Wednesday, June 3, 2020

হালাল উপার্জন ও ব্যয় নির্বাহ : ইসলামী দৃষ্টিকোণ


।। প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান।।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া বাংলাদেশ

ভূমিকা:
মুমিনের সম্পদ সৎভাবে অর্জন করা অত্যন্ত জরুরি। আর এ অর্জিত সম্পদ তার নিজের পরিবার ও সমাজ উন্নয়ন ব্যয় করা উচিত। কোন অর্জন শুধু নিজের জন্য হতে পারে না। কারণ নিজের জন্য অর্জন করা সম্পদ এমন হতে পারে সে কিছুতেই ভোগ করতে পারল না। আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না একজন মানুষের জন্য কতটা সম্পদ প্রয়োজন। সবাইকেই একটু চিন্তা করা দরকার সারা জীবন কষ্ট করে অর্জন করা সম্পদ মুহুর্তে শেষ হয়ে যেতে পারে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
 وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ
অর্থ : এবং তাদের ধন-সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক ছিল। হাদীসে এসেছে হারামভাবে অর্জিত সম্পদ দ্বারা দান করা যাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
 عن ابْنِ عُمَرَ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ: "لاَ يَقْبَلُ الله صَلاَةً بِغَيْرِ طُهُورٍ وَلاَ صَدَقَةً مِنْ غُلُولٍ" رواه مسلم.
وعن أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ رَسُولُ اللّهِ صلى الله عليه وسلم: "لاَ تُقْبَلُ صَلاَةُ أَحَدِكُمْ، إِذَا أَحْدَثَ حَتَّى يَتَوَضَّأَ".
আলোচ্য প্রবন্ধে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

সম্পদ অর্জন :
যখন তার উপযোগীতাকে কার্যকর করে মানুষের অভাব মোচন করে বা চাহিদা পূরণ করে, তখন তাকে সম্পদ বলে। আরবি ভাষায় সম্পদ সম্পর্কে বলা হয়েছে,
 الثروة بأنّها وفرة في الموارد القيّمة أو المواد والممتلكات ذات القيمة أيضاً، ويُعرف الفرد أو المجتمع أو المنطقة أو البلد التي تمتلك وفرة من هذه الممتلكات أو الموارد للصالح العام بالأثرياء، لكن تميّز المصطلحات الاقتصاديّة بين الثروة والدخل، فالثروة أو المدخّرات هي متغيّر المخزون
মানুষের মৌলিক চাহিদা যেমন - পোষাক খাবার, চলাফেরা ও একটি বাসস্থান মানুষের অতিব জরুরি। এ ছাড়াও যা যতটুকু দরকার করতে হবে। আর যদি সৎভাবে সম্পদ অর্জন করা তার ব্যয় ও সৎ কাজ হতে হবে।আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অর্থ : অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِن رِّزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
অর্থ :তিনি তোমাদের জন্যে পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা তার কাঁধে বিচরণ কর এবং তাঁর দেয়া রিযিক আহার কর। তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন হবে। আমাদের অর্জন করা সম্পদ যাদের জন্য ব্যয় হয় তাদের মধ্যে পরিবার একটি মাধ্যম। এখানে পরিবার কি জানা উচিত। যেমন-পরিবার হলো মা, বাবা, ভাই, বোন, চাচা, চাচী, দাদা, দাদী ও আত্নীয়-স্বজনকে নিয়ে একসাথে বসবাস করা। একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসা। সাহায্য সহযোগীতা করা। ইংরেজি ভাষায় এভাবে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে -
-Family means having someone to love you unconditionally in spite of you and your shortcomings. Family is loving and supporting one another even when it's not easy to do Definition of family. (Entry 1 of 2) 1a : the basic unit in society traditionally consisting of two parents rearing their children also : any of various social units differing from but regarded as equivalent to the traditional family a single-parent  family. b : spouse and children want to spend more time with my family.
وَيَصْنَعُ الْفُلْكَ وَكُلَّمَا مَرَّ عَلَيْهِ مَلَأٌ مِنْ قَوْمِهِ سَخِرُوا مِنْهُ ۚ قَالَ إِنْ تَسْخَرُوا مِنَّا فَإِنَّا نَسْخَرُ مِنْكُمْ كَمَا تَسْخَرُونَ

