Thursday, July 9, 2020

ইসলামে পদসোপান নীতি : একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা

 

প্রফেসর ড. সৈয়দ মাকসুদুর রহমান

সারসংক্ষেপ (Abstract)

পদসোপাননীতি হ'ল একটি যৌক্তিক সাংগঠনিক কাঠামো, যেখানে  ব্যক্তির ক্ষমতাচেয়ে অবস্থানের ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত। কোনও সংগঠনের নেতার ক্ষমতা অপব্যবহারের ঝুঁকি এইভাবে হ্রাস পায়। পদসোপান নীতির বড় সংস্থাগুলিকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। মানবসম্পদ থেকে শুরু করে অ্যাকাউন্টিং পর্যন্ত এবং এর বিপণন ও ক্রয় পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের বিবিধ কাজ পরিচালনা করতে হয় । শ্রেণিবদ্ধ বা কাঠামোশ্রেণিবদ্ধ কাঠামোগুলি ধীরে ধীরে পরিবর্তনের প্রয়োজনের সাথে এর খাপ খাওয়ানো দরকার হয় ।  উদাহরণস্বরূপ, সরকারী সংস্থাগুলি আমলাতন্ত্রের স্তরগুলি বজায় রাখার জন্য ঘন ঘন সমস্যার মুখে পড়ে যা পরিবর্তনকে বাধা দেয়।  যে সংস্থাগুলি নতুন সংস্থার সাথে বা অন্য সংস্থাগুলির সাথে সামনের দিকে নতুন বাজারের চাহিদা বা অগ্রগতির প্রযুক্তিগুলির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না তারা প্রায়শই প্রান্তিক হয়ে যায়। ফলে এর সফলতা লাভ করে না।

এই সমস্যাটি সংস্থাগুলিকে পর্যাপ্ত প্রভাবিত করে যা পরিবর্তন পরিচালন নামে পরিচিত।

এটা একটি সম্পূর্ণ গবেষণার নতুন ক্ষেত্র মার মাধ্যমে অনেক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

তত্ত্ব, সংস্থাগুলি একটি ইউনিফাইড দল হিসাবে একটি  লক্ষ্য অনুসরণ করে যার মাধ্যমে তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে । কারণ এর বাইরে  বিশেষায়িতকরণ সংস্থাগুলির লক্ষ্য না করে কোনও বিভাগকে উপকৃত করার সিদ্ধান্তের দিকে পরিচালিত করেসংস্থাটি যত বড়, তত বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে থাকতে হয়। প্রতিটি বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর পক্ষে স্বতন্ত্র বিভাগগুলি কীভাবে সংযুক্ত হয়ে এবং ইউনিফাইড কোম্পানি হিসাবে সফলভাবে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে এ ব্যাপারে পদসোপানের নীতি মেনে নিতে হবে।

ভূমিকা :

(Introduction )

পদসোপাননীতি লোক প্রশাসনের সংগঠনের (organization)  এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রের অনেক কাজ কর্ম সম্পাদন করা হয়। এটা সমন্বিত কর্মকান্ড পরিচালনা করার ব্যবস্থাপনা। উর্ধতন প্রশাসন থেকে শুরু করে নিচের স্তরের কর্মকর্তা দ্বারা কোন কাজ সম্পন্ন করা। সঠিকভাবে কাজ করতে ও স্বচ্ছতাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ। যেহেতু কার্যকরী কাঠামোর প্রতিটি ইউনিট তার নিজস্ব ক্ষেত্র বিশেষতাকে কেন্দ্র করে, বিভাগগুলির মধ্যে একত্রীকরণ এবং যোগাযোগের সামঞ্জস্য না রাখলে এটি সংস্থার বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গির অভাব হতে পারে।

আরেকটি অসুবিধা হ'ল ইউনিটগুলির সমস্যার সমাধান, পরিবর্তন করা বা গ্রাহকের চাহিদা বা প্রয়োজনের বিষয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে কিন্তু নমনীয়তা থাকতে পারে। যেহেতু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপনার শীর্ষ স্তরের সাথে জড়িত থাকে । এর মাধ্যমে পরিবেশের মধ্যে আরও নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়। তবে এ নীতির অনেক সুবিধা ও অসুবিধা আছে। আলোচ্য প্রবন্ধে পদসোপান নীতি ও এর সুবিধা (Advantage) এবং অসুবিধা (Disadvantage) ইসলামী দৃষ্টিকোণ তুলনামূলকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি পাঠক হিসেবে সহজেই বিষয়টি বোধগম্য হবে। এ নীতি বাস্তবায়িত করতে আইন ও কর্মীদের প্রয়োজন দেখা যায়। সুতরাং কর্মীদের মর্যাদার বিষয়ে ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَىٰ كَثِيرٍ مِّمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا

