Sunday, August 2, 2020

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুল্লাহ আলাইহি : ইলমুল হাদীসে তাঁর অবদান


প্রফেসর ড. সৈয়দ মাকসুদুর রহমান

 সারসংক্ষেপ

(Abstract )

Imam Al-Hafiz Al-Thabet, Sheikh Al-Islam, critic of the hadithAbu Abd al-Rahman Ahmad bin Shuaib bin Ali bin Sinan bin Bahr al-Khurasani al-Nasa’i, the owner of Sunan.  (Pence) was born in the year two hundred and fifteen in town of nasa. He died forty-two years after him, and he was born six years after al-Tirmidhi, and he died twenty-four years after him, and he was born thirteen years after Abu Daud and he died twenty-eight yearsAs for the Nasai, it has been advanced that he took the hadith on Al-Bukhari and Abu Dawud, and we do not know that he took it from other companions of the Sahih.  The book written by Imam Nasai Rahmatullah Alaihi is very important to the muhaddithin.  He has been very careful in compiling the hadith.

ভূমিকা

(Introduction )

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি ইলমুল হাদীস একজন সিকাহ ও নির্ভরযোগ্য সংকলোক। তিনি সুনানে নাসাঈ  এবং অন্যান্য হাদীস, ফিক্হ ও আকীদাহ সহ অনেক গ্রন্থ রচনা করেন। করে মুসলিম বিশ্বে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন।তার বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য গ্রন্থের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তৃতীয় শতকে হাদীস সংকলন ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আলোচ্য প্রবন্ধে ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর জীবনী এবং ইলমুল হাদীস চর্চায় এবং গ্রন্থ সংকলন করার জন্য তার অবদান আলোচনা করা হয়েছে।

নাম ও নসবনামা

(Name and genealogy)

ইমাম নাসাঈ-রাহমাতুললাহ আলাইহি এর  নাম আহমাদ, পিতার নাম শুআইব উপাধি  আল-ইমামুল হাফেয আল-হাফেযুল হুজ্জাহ উপনাম আবু  আব্দুর রহমান[ নিসবতী নাম  আল-খোরাসানীআন-নাসাঈ। নাসা’-এর দিকে সম্বন্ধিত করে তাঁকে নাসাঈ বলা হয়েছে ।

নসব নামা বিশ্লেষণ :

(Nasab Nama Analysis)

*‘নাসা

هي مدينة أثرية قديمة تقع في جمهورية تركمانستان، كانت قديماً تتبع إقليم خراسان التاريخي والذي كان يضم أجزاء واسعة من أفغانستان وتركمانستان وشرق إيران. يقع موقع المدينة الأثري على بعد 18 كيلومتراً إلى الجنوب الغربي من مدينة عشق آباد وموقع المدينة غير مأهول حالياً

*মুহাদ্দিসঃ যিনি হাদীস শাস্ত্রে পণ্ডিত অথবা বিশেষজ্ঞ বা বিশারদ।

المُحَدِّث هو من يشتغل بعلم الحديث رواية ودراية، ويطلع على كثير من الروايات وأحوال رواتها

*،ومن أبرزهم البخاري ومسلم وأبو داود والترمذي وابن ماجه ومالك بن أنس والرامهرمزي والنيسابوري والخطيب البغدادي وابن الصلاح وابن حجر العسقلاني

* যিনি হাদীস চর্চা করেন এবং বহু সখ্যক হাদীসের সনদ মতন সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান রাখেন তাকেই মুহাদ্দিস বলে।

*মুহাদ্দিসগণ হাদীস শাস্ত্রের ওপর গবেষণায় নিয়োজিত থাকেন।

*হাফয: যিনি সনদ ও মতন সহ তিন লক্ষ হাদীস মুখস্থ করেছেন। এ ব্যাপারে অনেক মত পাওয়া গেছে। যেমনঃ

الحافظ، وهو أرفع من المحدث، وهو – حسب ابن الجزري – من روى ما يصل إليه ووعى ما يُحتاج إليه. ... وهو الحافظ عظيم الإتقان، والمدقق فيما يحفظ من الأسانيد والمتون تدقيقًا بالغًا ليصل حينذاك إلى لقب الحج

ةAl-Hafiz, who is superior to the hadith, and he - according to Ibn Al-Jazari - who narrated what he reached and became aware of what was needed.  ... and he is a well-preserved master, and the auditor, while preserving the chain of narrators and texts, is very careful to reach the title

হুজ্জত:

যিনি তিন লক্ষ হাদীস সনদ ও মতন সহ মুখস্থ করেন তাকে হুজ্জত বলেন ।

তাঁর নসব নামা

আবু আব্দুর রহমান আহমাদ ইবনু শ শুআইব ইবনে আলী ইবনে সিনান ইবনে বাহার  আল-খোরাসানী আন-নাসাঈ।

*ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর বংশপরিক্রমায় বলেন, আহমাদ ইবনু শুআইব ইবনে আলী-এর পরিবর্তে আহমাদ ইবনু আলী ইবনে শোআইব উল্লেখ করেছেন।

*এ দুটো বর্ণনার  মধ্যে সমন্বয় সাধন এভাবে করা যায় যে, দাদার প্রসিদ্ধি ও পরিচিতির কারণে পুত্রের  সম্পর্ক কখনো কখনো দাদার প্রতি আরোপ করা হত।

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি জন্মগ্রহণ

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি ২১৫ হিজরী মুতাবিক ৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে। অন্য একমতে তিনি ২১৪  হিজরীতে খোরাসানের নাসানামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।

নাসা স্থানের দিকে  সম্বন্ধিত করে তাঁকে আন-নাসাঈ বলা হয়। এ নামেই তিনি সমধিক প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। বিশ্ববাসীর নিকট তিনি ইমাম নাসাঈ হিসেবে পরিচিত হয়েছেন।

