সিলেট থেকে নূর বিন আফতাব: ইমাম মাওলানা এম. নুরুর রহমান দেশবাসী
ও মুসলিম জাহানের সবাইকে ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর
পবিত্র এ ঈদে তিনি বিশ্ববাসীর নিরাময়, সুস্বাস্থ্য, নিরবচ্ছিন্ন শান্তি, অগ্রগতি ও
সমৃদ্ধি কামনা করেন।
বহুগ্রন্থ প্রণেতা ইমাম মাওলানা এম. নুরুর রহমান ঈদ
শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, ইসলাম ধর্মাবলন্বী মানুষদের অন্যতম প্রধান উৎসব ঈদুল আযহা। তবে এবছর ঈদের
রঙ অনেকটাই ফ্যাকাসে। কারণ বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা সংকট। এর সাথে যুক্ত হয়েছে
একাধিকবার বন্যার আগমন। একে করোনা সংকট, সাথে
যুক্ত হয়েছে ভানবাসী মানুষের করুন আর্তনাদ। বাংলার মানুষের জীবন কার্যত তছনছ করে
দিয়ে অসংখ্যা মানুষের ঘর ভেঙ্গে নিয়েছে আগত বন্যা।
ঈদের শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদ-উল-আযহা মহান আল্লাহর প্রতি অপরিসীম
আনুগত্যের অনুপম নিদর্শন। মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) প্রাণপ্রিয়
পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানি করতে উদ্যত হয়ে আল্লাহর প্রতি যে আনুগত্য ও
ভক্তি প্রদর্শন করেছেন তা অতুলনীয় সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে এ ত্যাগ চিরসমুজ্জ্বল ও
অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। একটি শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল সমাজ বিনির্মাণে ধৈর্য্য ও
সহনশীলতা অপরিহার্য। পবিত্র ঈদ-উল-আযহার মহান আদর্শ ও শিক্ষাকে আমাদের চিন্তা ও
কর্মে প্রতিফলিত করতে হবে।
নিকাহনামা সার্টিফিকেট ইউ.কে এর সত্যয়ানকারী চেয়ারম্যন ইমাম
মাওলানা এম. নুরুর রহমান আরো বলেন, ঈদ সব
শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে গড়ে তোলে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি
ও ঐক্যের বন্ধন। এবার ঈদুল ঈদুল আযহা এমন একটি সময়ে সমাগত যখন বৈশ্বিক মহামারি
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সমগ্র বিশ্বের মানবসমাজ। আমাদের পরিবার-পরিজন বন্ধু-বান্ধব পরিচিতজন অনেকেই
আক্রান্ত। আমরা অনেকেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত আপনজনকে হারিয়েছি। অর্থনৈতিক
কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থেকে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে
দুর্বিসহ। এমনই সময় ঈদ এসেছে আনন্দের বার্তা নিয়ে। তাই জনসমাগম এড়িয়ে সচেতনতার
সঙ্গে ঘরে থেকেই ঈদুল আযহা ও কুরবানি উদযাপন করতে হবে।
শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক ইমাম এম. নুরুর রহমান তার
শুভেচ্ছা বার্তায় আরো বলেন, ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত
প্রতি বছর ঈদুল আজহা আমাদের মাঝে ফিরে আসে। স্বার্থপরতা পরিহার করে মানবতার
কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা কোরবানির প্রধান শিক্ষা। হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-ক্রোধকে পরিহার করে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আত্মনিবেদিত
হওয়া আমাদের কর্তব্য। কোরবানির যে মূল শিক্ষা তা ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত করে মানব
কল্যাণে ব্রতী হওয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ
সম্ভব। বিশ্বাসী হিসেবে সে চেষ্টায় নিমগ্ন থাকা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য।
মাসজিদুল উম্মাহ লুটন ইউ.কে এর ইমাম ও
খতিব হিসেবে সুনামের সাথে দীর্ঘদিন থেকে দায়িত্বপালনরত, সমাজ
চিন্তক ইমাম এম. নুরুর রহমান আরও বলেন, কোরবানির মর্ম অনুধাবন করে সমাজে শান্তি, সৌহার্দ্য ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগ স্বীকারের
মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে। ত্যাগের মনোভাবকে প্রসারিত করতে হবে আমাদের কর্ম ও
চিন্তায়। ধর্মকে ব্যবহার করে কেউ যাতে অশুভ ফায়দা লুটতে না পারে সে ব্যাপারেও
সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান ইমাম এম. নুরুর রহমান। তিনি আরো বলেন, এই উৎসবের মধ্য দিয়ে সামর্থ্যবান মুসলমানগণ কুরবানিকৃত পশুর গোশত আত্মীয় ও
প্রতিবেশীদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে প্রকারান্তরে সকলের মধ্যে সমতা প্রতিবিধান এবং
সহমর্মিতা অনুশীলন করে থাকেন।
শারীয়া কাউন্সিল ব্যাডফোরড ও মিডল্যনড ইউ কে- সেক্রেটারি ইমাম এম. নুরুর রহমান আরো বলেন, ঈদ মুসলমানদের জীবনে নিয়ে আসে অনাবিল আনন্দ। ঈদের উৎসবে মুসলিম উম্মাহ শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত বিশ্ব গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করে। ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতে দেশের দুঃস্থ, দরিদ্র ও সঙ্গতিহীন মানুষের প্রতি ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে সমাজের বিত্তবান মানুষরা ঈদের আনন্দকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আর রাহমান একাডেমি ইউ.কে এর প্রিন্সিপাল ইমাম মাওলানা এম. নুরুর রহমান আরো বলেন, ঈদ হাসতে শিখায়, ঈদ
ভালোবাসতে শিখায়, ত্যাগের মহিমা শেখায়, ঈদুল ঈদুল আযহা আমাদের শুধু আনন্দই দেয়না মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ও অনৈক্য
বুলে গিয়ে পরস্পরকে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধনে আবদ্ধ করে এবং সামাজিক
বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। পবিত্র ঈদুল আযহার মহান আদর্শ ও শিক্ষাকে আমাদের চিন্তা ও
কর্মে প্রতিফলন করতে হবে।
আর-রহমান এডুকেশন ট্রাষ্ট এর প্রতিষ্ঠাতা, সুলেখক, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ইমাম মাওলানা এম. নুরুর রহমান বলেন, আসুন, আমরা সকলে পবিত্র ঈদুল আয্হার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়ে বিভেদ-বৈষম্যহীন সুখী,সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
আসুন, সমাজের
ধনী-গরিব ধর্ম-বর্ণ-গোত্র জাতি-গোষ্ঠী-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবাই পারস্পারিক
সহযোগিতা ও সহর্মিমতার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহার খুশি ভাগাভাগি করে নিই। পরম
করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি- মানুষের জীবন থেকে দূরীভূত হোক সব
মহামারি, দুঃখ-জরা, সুখ-শান্তি
ও সমৃদ্ধির ধারায় প্রবাহিত হোক বিশ্বলোক।
0 coment rios:
You can comment here