ: মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর। প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত, আগামীকালের জন্যে সে কি প্রেরণ করে, তা চিন্তা করা। আল্লাহ তাআলাকে ভয় করতে থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তাআলা সে সম্পর্কে খবর রাখেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফীক দান করুন, আমীন ।

লেখক:
প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
-কুষ্টিয়া


শেয়ার করুন

Author:

0 coment rios:

You can comment here