অর্থ :আয়াত-৩৮ অর্থ : তিনি নৌকা তৈরী করতে লাগলেন, আর তাঁর কওমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা যখন পার্শ্ব দিয়ে যেত, তখন তাঁকে বিদ্রুপ করত। তিনি বললেন, তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে তোমরা যেমন উপহাস করছ আমরাও তদ্রুপ তোমাদের উপহাস করছি।
وَلَقَدْ آَتَيْنَا دَاوُودَ مِنَّا فَضْلًا يَا جِبَالُ أَوِّبِي مَعَهُ وَالطَّيْرَ  وَأَلَنَّا لَهُ الْحَدِيدَ - أَنِ اعْمَلْ سَابِغَاتٍ وَقَدِّرْ فِي السَّرْدِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
এবং আমি দাউদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম। (এবং বলেছিলাম:) হে পর্বতমালা, হে পক্ষী সকল, তোমরা (আমার পবিত্রতা ঘোষণায়) দাউদের সহযোগী হয়ে যাও। আমি তাঁর জন্য লৌহকে নরম করেছিলাম।(৩৪:১০)
حديث أبي هريرة عن النبي ﷺ قال: كان داود لا يأكل إلا من عمل يده، رواه البخاري
روى أبو هريرة - رضي الله عنه - أن رسول الله- صلى الله عليه وسلم - قال: ((دِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ فِي رَقَبَةٍ وَدِينَارٌ تَصَدَّقْتَ بِهِ عَلَى مِسْكِينٍ وَدِينَارٌ أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ أَعْظَمُهَا أَجْرًا الَّذِي أَنْفَقْتَهُ عَلَى أَهْلِكَ)) مسلم. قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -: ((وَلَسْتَ تُنْفِقُ نَفَقَةً تَبْتَغِى بِهَا وَجْهَ اللَّهِ إِلاَّ أُجِرْتَ بِهَا حَتَّى اللُّقْمَةُ تَجْعَلُهَا فِي فِيّ امْرَأَتِكَ)) متفق عليه واللفظ لمسلم.
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তুমি একটি দিনার আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছ, একটি দিনার ক্রীতদাস মুক্তিতে ব্যয় করেছ, একটি দিনার মিসকিনকে দান করেছ এবং একটি দিনার পরিবারের লোকদের জন্য ব্যয় করেছ। এ খরচ করা দিনারগুলোর মধ্যে নিজ পরিবারের লোকদের জন্য খরচ করা দিনারের মূল্য- প্রতিদান লাভের দিক থেকে সর্বোত্তম। (মুসলিম)
ما أَكَل أحدٌ طعامًا قطُّ خيرًا مِن أن يأكُل مِن عَمَلِ يَدِه، وإنَّ نبيَّ اللهِ داودَ عليه السلام كان يأكُل مِن عَمَلِ يَدِه؛ رواه البخاري
পরিবার পিতা মাতা ও তাদের সন্তান-সন্ততিদের কেন্দ্র করে হতে পারে, দ্বিতীয়ত একসঙ্গে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজন সমবায়ে একটি প্রসারিত পরিবারও হতে পারে। তৃতীয় ধরনের পরিবার হলো একটি বৃহৎ সংসার, যেখানে অন্যান্য আত্মীয় ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কিংবা তাদের ছাড়া অনাত্মীয়রাও যুক্ত হয়। পরিবার প্রায়শ সন্তানসহ বা সন্তানবিহীন এক বা একাধিক দম্পতির ছোট সংসার নিয়ে গঠিত। এর আর্থিক ভিত্তি রয়েছে। এই ভিত্তিকে কেন্দ্র করে আত্মীয়, সামাজিক সম্পর্ক ও প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
وعن ثوبان - رضي الله عنه - قال: قال رسول الله - صلى الله عليه وسلم -(( أَفْضَلُ دِينَارٍ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ دِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى عِيَالِهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى دَابَّتِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى أَصْحَابِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ)) مسلم.
তুমি একটি দিনার আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছ, একটি দিনার ক্রীতদাস মুক্তিতে ব্যয় করেছ, একটি দিনার মিসকিনকে দান করেছ এবং একটি দিনার পরিবারের লোকদের জন্য ব্যয় করেছ। এ খরচ করা দিনারগুলোর মধ্যে নিজ পরিবারের লোকদের জন্য খরচ করা দিনারের মূল্য- প্রতিদান লাভের দিক থেকে সর্বোত্তম। (মুসলিম) আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। [ সুরা হুজুরাত ৪৯:১৩ ]