*ইবনুল আসীর এবং আবূ আব্দুর রহমান জালালুদ্দীন  আস সুয়ূতী বলেন,

 তিনি ২২৫ হিজরীতে  জন্মগ্রহণ করেন।

* ইবনু মানযূর, আল-মিযযী  শামসুদ্দী আল যাহাবী রাহমাতুললাহ আলাইহিম বলেন, ‘তিনি ২১৫ হিজরীতে জন্মগ্রহণ করেছেন। এটিই প্রাধান্যযোগ্য অভিমত।কারণ অধিকাংশ আলিমদর এটাই অভিমত।

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর শিক্ষা জীবন :

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি নিজ জন্মভূমিতেই প্রসিদ্ধ আলেমগণের নিকট পড়া-লেখা শুরু করেন।তিনি পনের বছর বয়স পর্যন্ত স্ কুরআন কারীম হিফয  করেন। এ সময় ইসলামী প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন।

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি -এর সময়ে খোরাসান ও তার পার্শ্ববর্তী  এলাকা সমূহ  ইলমুল হাদীসের কেন্দ্রভূমি হিসাবে পরিচিত ছিল। সেখানে অনেক খ্যাতনামা আলিমদর  আগমন ঘটে।

 مناقبه

The view of the muhaddithin on Imam Nasai (may Allah have mercy on him)

قَالَ أَبُو الْحُسَيْنِ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُظَفَّرِ الْحَافِظُ: " سَمِعْتُ مَشَايِخَنَا بِمِصْرَ يَعْتَرِفُونَ لَهُ بِالتَّقَدُّمِ وَالْإِمَامَةِ، وَيَصِفُونَ مِنَ اجْتِهَادِهِ فِي الْعِبَادَةِ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَمُوَاظَبَتِهِ عَلَى الْحَجِّ وَالِاجْتِهَادِ "

 .Abu Hussein Mohammed bin Hafiz Muzaffar said: "I heard our sheikhs in Egypt recognize his progress and Imamate, and describe the worship of his diligence night and day, and Moazpth on Hajj and diligence

قال ابن عدي: «سمعت منصور الفقيه وأحمد بن محمد بن سلامة الطحاوي يقولان: أبو عبد الرحمن إمام أئمة المسلمين

Ibn Aday said: “I heard Mansur al-Faqih and Ahmad bin Muhammad bin Salama al-Tahawi say: Abu Abdul Rahman, the imam of the Muslim imams.”

وقال محمد بن سعد البارودي: «ذكرت النسائي لقاسم المطرز، فقال: هو إمام أو يستحق أن يكون إماما

Muhammad bin Saad al-Baroudi said: “I mentioned the women to Qasim al-Mataraz, and he said: He is an imam or deserves to be an imam.”

وقال أبو علي النيسابوري: «النسائي إمام في الحديث بلا مدافعة

Abu Ali al-Nisaburi said: «The women are an imam in the hadith without an advocate.

قَالَ الدَّارَقُطْنِيُّ: " خَرَجَ حَاجّاً فَامتُحِنَ بِدِمَشْقَ، وأدرك الشهادة فقال: احمِلُونِي إِلَى مَكَّةَ. فَحُمِلَ وَتُوُفِّيَ بِهَا

"Al-Daraqutni said: “He went out to Hajj and tested in Damascus. He recognized the testimony and said: Take me to Makkah.

قَالَ الْحَاكِمُ: مَعَ مَا رُزِقَ النَّسَائِيُّ مِنَ الْفَضَائِلِ ، رُزِقَ الشَّهَادَةَ فِي آخِرِ عُمْرِهِ، مَاتَ بِمَكَّةَ سَنَةَ ثَلَاثٍ وَثَلَاثِمِائَةٍ. وَحَكَى ابْنُ خَلِّكَانَ فِي " الْوَفَيَاتِ " أَنَّهُ إِنَّمَا صَنَّفَ " الْخَصَائِصَ " فِي فَضْلِ عَلِيٍّ وَأَهْلِ الْبَيْتِ، لِأَنَّهُ رَأَى أَهْلَ دِمَشْقَ حِينَ قَدِمَهَا فِي سَنَةِ ثِنْتَيْنِ وَثَلَاثِمِائَةٍ عِنْدَهُمْ نُفْرَةٌ مِنْ عَلِيٍّ ". قال الحافظ ابن عساكر رحمه الله :" روي عن أبي عبد الرحمن النسائي ، أنه سئل عن معاوية بن أبي سفيان ، صاحب رسول الله صلى الله عليه وسلم ، فقال: إنما الإسلام كدار لها باب، فباب الإسلام الصحابة، فمن آذى الصحابة ، إنما أراد الإسلام، كمن نقر الباب ، إنما يريد دخول الباب.

ইমাম নাসাঈ এর ইলমুল হাদীস এর গভীর জ্ঞান অর্জন করতে দেশ ভ্রমণ :

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি  ইলমুল হাদীসের গভীর জ্ঞান অর্জন করতে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। তিনি ২৩০ হিজরী মুতাবিক ৮৪৪ খ্রিষ্টাব্দে আঠারো অথবা উনিশ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য   বিভিন্ন দেশ  ভ্রমণ করেন।

قال الذهبي: “وطلب العلم في صغره”. فأول رحلاته رحمه الله كانت في سنة 230 هجرياً، وهو ابن خمس عشر سنة، ليسمع من الشيخ قتيبة بن سعيد البغلاني وأقام عنده سنة وشهرين. وواصل الإمام النسائي رحلاته العلمية إلى خرسان، ثم رحل إلى الحجاز، والجزيرة، ومصر، والشام، والعراق، واستقر أخيراً بمصر

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন,

رحلتي  الأولى إلى قتيبة بن سعيد وكانت فيسنة ثلاثين ومائتين  اقمت عنده سنةوشهرين

My first trip to Qutaiba bin Saeed, which was thirty and two hundred years, stayed with