অর্থ :আর অবশ্যই আমরা আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি; স্থলে ও সাগরে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি; এবং তাদেরকে উত্তম রিযক দান করেছি আর আমরা যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। কর্ম সম্পাদন করতে নেতৃত্ব দরকার হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وَلَقَدِ اخْتَرْنَاهُمْ عَلَىٰ عِلْمٍ عَلَى الْعَالَمِينَ

অর্থ :আমি জেনেশুনে তাদেরকে বিশ্ববাসীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম (সুরা আল জাসিয়া ৩২)

And surely We have honored the children of Adam, and We carry them in the land and the sea, and We have given them of the good things, and We have made them to excel by an appropriate excellence over most of those whom We have created.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

وَقَدْ ذَكَرَهُ مُسْلمٌ في أَوَّلِ صَحِيحهِ تَعْلِيقاً فقال : وَذُكَرَ عَنْ عائِشَةَ رضي اللَّه عنها قالت: أَمرنا رسولُ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم أَنْ نُنْزِل النَّاسَ مَنَازِلَهُمْ، وَذَكَرَهُ الحاكِمُ أَبُو عبدِ اللَّهِ في كِتابِهِ"مَعْرفَة عُلُومِ الحَديث"وقال: هو حديثٌ صحيح.

আভিধানিক অর্থ

(Lexical meaning)

 পদ শব্দের অর্থ আধিপত্য, অবস্থা রাজপদ., কর্মভার,আর সোপান শব্দ অর্থক্রমোন্নতি, সোপান, মই, সিঁড়ি, অধিরোহণী, আরোহণী, মোজা ইত্যাদি। মূল কথা শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে 'পা' আর সোপান শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে 'ওপরে ওঠার সিঁড়ি' তাহলে, পদসোপান শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে 'পা বেয়ে ওপরে ওঠার সিঁড়ি' ইংরেজি ভাষায়  Flight of steps;  stair-case;  step;  ladder.ইত্যাদি অর্থ বুঝানো হয়।

আসলে এর দ্বারা সুতো খুলে যাওয়ার ফলে লম্বালম্বি যে ফাঁক দেখা যায়,  সে রকম জীবনে উন্নতি করার বা উদ্দেশ্য যে পথ ধরে নিচে থেকে উপরে উঠে সেটা সোপান ।

অন্যদিকে নীতি শব্দের অর্থ বিশেষ্য পদ রীতি, নিয়ম; প্রথা, প্রণালী, সাধনোপায়। আরবি ভাষায় এর অর্থ

الدَرَج أو السلالم  هي سلسلة من الدرجات التي تكون وسيلة اتصال بين الطابق والأخر. أو مجموعة من الدرج مكونة لمستوي مائل الغرض منه الوصول بسهولة من طابق إلي آخر. وتوضع السلالم في مكان يخصص

এটি একধাপের পদক্ষেপ যা উচ্চতর এবং অধিন্যস্ত এর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে গঠিত হওয়ার নাম পদসোপান।

পরিভাষায এর সংজ্ঞা

(Definition of hierarchy)

পদসোপান নীতি এর সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে  বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন ধরনের মতামত পাওয়া যায়। যেমন -

*a system in which members of an organization or society are ranked according to relative status or authority.

"the initiative was with those lower down in the hierarchy"

এমন একটা পদ্ধতির নাম। যেপদ্ধতিতে কোনও সংস্থা অথবা সমাজের সদস্যদের আপেক্ষিক অবস্থা বা কর্তৃত্ব অনুসারে স্থান দেওয়া হয়। এ উদ্যোগ উপক্রম থেকে নিম্নস্তর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।

*শ্রেণিবিন্যাস একটি সাংগঠনিক কাঠামোর নাম। যাতে আইটেমগুলিকে গুরুত্বের স্তর অনুসারে স্থান দেওয়া হয়। বেশিরভাগ সময় সরকার, কর্পোরেশন এবং সংগঠিত ধর্মগুলি উদ্দেশ্য করা হয়।

*A hierarchy is an organizational structure in which items are ranked according to levels of importance. Most governments, corporations and organized religions are hierarchical.