বিশ্বের পরিবারও রক্তসম্পর্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। বিশ্বের যেকোন পরিবারের অধিকাংশই স্বামী-স্ত্রী ও তাদের অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের নিয়ে গঠিত। স্বামী ও স্ত্রী, অথবা বিবাহিত জীবনের এই দুই অংশীদারের যে-কেউ একজন সংসারের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ-কর্মের চালক। পরিবার প্রধানের দিক থেকে বংশানুক্রমিক সদস্যদের মধ্যে দাদা, দাদি, বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ছেলের বউ, নাতি, নাত-বউ এবং নাতনি অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে, জ্ঞাতি সদস্যদের মধ্যে রয়েছে চাচা ও চাচী, চাচার ছেলে ও মেয়ে, ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী, ভাইয়ের ছেলেমেয়ে এবং এই ধারাবাহিকতায় অন্যান্যরা। বংশীয় ও জ্ঞাতিগত উভয় শ্রেণীতে পরিবার প্রধানের সকল সন্ধানযোগ্য পূর্ব-পুরুষ ও উত্তরপুরুষ বিগত দিনের অব্যাহত সদস্যতা এবং ঘনিষ্ঠতার পারস্পরিক অনুভবের ভিত্তিতে পরিবারের সদস্য হওয়ার স্বীকৃতি লাভ করতে পারে।
বিশ্বে বংশের পরিজনরা পিতা থেকে পুত্র ক্রমিকতায় অর্থাৎ পুরষ পরম্পরার নিম্নগামী ধারায় সংজ্ঞায়িত ও পরিচিত। পিতৃতান্ত্রিক সূত্র নববিবাহিত দম্পতিকে স্বামীর ঘরে ও সংসারে বসবাসের প্রথার সঙ্গে যুক্ত করে। পিতা মাতার হক সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
في حديث أبي هريرة رضي الله عنه قال: (جاء رجلٌ إلى رسولِ اللهِ - صلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ - فقال: مَن أَحَقُّ الناسِ بحُسنِ صحابتي؟ قال: أمُّك، قال: ثمّ من؟ قال: ثمّ أمُّكَ، قال: ثمّ من؟ قال: ثمّ أمُّكَ، قال: ثمّ من؟ قال: ثمّ أبوك) رواه مسلم .
এই উপ-প্রথাসমূহ অনেকগুলো খণ্ডরূপে প্রতিফলিত, যেমন বাড়ি (একটি উঠানকে কেন্দ্র করে বহু লোকজন নিয়ে গঠিত), পাড়া (চারদিকে অনেকগুলি বাড়ি নিয়ে গঠিত প্রতিবেশ) এবং সমাজ (ক্ষুদ্র মানবগোষ্ঠী যেখানে সাধারণভাবে সামাজিক, আর্থিক ও ধর্মীয় সুবিধাদি লভ্য)। সম্ভবত সমাজ সদস্যদের খুঁজে নেওয়া যায় কয়েকটি সাধারণ পূর্বপুরুষের বংশ-পরম্পরায়। বাংলাদেশের মানব সম্প্রদায়গুলোর এই বিভাজিত সংগঠনকে এক সূত্রীয় বংশগতির নিয়ম অবলম্বন করতে হয়েছিল। প্রতি মানুষের জন্য বাড়ী, সমাজ ও জাতির নিকট দায়বত্বতা  আছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
وَالْعَصْرِ