অর্থ :আমি ২৩০  হিজরীতে সর্বপ্রথম কুতায়বা ইবনু সাঈদের নিকট গমন করি এবং তাঁর সান্নিধ্যে এক বছর  দুমাস অবস্থান করিএ সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র পনের বছর।

হাফেয ইবন কাসীর রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন,

رَحَلَ إِلَى الْآفَاقِ،  وَاشْتَغَلَ بِسَمَاعِالْحَدِيْثِ وَالِاجْتِمَاعِ بِالْأَئِمَّةِ الْحُذَّاقِ، وَمَشَايِخُهُ  الَّذِيْنَرَوَى عَنْهُمْ مُشَافَهَةً

 He departed to the horizons, and worked in listening to the hadith and meeting with the profound imam and his sheikhs whom he named

অর্থ :তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করেন এবং অভিজ্ঞ ইমামগণের নিকট থেকে হাদীস শ্রবণে মনোনিবেশ করেন। আর যাদের নিকট থেকে তিনি মুখে মুখে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাঁদের নিকট থেকেও হাদীস শ্রবণ করেন।[

قتيبة بن سعيد البلخي أبو رجاء (150 هـ - 240 هـ). إمام حافظ محدث، رحَّآلة، صاحب سنة، سمع مالكًا والليث وطبقتهما. وروى عنه الجماعة سوى ابن ماجه. كتب الحديث عن ثلاث طبقات، وروى له البخاري 308 أحاديث، ومسلم 668 حديثًا

*শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন,

তিনি অনেক বড় বড় শায়খের  সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি খুরাসান, হিজায, ইরাক, জাযীরা, শাম, মিশর প্রভৃতি শহরে  পরিভ্রমণ করেন

 *ইউসুফ  আল-মিযযী রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন,

(طاف البلاد وسمع بخراسان والعراق والحجازومصر والشام والجزيرةمن جماعة

He toured the country and heard of Khorasan, Iraq, Hijaz, Egypt, the Levant, and Al Jazeera from a group of muhadhit.

অর্থ :তিনি বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং খোরাসান, ইরাক, হিজায, মিসর ও জাযীরার একদল মুহাদ্দিছের নিকট থেকে হাদীছ শ্রবণ করেছেন

শামসুদ্দীন আয যাহাবী বলেন রাহমাতুললাহ আলাইহি , ‘জ্ঞান অন্বেষণের জন্য তিনি

*খোরাসান (এশিয়ার একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল।প্রাচীন গ্রিক ভৌগলিক এরাতোস্থেনিস (২৭৬ খ্রিঃ পূঃ - ১৯৫/১৯৪ খ্রিঃ পূঃ)তার ভূগোলে পরবর্তীকালে খোরাসান বলে পরিচিত এই সমগ্র ভূখণ্ডটিকে 'এরিয়ানা' বলে অভিহিত করেন। মধ্যযুগে বর্তমান ইরানের উত্তরপূর্ব অঞ্চল, প্রায় সমগ্র আফগানিস্তান, দক্ষিণ তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল এই খোরাসানের অন্তর্ভুক্ত বলে পরিগণিত হত। )

বাগদাদ

বাগদাদ ইরাকের রাজধানী। দজলা নদীর তীরে অবস্থিত এ শহরটি ৮ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।আব্বাসীয় খিলাফতের আমলে এটি রাজধানীতে পরিনত হয়। প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই বাগদাদ মুসলিম বিশ্বের এক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত হয়েছিল। অন্যতম কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (যেমন, বাইতুল হিকমাহ) সহ বহুবিধ জাতিগোষ্ঠি ও বহুবধর্মীয় ব্যক্তিবর্গের আতিথ্যের জন্য এই শহরটি "জ্ঞানের শহর" হিসাবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছিল। )

হিজায,

(বর্তমান সৌদি আরবের পশ্চিম অংশ। এর পশ্চিমে লোহিত সাগর, উত্তরে জর্ডান, পূর্বে নজদ ও দক্ষিণে আসির অবস্থিত।এর প্রধান শহর জেদ্দা। তবে ইসলামের পবিত্র শহর মক্কা ও মদিনার জন্য এই অঞ্চল অধিক পরিচিত। ইসলামের পবিত্র স্থানের অবস্থানের কারণে হেজাজ আরব ও ইসলামি বিশ্বে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমে তিহামাহ থেকে পূর্বের নজদকে পৃথক করেছে বলে এই অঞ্চলের এরূপ নাম হয়েছে। এটি "পশ্চিম প্রদেশ" বলেও পরিচিত[)

ইরাক,

(সরকারিভাবে ইরাক প্রজাতন্ত্র, একটি মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র। বাগদাদ ইরাকের রাজধানী। ইরাকের দক্ষিণে কুয়েত এবং সৌদি আরব, পশ্চিমে জর্ডান, উত্তর-পশ্চিমে সিরিয়া, উত্তরে তুরস্ক এবং পূর্বে ইরান (কোর্দেস্তন প্রদেশ (ইরান)) অবস্থিত।

সিরিয়া,

(উর্বর সমতলভূমি, উচ্চ পর্বত এবং মরুভূমির একটি দেশ। সিরিয়ায় বিভিন্ন জাতিগত এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী: সিরিয়ান আরব, গ্রীক, আর্মেনিয়ান, আসিরিয়ার, কুর্দি, কার্কাসিয়ান, মানডিয়ান্স এবং তুর্কি সহ। ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর অন্তর্ভুক্ত: সুন্নি, খ্রিস্টান, আলাউই, ডুরজ, ইসমাঈল, মান্দিয়া, শিয়া, সালাফি, ইয়াসীদ ও ইহুদীরা। সুন্নি বৃহত্তম ধর্মীয় গ্রুপ তৈরী করেন সিরিয়ায়।) )