التسلسل الهرمي للهيمنة هو نوع من التسلسل الهرمي* الاجتماعي ينشأ نتيجة تفاعل أعضاء مجموعة اجتماعية فيما بينهم، وذلك لإنشاء نظام تصنيف معين. ضمن مجموعات الحياة الاجتماعية، من المحتمل أن يتنافس الأعضاء على الموارد المحدودة وفرص التزاوج. عوضًا عن القتال في كل مرة يجتمعون فيها، تُحدد مرتبة نسبية بين أفراد الجنس الواحد. استنادًا إلى المواجهات المتكررة، ينشأ نظام اجتماعي يخضع للتغيير في كل مرة يتحدى فيها فردٌ ذو رتبة أدنى الحيوان المهيمن.

*পদসোপান হ'ল একটি সাংগঠনিক কাঠামো যাতে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সত্তা - একটি সত্তাকে বাদ দিয়ে - অন্যকে অনুসরণ করে। এই ব্যবস্থাটি এক ধরণের শ্রেণিবিন্যাস।

একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি শ্রেণিবিন্যাস বা পদবিন্যাস থাকে যা সাধারণত উচ্চ স্তরের একক কর্তৃত্ব সমিতি নিয়ে গঠিত হয় এবং তার পরে কর্তৃপক্ষের ক্রমাগত স্তর। আরবি ভাষায় এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে -

التنظيم الهرمي هو هيكل تنظيمي يتبع فيه كل كيان*

 داخل المنظمة - فيما عدا كيان واحد - لكيان آخر. وهذا الترتيب هو نوع من أنواع التدرج الهرمي. ويتألف عادةً التدرج الهرمي داخل أية منظمة من سلطة فردية/جمعية بأعلى التدرج يليها مستويات متتالية من السلطة.

সংজ্ঞা বিশ্লেষণ

(Definition analysis)

উপরের সংজ্ঞা গুলো বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় যে,

ক) পদসোপান নীতি একটি কার্যকর সংস্থার নাম।

খ) পদসোপান নীতি কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন ধরনের (unity) ঐক্য তৈরি করে।

গ) পদসোপান নীতি করার মাধ্যমে উন্নত ক্যারিয়ারের পথ খুঁজে বের করা সম্ভব হয়।

ঘ)  পদসোপান নীতি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।

চ) এইভাবে পদসোপান নীতিশেষ পর্যন্ত সংস্থার সাফল্যকে পরিপূর্ণভাবে পরিবেশন করে।

সাংগঠনিক শ্রেণিবিন্যাসের তদন্তে, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শ্রেণিবিন্যাসের ধারণাগুলি পাঁচটি ভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়

(১) আমলাতান্ত্রিক  সংগঠন ,(Bureaucratic organizations, )

 (২) অনুরাগী সংগঠন(Fan Organizations,)

(৩) প্রতিনিধি সংগঠন, (Representative organization,)

 ৪) আধুনিক সংস্থা(Modern organization)

 ৫)সামাজিক সংস্থা (Social Organization)

একটি সংস্থার শ্রেণিবিন্যাস বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের চেইন অব কমান্ড শনাক্ত করতে কাজ করে।

এ ছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটি রেফারেন্স পয়েন্ট হিসাবে কাজ করেসব দিক বিবেচনা করে দেখা গেছে পদসোপান নীতির গুরুত্ব অপরিসীম। সঠিকভাবে দায়িত্বশীল হলে একটা সুসংহত দক্ষ কর্মকর্তাদের সমন্বিত কর্মকান্ড যা উর্ধতন এবং নিম্নস্তর স্ব স্ব অবস্থান অনুযায়ী ভূমিকা পালন করতে পারে।

মূল কথাটি হ'ল একটি শ্রেণিবিন্যাস এটি কেবল সঠিকভাবে এবং সঠিক কারণে বাস্তবায়িত হওয়া প্রয়োজন। যখন একটি (traditional) ঐতিহ্যবাহী শ্রেণিবিন্যাস একটি তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়। তখন তার বৈশিষ্ট্য থাকে না।