১. শপথ অপরাহ্নের;
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
২. নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত;
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
৩. কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সত্যের এবং উপদেশ প্রদান করে ধৈর্য্যের৷হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলকে দায়িত্বশীল হওয়ার কথা বলেছেন,
, عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْؤول عَنْ رَعِيَّتِهِ، الإِمَامُ رَاعٍ وَمَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي أَهْلِهِ وَهُوَ مَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ فِي بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا، وَالْخَادِمُ رَاعٍ فِي مَالِ سَيِّدِهِ ومَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، -قَالَ: وَحَسِبْتُ أَنْ قَدْ قَالَ: وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِي مَالِ أَبِيهِ وَمَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ- وَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ
বিশ্বের পরিবারগুলি পিতৃতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অনুশীলনকারী। ব্যাপক অর্থে তারা এক একটি মুক্ত দল। বিবাহিত দম্পতির বন্ধন আত্মীয়বর্গের অন্যান্য ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত। স্বামী-স্ত্রী দুজনের যেকোন একজন আত্মীয়দের দায়-দায়িত্ব বহন করে।

বিশ্বে পরিবারের লোকজনদের চেনা যায় একই খানা বা চুলার অংশীদার হিসেবে। একজন বিবাহিত পুরুষ ও নারী মিলিয়ে একটি সমাজ একক। তাদের সংহতি, অভিন্ন স্বার্থ ও কর্তব্য তাদের যেকোন একজনের অন্যবিধ সম্পর্কজাত দায় ও স্বার্থ থেকে অধিক পূর্বাধিকার পায়। তাদের বংশধররা পারস্পরিক স্বার্থে যুক্ত এবং বিবাদরত। পরিবারের সদস্যরা একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল এবং সম্পদ, শ্রম ও আবেগ-অনুভূতিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা জীবনের সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক দিকগুলি পরিচালনা করে।
নির্দিষ্ট বংশধারায় সাধারণত একজন নারী বিভিন্ন বংশের কোন একজন পুরুষের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর সে নিজের বাপের বাড়ি ত্যাগ করে শ্বশুরবাড়িতে যুক্ত হয় এবং সন্তান লাভ করে। শিশুটি পিতা-মাতা উভয় দিকের বংশানুগতির অংশী হয়।
 لقد ثبتت مشروعية الزواج بالقرآن والسنة والإجماع: أما القرآن ففي آيات كثيرة منها: ... ومن السنة الشريفة: ما رواه أنس بن مالك رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: (أما والله اني لأخشاكم لله وأتقاكم له لكني أصوم وأفطر وأصلي وأرقد وأتزوج النساء من رغب عن سنتي فليس مني) [البخاري]

উভয় দিক থেকে পরিজাত বলে পিতা-মাতার এই সন্তান মামার বাড়িতে গিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে। বিবাহিত কন্যার বংশ-পরিচিতি অভিব্যক্ত হয় পিতৃসম্পত্তিতে তার অধিকারে এবং প্রধানত তার প্রথম সন্তানের জন্ম, ঘরে ধান আসা, ভাই-বোনের বিয়ে ও প্রধান প্রধান নৈমিত্তিক উৎসব-অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাপের বাড়িতে আগমনে। আমরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আচরণ  সঠিকভাবে  করতে পারছি না ফলে আমরা মানসিক ও শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়ছি।
উপসংহার :
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি সম্পদ হালাল উপায় উপার্জন  করতে হবে। এর ব্যয় হবে নিজের প্রযোজন মিটিয়ে তার হকদারদের মাঝে ব্যয় করতে হবে। কোন ধরনের অপচয করা যাবে না। এর দ্বারা অহংকার করা যাবে না। যে চরিত্র অর্জন করতে হবে তাহলো
 و بالصبر الجميل و بحسن الكلام و بالصمت الانيق و بالتعاملات الرقية نستطيع أن نملك القلوب

লেখক:
প্রফেসর ড সৈয়দ মাকসুদুর রহমান,
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া বাংলাদেশ


শেয়ার করুন

Author:

0 coment rios:

You can comment here