*সিরিয়া(=ইরাক,

 মিসর

আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণে ও এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত একটি আন্তঃমহাদেশীয় ভূমধ্যসাগরীয় রাষ্ট্র। এর পূর্ণ সরকারী নাম মিশর আরব প্রজাতন্ত্র। প্রাচীন যুগে মিশর সমগ্র বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সভ্যতা ছিল।) এবং সীমান্ত এলাকায় ভ্রমণ করেন। অতঃপর  মিসরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর শিক্ষকবৃন্দ

(Teachers of Imam Nasai Rahmatullah Alaihi)

 ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি ববিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ইলমুল হাদীসে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। খ্যাতিমান শায়খের নিকট শৈশবকালে শিক্ষার্জন করেন।তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিসগনের আলোচনা করা হয়েছে।

إن الإمام النسائي ممن طاف البلاد، ورحل وذاكر وجالس الكبار من المحدثين فليس من العجب أن يكون في شيوخه كثرة، وقد سرد الذهبي في ترجمته أكثر من (70) شيخاً من شيوخه، ومن أشهر شيوخه:

*قتيبة بن سعيد البغلاني (ت240 هـ).

*علي بن حجر المروزي (ت244 هـ).

*أحمد بن منيع صاحب المسند (ت244 هـ).

*عبد الرحمن بن إبراهيم _ محدث الشام المعروف بدحيم_ (ت245 هـ).

*أبو كريب محمد بن العلاء الهمداني _محدث الكوفة _ (ت248 هـ).

*عمرو بن علي الفلاس (ت249 هـ).

*الحارث بن مكسين (ت250 هـ).

*محمد بن بشار (ت252 هـ).

*يونس بن عبد الأعلى (ت264 هـ).

*হুমাইদ ইবনে মাখলাদ (মৃঃ ২৪৪ হিঃ),

*আম্মার ইবনুল হাসান (মৃঃ ২৪২ হিঃ)

কুতাইবা ইবনু সাঈদ (মৃঃ ২৪০ হিঃ)-

*ইসহাক ইবনু রাহওয়াইহ রাহমাতুললাহ আলাইহি

*মুহাম্মাদ ইবনু নযর,

*আলী ইবনু হাজার,

*ইউনুস ইবনু আব্দুল আলা

*, মুহাম্মাদ বিন বাশার,

*ইমাম আবূ দাঊদ সিজিস্তানী প্রমুখ।

ইবনু হাজার আসক্বালানী  রাহমাতুললাহ আলাইহি ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহিকে ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর শিক্ষক হিসেবে মনে করেন।

*আবু যুরআ রাহমাতুললাহ আলাইহি

*আবু হাতিম আর-রাযী ররাহমাতুললাহ আলাইহি *বিশর ইবনে হেলাল,

*আল-হাসান ইবনুস সাববাহ আল-বাযযার, *আম্মার ইবনে খালেদ আল-ওয়াসিতী,

*ইমরান ইবনে মূসা আল-কাযযায প্রমুখ

সুনানে কুবরাতে ইমাম নাসাঈ (রহঃ) ৪০৩ জন শিক্ষকের নিকট থেকে এবং সুনানে  সুগরা তথা সুনানে নাসাঈতে ৩৩৫ জন শায়খের নিকট থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

ইবন আসাকিরে রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন, তাঁর শিক্ষকের সংখ্যা ৪৪৪ জন।

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর ছাত্রবৃন্দ

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি বিভিন্ন এলাকা ভ্রমণ করে ইলমুল হাদীসের দারসে প্রদান করেন। দেশ-বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি হাদীসের দারস প্রদান শুরু করেন। অনেক শিক্ষার্থী তাঁর নিকট থেকে ইলমুল হাদীস শিক্ষা লাভ করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো -

 Imam -  Nasai - was the imam of his time in his time, and the students ’journey to him was flowing, due to the longevity of his ninety years and the height of his chain of transmission in the hadith.  Then he settled in Egypt, and his preservation is gone, and there is no match left for

আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন,  মিসরে তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু  করেন এবং সেখানে তাঁর রচনাবলী  প্রঢার-প্রসার লাভ করে। অনেকে তখন তার নিকট থেকে ইলমুল হাদীসের গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। অতঃপর তিনি সেখান দামেশকে চলে আসেন । তাঁর ছাত্রদের  মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন-

وتلاميذ الإمام النسائي كثيرون، ذكر المزي منهم سبعة وخمسين نفساً، وأوصلهم السخاوي إلى خمسة وستين نفساً، ومن أشهر تلاميذه:

* أبو بشر محمد بن أحمد بن حماد الدولابي صاحب الكنى (ت310 هـ).

* أبو عوانة يعقوب بن إسحاق الإسفراييني صاحب المستخرج على مسلم (ت316 هـ).

* أبو جعفر أحمد بن محمد بن سلامة الطحاوي الحنفي (ت321 هـ).

* أبو جعفر محمد بن عمرو العقيلي صاحب الضعفاء الكبير (ت322 هـ).

* ابنه: عبد الكريم (ت344) أحد رواة السنن الصغرى عنه.

* أبو سعيد ابن يونس صاحب تاريخ مصر (ت347 هـ).

* أبو حاتم محمد بن حبان البستي صاحب الصحيح (ت354 هـ).

* أبو القاسم سليمان بن أحمد الطبراني صاحب المعاجم الثلاثة (ت360 هـ).

* أحمد بن محمد بن إسحاق بن السني، (ت 364 هـ) أحد رواة السنن الصغرى عنه.

* أبو أحمد عبد الله بن عدي الجرجاني الحافظ صاحب الكامل في الضعفاء (ت365 هـ).