*পদসোপান এর উদাহরণ নিম্নে বর্ণিত হলো

সেনা নৌ বিমান বাহিনীর তুলনামূলক পদসোপান

 (Comparative rank of Army Navy Air Force)

১) জেনারেল এডমিরাল এয়ার চীফ মার্শাল

২) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভাইস অ্যাডমিরাল এয়ার মার্শাল

৩) মেজর জেনারেল রিয়ার অ্যাডমিরাল এয়ার ভাইস মার্শাল

৪) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, কমোডর এয়ার কমোডর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কমোডর

৫) কর্ণেল, ক্যাপ্টেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন কর্ণেল ক্যাপ্টেন

৬ ) লেফট্যানেন্ট কর্ণেল, কমান্ডার, উইং কমান্ডার

৭) মেজর, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার, স্কোয়াড্রন লিডার

 ৮) ক্যাপ্টেন, লেফটেন্যান্ট ফ্লাইট, লেফটেন্যান্ট

৯)লেফটেন্যান্ট ,সাব লেফটেন্যান্ট ,ফ্লাইং অফিসার

১০) সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, মিডশিপম্যান, পাইলট, অফিসার

সচিবলার পদসোপান

তা দেওয়া হলো:

 মন্ত্রী >> সিনিয়র সচিব>> সচিব>> অতিরিক্ত সচিব >> যুগ্ম সচিব >> উপসচিব >> সিনিয়র সহকারী সচিব >> সহকারী সচিব।

 

*এমন একটি ব্যবস্থা নাম যাতে কোনও সংস্থায় বা সংস্থার লোকেরা তাদের কর্তৃত্ব অনুযায়ী স্তরগুলিতে সংগঠিত হয়। পদ বিন্যাস অনুযায়ী কাজ প্রদান করা হয়। ইসলামে অনেকের মধ্যে থেকে একজনকে  চুড়ান্ত দায়িত্ব পালন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

 وَجَعَلْنَاهُمْ أَئِمَّةً يَهْدُونَ بِأَمْرِنَا وَأَوْحَيْنَا إِلَيْهِمْ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَإِقَامَ الصَّلَاةِ وَإِيتَاء الزَّكَاةِ وَكَانُوا لَنَا عَابِدِينَ

 অর্থ : আমি তাঁদেরকে নেতা করলাম। তাঁরা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ প্রদর্শন করতেন। আমি তাঁদের প্রতি ওহী নাযিল করলাম সৎকর্ম করার, নামায কায়েম করার এবং যাকাত দান করার। তাঁরা আমার এবাদতে ব্যাপৃত ছিল। [ সুরা আম্বিয়া ২১:৭৩ ] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

عن  ‏أَبِي هُرَيْرَةَ ‏: ‏أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ ‏: ‏إِذَا كَانَ ثَلَاثَةٌ فِي سَفَرٍ فَلْيُؤَمِّرُوا أَحَدَهُمْ . ‏قَالَ ‏نَافِعٌ ‏: ‏فَقُلْنَا لِأَبِي سَلَمَةَ : فَأَنْتَ أَمِيرُنَا ‏. رواه أبو داود (2709

যখন তিনজন মিলে কোন কাজ করবে তখন তাদের একজনকে নেতা নির্ধারণ করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

عن عبد الله قال : إذا كنتم ثلاثة في سفر فأمروا عليكم أحدكم ولا يتناجى اثنان دون صاحبهما . قال الهيثمي في المجمع (5/256) : ورجاله رجال الصحيح

If you were three in the journey, you would be one of them, and you would not be able to do it, even though you were two owners.  Al-Haythami said in the meeting (5/256): The right man is right

সুবিধা সমূহ (Advantages )

১) এটি যোগাযোগের জন্য একটি ভালো কাঠামো তৈরি করে। যার মাধ্যমে সকল পদের কর্মকর্তার সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করা যায়।

২) এটি সংস্থার মধ্যে একাধিক স্তরের কর্মকর্তা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা করে। এর মাধ্যমে কাজটি সুচারুরূপে সম্পন্ন করা যায়।

৩) এটির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের একটি পরিষ্কার চিত্র স্থাপন করে। সকলের ব্যাপারে সকলে জানতে পারে। একটি সেতুবন্ধন তৈরি হয়।