 এ ছাড়া আহমাদ ইবনুল হাসান আর-রাযী রাহমাতুললাহ আলাইহি

, *আবুল হাসান আহমাদ আর-রামলী,রাহমাতুললাহ আলাইহি

* আবু জাফর আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ আন-নাহবী,

* আবু সাঈদ আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনুল আরাবী,

আবু জাফর আহমাদ আত-তাহাবী প্রমুখ।

সুনানু নাসাঈ  সংকলন  ইতিবৃত্ত

History of Sunanu Nasai Compilation )

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি তার সুনান সংকলন সম্পর্কে বলেন,

لما عزمت علىجمع كتاب السنناستخرت الله تعالىفي الرواية عنشيوخ كان في القلب منهم بعضالشيء فوقعت الخيرةعلى تركهم فنزلتفي جملة منالحديث كنت أعلوفيه عنهم

When I intend to collect the book of the Sunnah, God Almighty made fun of the novel about an sheikh, there was something in the heart of them.

-অর্থ :যখন আমি সুনানে নাসাঈ সংকলন করতে  দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হলাম, তখন কিছু শায়খ থেকে হাদীছ বর্ণনা করার ব্যাপারে আমার অন্তরে  খটকা সৃষ্টি হলে আমি আল্লাহর দরবারে ইস্তেখারা করলাম। অতঃপর তাদের হাদীছ  পরিত্যাগের বিষয়ে কল্যাণকর ইঙ্গিত পেলাম। ফলে আমি তাতে এমন কিছু হাদীছ সন্নিবেশিত  করিনি, যেগুলো তাদের নিকট থেকে আমার নিকট উচ্চতর সনদে পৌঁছেছিল

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি সর্ব প্রথমে আস-সুনানুল কুবরা’ (السنن الكبرى ) নামে একটি বৃহৎ হাদীস গ্রন্থ  সংকলন করেন।

যার মধ্যে   সহীহ ও যঈফ হাদীসের সংমিশ্রণ ছিল।  এ সম্পর্কে আল্লামা আবু যাহূ বলেন,  ইমাম নাসাঈ (রহঃ) বিশুদ্ধ ও ত্রুটিযুক্ত হাদীছ সম্বলিত আস-সুনানুল কুবরাগ্রন্থ  প্রণয়ন করেন। অতঃপর একে

وكتاب (المجتبى) هذا يسير على طريقة دقيقة تجمع بين الفقه وفن الإسناد ، فقد رتب الأحاديث على الأبواب ، ووضع لها عناوين تبلغ أحيانًا منزلة بعيدة من الدقة ، وجمع أسانيدالحديث الواحد في موطن واحد

জামালুদ্দীন বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ বিন কাসিম বিন হাল্লাক আল কাসেমী রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন, ‘ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি প্রথমে আস-সুনানুল কাবীরনামক একটি গ্রন্থ সংকলন করেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। হাদীসের বিভিন্ন সূত্র সংবলিত এমন গ্রন্থ আর কেউ রচনা করতে সক্ষম হয়নি

*ইজ্জ আল-দীন আবি আল-হাসান আল-জাজারী আল-মাওসিলী ইবনুল আসীর রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন, ফিলিস্তীনের রামাল্লার *(পশ্চিম তীরে অবস্থিত ফিলিস্তিনের একটি শহর। এটি জেরুজালেম থেকে ১০ কিলোমিটার (৬.২ মা) উত্তরে এবং সমুদ্র সমতল থেকে ৮৮০ মিটার (২,৮৯০ ফু) উচুতে অবস্থিত। রামাল্লাহ বর্তমানে ফিলিস্তিন জাতীয় কর্তৃপক্ষের বিধিসম্মত (ডি ফেক্টো) প্রশাসনিক রাজধানী হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি ঐতিহাসিকভাবে একটি আরবীয় খ্রিস্টান শহর। বর্তমানে এটি মুসলমান অধ্যুষিত শহর, ২০০৭ সালে গননা অনুসারে যা প্রায় ২৭,০৯২ জন। সংখ্যালঘুদের মধ্যে খ্রিস্টান সম্প্রদায় অন্যতম।)

আমীর ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি -কে জিজ্ঞেস  করলেন, আপনার সংকলিত আস-সুনানুল কুবরা’-তে সন্নিবেশিত সকল হাদীসই কি সহীহ? উত্তরে  তিনি বললেন, না। এতে সহীহ ও যঈফ মিশ্রিত আছে। তখন আমীর তাঁকে বললেন, এ গ্রন্থ থেকে  শুধু সহীহ হাদীসগুলো চয়ন করে আমাদের জন্য একটি বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থ সংকলন করুন। এ  প্রেক্ষিতে তিনি আস-সুনানুল কুবরার যে সকল হাদীসের সনদে ত্রুটি আছে বলে অভিযোগ  ছিল, সেগুলো বাদ দিয়ে সুনানুল মুজতাবাসংকলন করেন। অনেক আলিম এ মত সমর্থন করলেও ইবন আসাকিরে এটা সমর্থন করেন না।

ইবনু আসাকির রাহমাতুললাহ আলাইহি বর্ণনা করেছেন, এ গ্রন্থটির নাম اَلْمُجْتَنَى অথবা اَلْمُجْتَبَى উভয়টিই সমার্থক শব্দ। তবে শেষোক্ত اَلْمُجْتَبَى শব্দটিই অধিক প্রসিদ্ধ। যখন কোন মুহাদ্দিছ  হাদীছ বর্ণনা শেষে বলবেন, اِنَّ النَّسَائِىَّ رَوَىحَدِيْثًا

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি হাদীসটি স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেছেন, তখন এটা দ্বারা সুনানুল মুজতাবাকেই বুঝাবে, সুনানুল কুবরাকে নয়।

] উল্লেখ্য, এটিই সুনানে নাসাঈনামে পরিচিত। মুজতাবাশব্দের অর্থ হ  বাছাইকৃত চয়নকৃত, নির্বাচিত এবং মুজতানাশব্দের অর্থ হল সংগৃহীত বা আহরিত ফল।

সুনানে নাসাঈর হাদীস ও অধ্যায় সংখ্যা : ইবনুল  আসীর এর মতে, *সুনানে নাসাঈতে সংকলিত হাদীস সংখ্যা ৪৪৮২টি।

*শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানীর গণনা অনুযায়ী নাসাঈর মোট হাদীছ সংখ্যা ৫৭৫৮] এতে মোট একান্নটি কিতাব (অধ্যায়) রয়েছে। সুনান  গ্রন্থসমূহের মধ্যে আলোচ্য বিষয় এবং হাদীসের দিক দিয়ে সুনানে নাসাঈ বিশদ ও ব্যাপক।

ইমাম নাসাঈ  রাহমাতুললাহ আলাইহি এ গ্রন্থ সংকলনে ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি ও ইমাম মুসলিম রাহমাতুললাহ আলাইহি এর রীতি অনুসরণ  করেছেন এবং তাঁদের উভয়ের প্রবর্তিত মানহাজ বা নীতির মধ্যে সমন্বয় সাধন করেছেন।

قال قاضي مصر أبو القاسم عبدالله بن محمد بن أبي العوام السعدي : حدثنا أحمد بن شعيبٍ النَّسَائي، أخبرنا إسحاق بن راهويه، حدثنا محمد بن أعين قال: قلتُ لابن المبارك: إن فلانًا يقول: مَن زعم أن قوله تعالى: ﴿ إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي ﴾ [طه: 14] مخلوقٌ، فهو كافرٌ،فقال ابن المبارك: صدق

، قال النَّسَائي: بهذا أقول

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি শিআ হিসেবে অভিযোগ প্রদান

*১)ইবন খাল্লকান রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন, ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি শিআ আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন

قد ذكر جماعةٌ من أهل العلم أن الإمامَ النسائيَّ كان متشيعًا: قال ابنُ خلِّكان [ في الوفيات (1/ 77)]: "وكانَ يَتَشيَّع"

*২)শাযখুল ইসলাম ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর উপর শিআ অভিযোগ উঠেছে

 وقال شيخ الإسلام [ منهاج السنة (7/ 373)]: "وتشيَّع بعض أهلِ العلم بالحديثِ؛ كالنسائيِّ

*৩)ইমাম শামসুদ্দীন আল যাহাবী রাহমাতুললাহ আলাইহিম বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার প্রতি শিআর প্রতি দুর্বলতা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন

وقال الذَّهبي [ السير أعلام النبلاء  (14/ 133]  "فيه قليل تَشَيُّعٍ وانحرافٍ عنْ خُصو الإمام علي كمعاويةَ وعمروٍ، والله يُسامحه". والذي دعاهم إلى وصفه بذلك هو تَصنيفُه لكتابَ "خصائص علي رضي الله عنه"، وتُنْظَر قصة تصنيفِه للكتاب في [ بغية الراغب المتمني) للحافظ السخاوي (ص120-121

অনেকেই এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেছেন। তারা জবাব দিতে গিয়ে বলেন,

ক) *

إذا عُلِم هذا! فَمَنْ وُصِفَ من أهل العلم المتقدِّمين بالتَّشَيُّعِ،

إنَّما هُو في تقديم عليٍّ على عثمانَ في الفضل لاَ فِي الْخِلافةِ.

*খ)

أن الإمام النسائي قد بين سببَ تأليفِه لكتاب "خصائص علي رضي الله عنه" في قوله: "دخلتُ دمشق والمنحرفُ عن عليٍّ بها كثير، فصنَّفتُ كتاب "الخصائص" رجاءَ أن يهديَهم الله".

*গ)

قال الحافظُ ابنُ عساكر مُعلقًا على هذه القصة: "هذه الحكاية لا تَدلُّ على سوءِ اعتقادِ أبي عبد الرحمن في معاوية بن أبي سفيان، وإنما تَدلُّ على الكفِّ في ذكره بِكُلِّ حال" ثم روَى بإسنادِه إلى أبي الحسين علي بن محمد القابسيِّ قال: سمعت أبا عليٍّ الحسن ابن أبي هلال يقول: سُئل أبو عبد الرحمن النسائي عن معاوية بن أبي سفيان صاحبِ رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقال: إنما الباب كدار بها باب، فباب الإسلام الصحابة، فمن آذَى الصحابة إنما أراد الإسلام، كمن نقر الباب؛ إنما يريد دخول الدار، قال: فمن أراد معاوية، فإنما أراد الصحابة" [ تهذيب الكمال (1/339)].

*ঘ)

يُؤيِّد ما تقدَّم أنه لما ألَّف "مَناقب الصحابة" ذكَرَهم في ترتيب مناقبِهم على ترتيبهم في الخلافة، فقال مُعنوِنًا: "كتاب المناقب/ مناقب أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم من المهاجرين والأنصار والنساء".

*চ)

قول النسائي لَمَّا طُلِبَ منه أن يُخرجَ فَضائل معاوية رضي الله عنه قال: "أيَّ شيءٍ أُخرج؟! (اللهم لا تُشْبِعْ بَطنَه)!".

* ছ)

لَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ أُوْلَئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى} [الحديد : 10].

وعليٌّ زيادةً على ما سبق؛ فهو رابعُ الخلفاء الرَّاشدين، وأحدُ العَشرةِ الْمُبَشَّرين بالجنَّة، ومنْ أهلِ بَدرٍ، ومِمَّنْ بَايعَ تَحتَ الشَّجرةِ، وغيرها منَ الفَضَائلِ الكثيرة رضي اللهُ عنِ الجميعِ.