৪) এটি এমন জায়গাগুলি সনাক্ত করে যেখানে সদৃশতা আছে। যেহেতু সাদৃশ্যতা চিহ্নিত করা হয় সে কারণেই নজীর পেশের মাধ্যমে কাজ সমাপ্ত করেন। ইসলামী পদসোপান সাদৃশ্যতা একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন।

৫) পদসোপান নীতি বিশেষজ্ঞকরণের অনুমতি দেয়। কারণ যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অভিজ্ঞ ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

 وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ (43) بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الذِّكْرَ لِتُبَيِّنَ لِلنَّاسِ مَا نُزِّلَ إِلَيْهِمْ وَلَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُونَ

আপনার পূর্বেও আমি প্রত্যাদেশসহ মানুষকেই তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম অতএব তোমরা যদি না জানো তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর। (১৬:৪৩)

قد قال النبي ﷺ: من سئل عن علم فكتمه ألجمه الله يوم القيامة بلجام من نار،

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

 إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى مِن بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ أُولَـئِكَ يَلعَنُهُمُ اللّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ

অর্থ : নিশ্চয় যারা গোপন করে, আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য এবং হেদায়েতের কথা নাযিল করেছি মানুষের জন্য কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও; সে সমস্ত লোকের প্রতিই আল্লাহর অভিসম্পাত এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীগণের ও। [ সুরা বাকারা ২:১৫৯ ]

৬)এটি সিদ্ধান্তহীনতার সমস্যাগুলি দূর করে। যার যে দায়িত্ব থাকে সে বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, 

فَبِمَا رَحْمَةٍ مِنَ اللَّهِ لِنْتَ لَهُمْ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ

"হে নবী! আল্লাহর দয়ায় আপনি তাদের প্রতি কোমলচিত্ত হয়েছিলেন। যদি আপনি রূঢ় ও কঠোর হৃদয় হতেন, তবে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে যেত। তাই আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। কাজেকর্মে তাদের সাথে পরামর্শ করুন, কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে আল্লাহর ওপর নির্ভর করুন। যারা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে তাদের তিনি ভালবাসেন।" (৩:১৫৯)

৭) এন্ট্রি-স্তরের কর্মীদের নির্বাচন করার ক্ষমতা রাখে। এ জন্য যারা যোগ্য তাদের বাছাই করা হয়। অযোগ্য লোকজন এ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আসতে পারে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

والشرور لأنه ﷺ يقول: من سن في الإسلام سنة حسنة كان له أجرها وأجر من عمل بها من بعده لا ينقص ذلك من أجورهم شيئا، ومن سن في الإسلام سنة سيئة كان عليه وزرها ووزر من عمل بها من بعده لا ينقص ذلك من أوزارهم شيئا خرجه مسلم في صححيه

যারা ভালো বা মন্দ কাজ করে বা করার ক্ষমতা ও সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় তারা ওই কর্ম সম্পাদনকারীর সমান সওয়াব বা গুনাহ অর্জন করবে। ’ (তিরমিজি-মিশকাত)

 অসুবিধা সমুহ

(Disadvantages )

১)পদসোপান নীতির দ্বারা পারস্পরিক সহযোগিতার অভাব হয়। কেউ কাউকে সহযোগিতা করে না। সবাই নিজকে আইন দ্বারা পরিচালিত মনে করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন

,وَتَعَاوَنُواْ عَلَى الْبرِّ وَالتَّقْوَى وَلاَ تَعَاوَنُواْ عَلَى الإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُواْ اللّهَ إِنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা কঠোর শাস্তিদাতা

 ২) এর দ্বারা পারস্পরিক আঞ্চলিকতা বৃদ্ধি করে। একটি বিশেষ অঞ্চলের স্বার্থের আনুগত্য করা।

يقول رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا فضل لعربي على عجمي، ولا لأبيض على أسود إلا بالتقوى

৩) এটি অভ্যন্তরীণ উদ্ভাবন শক্তি হ্রাস করতে পারে।নিজেকে গদবাধা আইন দ্বারা পরিচালিত করতে হয়। সৃজনশীল কোনো চিন্তা কাজে আসে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

 وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِنَ الْأَمْنِ أَوِ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَى أُولِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنْبِطُونَهُ مِنْهُمْ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَاتَّبَعْتُمُ الشَّيْطَانَ إِلَّا قَلِيلًا (83)

"মোনাফিকদের কাজের ধরণ হলো, যখনই শান্তি ও নিরাপত্তা এবং পরাজয় বা ভয়ের কোন সংবাদ তাদের কাছে পৌঁছে তখনই তারা তা রটনা করে, অথচ যদি তারা রাসূলের কাছে কিংবা নেতৃস্থানীয় মুসলমানদের কাছে এসব সংবাদ পৌঁছে দিত, তাহলে বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ লোকেরা সংবাদগুলোর সত্যতা বুঝতে পারত। তোমাদের প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হতো, তাহলে তোমাদের অল্প ক'জন ছাড়া সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে।" (৪:৮৩)

৪) শক্তিশালী কাঠামোকে এককেন্দ্রিক করে তোলে। সকলের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না। যার কারণে চুড়ান্ত ব্যক্তি নিচের কাউকে তোয়াক্কা করে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

 ا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ قَدْ تَبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى لَا انْفِصَامَ لَهَا وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ (256) اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آَمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا أَوْلِيَاؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُمْ مِنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (257)

"ধর্ম গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন জোর জবরদস্তি নেই। কারণ, বিভ্রান্তির পথ থেকে সত্য পথকে সুস্পষ্ট করা হয়েছে। যে তাগুতকে অস্বীকার করেছে এবং আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সে এমন সুদৃঢ় রজ্জু ধরে আছে যা কখনও ছিন্ন হওয়ার নয়। আর আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।" (২:২৫৬

৫)আমলাতন্ত্র অনেক যা পরিচালনা করা আবশ্যক।

৬)এটি যোগাযোগের বাধা তৈরি করতে পারে।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মুমিনের পায়ে একটা কাঁটা বিঁধলেও সে সওয়াব পায় এবং তার জান্নাতের দরজা বৃদ্ধি হয়। ' সুতরাং কারও থেকে কষ্ট পেলে সবর করুন।

قال علي رضي الله عنه: (ألا إن الصبر من الإيمان بمنزلة الرأس من الجسد، فإذا قطع الرأس بار الجسد). قال الحسن: (الصبر كنز من كنوز الخير، لا يعطيه الله إلا لعبد كريم عنده

৭) এ নীতির মাধ্যমে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।ইসলামে বিভ্রান্ত তৈরি করা সুযোগ নেই। কারণ সে ইচ্ছা করলে ভালো কিছু করবে অথবা চুপচাপ থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ( مَنْ صَمَتَ نَجَا )

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে চুপ থাকে সে মুক্তি পায়। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫০১)

৮) এর দ্বারা অসম একটি কাঠামো তৈরি হয়। প্রতিটি ব্যক্তি তার ক্ষমতা প্রদর্শন করার চেষ্টা করে। ইসলাম শ্রেণিবিন্যাস শুধুমাত্র পরিচিত প্রদান করার জন্য। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোন অনারবের উপর কোন আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই, আর না আছে কোন আরবের উপর অনারবের শ্রেষ্ঠত্ব। কোন কালোর উপর কোন সাদার শ্রেষ্ঠত্ব নেই, আর না আছে কোন সাদার উপর কোন কালোর শ্রেষ্ঠত্ব, তবে তাকওয়া ছাড়া।

ইসলামী পদসোপান

 (Islamic  hierarchy )

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে পদসোপান নীতির কোন আলাদা সংজ্ঞায়িত করা হয় না। এটা কর্মকান্ডের সমন্বিত উদ্যোগ যার মাধ্যমে সততা ও জবাবদিমূলক প্রশাসনিক কর্মকান্ড বুঝানো হয়েছে। উপরের দায়িত্ব থেকে অধিন্যস্ত সবাই তার দায়িত্বসমূহ পালন করে।

التي تتناول الهيكل الهرمي الإسلامي للكون والإنسان وعلاقاتهما وعلاقاتهما ، وكل ذلك يشير إلى إنه في الواقع بديل عن التسلسل الهرمي للعالم الكبير ووسط العالم الصغير. من خلال البحث والدراسة

মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা রাষ্ট্রের প্রশাসনকে বিকেন্দ্রীকরণ করেন। এতদুদ্দেশ্যে তিনি ১৯টি স্তর বিশিষ্ট একটি সুশৃঙ্খল প্রশাসনিক কাঠামো মদীনাবাসীকে উপহার দেন। যার পদসোপান নীতি ছিল একটি মডেল। তিনি বিশ্বাসকে একক নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হন। এ ছাড়া উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু এর শাষন ব্যবস্থাপনা ও পদসোপান ছিল জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। যেমন -

ক) কাতিব, প্রধান সচিব

খ) কাতিব উদ দিওয়ান, সামরিক সচিব

গ) সাহিব উল খারাজ, রাজস্ব আদায়কারী

ঘ) সাহিব উল আহদাস, পুলিশ প্রধান

ঙ) সাহিব বাইতুল মাল, কোষাগার কর্মকর্তা

চ) কাজি, প্রধান বিচারক

উমার ইবন আব্দুল আজিজ রাহমাতুল্লাহ আলাইহি তিনি যে পদসোপান নীতি গ্রহণ করেন। যেমন –

*অত্যাচারী গভর্ণরদেরকে বরখাস্ত করেন।

>>* গভর্ণরের দায়িত্ব পালনের জন্য সৎলোকদেরকে অনুসন্ধান করে বের করে আনেন।

>*> যে সব প্রশাসনিক কর্মচারীবৃন্দ

*নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রজা সাধারণের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রুর ওপর অনধিকার হস্তক্ষেপ করেছিল; তাদেরকে তিনি আইনের আওতায় নিয়ে আসেন এবং আইনের শাসন বাস্তবায়ন করেন।

*>> রাষ্ট্রীয় কোষাগার বাইতুলমালে কর নির্ধারণ ও জমার সব নিয়ম-নীতি পরিবর্তন করেন।

>>আবগারী করসহ বনি উমাইয়া প্রশাসকগণ যে সব অবৈধ ও অন্যায় কর নির্ধারণ করেছিলেন; তিনি তা ক্ষমতারোহনের সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করে দেন।

>*> জাকাত আদায়ের যে ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল, তা নতুনভাবে সংশোধণ করেছিলেন।

*>> বায়তুল মালের অর্থকে সাধারণ মুসলমানের কল্যাণের জন্য ওয়াক্ফ করে দেন।

*>> রাষ্ট্রের অমুসলিম প্রজাদের সঙ্গে সঙ্গে যে সব অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল, তার প্রতিকার করেন।

>*> অমুসলিমদের যে উপাসনালয় অন্যায়ভাবে দখল করা হয়েছিল, সেগুলো তাদেরকে ফিরিয়ে দেন।

>> অমুসলিমদের যে সব জমি ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল, তাও তিনি তাদেরকে ফেরত দেন।

>> ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে তাদের প্রাপ্য যাবতীয় সুবিধা প্রদান করেন। মুলত পদসোপান নীতি একটি কার্যকর সংস্থা যে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন, সে সকল লোকদের শ্রেণিবিন্যাস।

উপসংহার

(Convolution)

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, পদসোপান কাঠামো ব্যবহার করে কাজ এবং বিভাগগুলির জন্য সুস্পষ্ট কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। এর মাধ্যমে কর্মকাণ্ড সুচারু রুপে সম্পন্ন করা হয়। সকল শ্রেণীর কর্মকর্তাদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা হয়। পরিচালকদের ম্যানেজমেন্ট স্তর অনুযায়ী কর্তৃত্ব থাকে। তাদের সংস্থানগুলি বরাদ্দ করার, পুরষ্কার দেওয়ার এবং আচরণের শাস্তি দেওয়ার অধীনস্থদের আদেশ দেওয়ার পরিপূর্ণ ক্ষমতা আছে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী দৃষ্টিকোণ বাস্তবায়িত হলে একটি জবাবদিমূলক, সততা ও স্বচ্ছতা এবং  ভালোবাসা ও উদার প্রশাসন হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন

,إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

But the believers are brothers, so reconcile between your brothers. ۚ And fear Allah, may God have mercy on you. (10)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফীক দান করুন, আমীন ।


লেখক:

প্রফেসর ড. সৈয়দ মাকসুদুর রহমান

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া

বাংলাদেশ।



শেয়ার করুন

Author:

0 coment rios:

You can comment here