*জ) أن التَّشيُّعَ الَّذي أطلقهُ العُلَماء هُو عَلَى مَنْ فضَّل عليًّا علَى عُثمانَ لا مَنْ فَضَّل عليًّا علَى مُعَاويةَ رضي الله عن الجميع، والإمامُ النَّسائيُّ لَمْ يَذْكُرْ عُثْمَان رضي الله عنه البتَّة، ولا فَضَّل عليًّا عليه؟! فتأمَّل.


মুহাদ্দিসগনের দৃষ্টিকোণ থেকে সুনানে নাসাঈর  মূল্যায়ন

(Evaluation of Sunan Nasai from the point of view of muhaddiths)

 সহীহ বুখারী ও সহীহ -মুসলিমের পর অন্যান্য সুনান  গ্রন্থের তুলনায় সুনান নাসাঈ’-তে যঈফ হাদীস ও সমালোচিত রাবী অনেক কম আছে। এর নিকটবর্তী  হল সুনানে আবূ দাঊদ ও তিরমিযী। অন্যদিকে সুনান ইবন মাজাহ তার ষষ্ঠ অবস্থানে আছে । অবশ্য অনেক মুহাদ্দিস মনে করেন  সুনান আবু দাউদ   সুনান নাসাঈ থেকে উত্তম।

সুনান নাসাঈ  এর ব্যাপারে তাদের অভিমত,

هو أبو عبد الرحمن أحمد بن شعيب الخراساني، ولد سنة 215هـ، وكان إمام عصره في علوم الحديث، وقدوتهم في معرفة الجرح والتعديل، توفي – رحمه الله- سنة 303هـ.

سنن النَّسائي: صنَّف النسائي "سننه الكبرى" التي تُعتبَر أقل الكتب - بعد الصحيحين - حديثا ضعيفا ورَجُلاً مجروحا، ثم استخلص منه "السنن الصغرى" وتسمى " المجتبى" وهذا الكتاب هو أقل السنن حديثاً ضعيفاً وعدد أحاديثه 5761 حديثاً.

*ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি তাঁর সংকলিত সুনানুল কুবরা’-(السنن الكبرى) কে  পরিমার্জন ও সংক্ষেপ করে সুনানু  সুগরাকে সুনান আন নাসাঈসংকলন করেন। আবূ আব্দুর রহমান আহমদ ইবন শুযাইব আন নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন,

كتاب  السنن كله  صحيح وبعضه معلول والمنتخب المسمى  بالمجتبى صحيح كله

The book of the Sunan is all correct , some of it is malul, and the team named Mujtaba is all correct.

অর্থ :সুনানুল কুবরা’-এর সব হাদীস সহীহ । তবে কিছু  কিছু হাদীসের সনদ ত্রুটিযুক্ত। আর মুজতাবাতথা সুনানে নাসাঈতে নির্বাচিত সব হাদীস সহীহহ।এর দ্বারা বুঝা যায় যে, أصح الكتاب بعد الصحيحين

*মুহিব আল-দিন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ বিন ওমর বিন মুহাম্মদ আল-ফিহরি আল-সাবতি  ইবনে রুশাইদ (মৃত্যু ৭২১ হিজরী ) বলেন,

সুনান পর্যায়ে  হাদীসের যত গ্রন্থ প্রণয়ন করা হয়েছে, তন্মধ্যে সুনান নাসাঈ অভিনব রীতিতে প্রণয়ন করা  হয়েছে। সুনানে নাসাঈতে বিন্যাস পদ্ধতি ও সজ্জায়নও অতি চমৎকার। এতে সহীহ বুখারী ও  সহীহ মুসলিম উভয়ের রচনারীতির মধ্যে চমৎকার সমন্বয়  করা হয়েছে। সাথে সাথে হাদীসের ত্রুটিও এতে বর্ণনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে সুনান নাসাঈ একটি শক্তিশালী কিতাব।

*আবু যাহূ আল-হাদীস ওয়াল মুহাদ্দিসুননগ্রন্থে  বর্ননা করেন,

, ‘সুনানে নাসাঈতে অনুসৃত  ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি -এর শর্ত  সহীহাইনের পর সবচেয়ে বেশী সুদৃঢ় শর্ত। যা তাঁকে  মুহাদ্দিসগনের দৃষ্টিতে উচ্চ মানে সমাসিন করেছে।

* তিনি আরো বলেন, ‘মুজতাবা  তথা সুনানে নাসাঈতে যঈফ এবং সমালোচিত রাবী বর্ণিত হাদীস খুবই কম রয়েছে। এ গ্রন্থে

হীহাইনের পরে এবং এটি সুনানে আবূ দাঊদ ও সুনানে তিরমিযীর চেয়ে অগ্রগণ্য।

আল-কাবসি হলেন আবু আল-হাসান আলী বিন মুহাম্মদ বিন খালাফ আল-মা'আফারিবলেন, ‘মুহাদ্দিসগনের  বর্ণিত হাদীস সমূহের প্রতি যখন তুমি লক্ষ্য করবে, তখন এ কথা বুঝতে পারবে যে, ইমাম  নাসাঈ (রাহমাতুললাহ আলাইহি এর সংকলিত হাদীস অপরের সংকলিত হাদীসের তুলনায় বিশুদ্ধতার অধিক অগ্রগতি।

* আবূ নসর তাজদ্বীন আবদ-ওহহাব বিন আলী বিনআবদ-কাফি -সুবকি  স্বীয় পিতা তাকীউদ্দীন সুবকী ও হাফিয শামসুদ্দীন যাহাবী থেকে  বর্ণনা করেছেন,

وانسننه أقل السنن  بعدالصحيحين حديثا ضعيفا- ‘

অর্থ :সহীহাইনের পর অন্যান্য সুনান  গ্রন্থ সমূহের চেয়ে সুনানে নাসাঈতে কম সংখ্যক যঈফ হাদীস আছে ।পরিশেষে বলতে পারি যে, ইলমুল হাদীসের কুতুব সিত্তাহ বা  الصحاح الستة এর মধ্যে সনান নাসাঈ সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম এর পর ধরতব্য।

قال الدارقطني فيه أنه "مقدم على كل من* يذكر بهذا العلم من أهل عصره" ، وقال: "كان أفقه مشايخ مصر في عصره ، وأعرفهم بالصحيح والسقيم من الآثار وأعلمهم بالرجال" ، وقال: "لا أقدم على النسائي أحدا" *وقال الذهبي: "حافظ أحفظ من مسلم بن الحجاج"،

*وقال:"لم يكن أحد على رأس الثلاثمائة أحفظ من النسائي ، هو أحذق بالحديث وعلله ورجاله من مسلم ، ومن أبي داود ، ومن أبي عيسى الترمذي ، وهو جار في مضمار البخاري وأبي زرعة

হাদীস গ্রহণে ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি -এর শর্তাবলী (Conditions of Imam Nasai Rahmatullah Alaihi for accepting Hadith)

ونقل محمد بن معاوية الأحمر الراوي عن النسائي أنه قال : كتاب السنن كله صحيح، وبعضه معلول، إلا أنه لم يبين علته، والمنتخب منه المسمى بالمجتبى صحيح كله ( النكت على ابن الصلاح

Muhammad ibn Muawiyah al-Ahmar al-Rawi narrated on the authority of al-Nasa’i that he said: The book of the Sunnah is all correct, and some of it is valid, except that it did not explain his reason, and the elected one from him called Al-Mujtaba is all correct (jokes on Ibn Al-Salah

১. সহীহ হাদীসের প্রধান দুটি গ্রন্থ সহীহ বুখারী ও  সহীহ মুসলিমে যেসব হাদীছ সন্নিবেশিত হয়েছে সেসব সনদসূত্রে বর্ণিত হাদীস অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। এ ব্যাপারে উম্মাতের ইজমা হয়েছে।

২ সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম .  যে শর্ত অনুসৃত হয়েছে তাতে উত্তীর্ণ সকল হাদীসই  তার নিকট গ্রহণযোগ্য।

৩. ক) যেসব হাদীছ সর্বসম্মতভাবে ও মুহাদ্দিসগনের  ঐক্যমতের ভিত্তিতে পরিত্যক্ত তা গ্রহণীয় নয়।

 খ) পক্ষান্তরে হাদীসের যেসব সনদ মুত্তাছিল(المتصل) তথা ধারাবাহিক বর্ণনা পরম্পরাসূত্রে কোন বর্ণনাকারীই উহ্য নয়, তা অবশ্যই গ্রহণীয়।

গ) মূল হাদীস সহীহ হলে এবং মুরসাল’ (مُرْسَلٌ) কিংবা মুনকাতি‘ (مُنْقَطِعٌ) না হলে তাও গ্রহণযোগ্য।

৪. চতুর্থ পর্যায়ের বর্ণনাকারীদের মধ্যে উত্তম বর্ণনাকারী হতে বর্ণিত হাদীস ও গ্রহণযোগ্য।

এসব শর্ত ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি ও ইমাম আবূদাঊদ রাহমাতুললাহ আলাইহি -এর নিকট সমভাবে গৃহীত।

 কিন্তু কয়েকটি ক্ষেত্রে ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এর আরোপিত শর্ত ইমাম আবূদাঊদ অপেক্ষাও অধিক শক্তিশালী।

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি হাদীস গ্রহণের ব্যাপারে বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। তাদের অবস্থা সম্পর্কে অধিকতর খোঁজ-খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করেছেন। এ কারণেই ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এমন অনেক বর্ণনাকারীর বর্ণিত হাদীস গ্রহণ করেননি, যাদের নিকট থেকে ইমাম আবূদাঊদ রাহমাতুললাহ আলাইহি ও ইমাম তিরমিযী রাহমাতুললাহ আলাইহি হাদীছ গ্রহণ করেছেন।

*হাফেয ইবনে হাজার আসক্বালানী  রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন, ‘

قال ابن حجر: "وذلك أن كل طبقة من نقاد الرجال لا تخلو من متشدد ومتوسط ، فمن (الأولى) :شعبة وسفيان الثوري وشعبة أشد منه

এমন অনেক বর্ণনাকারী আছেন, যাদের নিকট থেকে ইমাম আবুদাঊদ ও তিরমিযী রাহমাতুললাহ আলাইহি হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি ) তাঁদের বর্ণিত হাদীছ গ্রহণ করা হতে বিরত থেকেছেন; বরং বুখারী ও মুসলিমের একদল বর্ণনাকারীর নিকট থেকে হাদীস বর্ণনা থেকেও ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি বিরত থেকেছেন।

*হাফেয আবু আলী আন-নিসাপুরী বলেন

,للنسائي شرط فيالرجال أشد منشرط البخاري ومسلم

a condition in men is more severe than Al-Bukhari and Muslim

 হাদীস গ্রহণে ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি -এর শর্ত ইমাম বুখারী ও মুসলিম  রাহমাতুললাহ আলাইহি -এর শর্তের চেয়েও কঠিন

وقد قال الحافظ سعد بن علي الزنجاني (471 ه) أنَّ لأبي عبدالرحمن (النسائي) شرطا في الرجال أشد من شرط البخاري ومسلم۔

*ড. আবু জামীল আল-হাসান বলেছেন, ‘এটা সুস্পষ্ট যে, আবু আলী আন-নিসাপুরীর উক্ত কথা অতিরঞ্জন ও বাড়াবাড়ি। কেননা হাদীছ গ্রহণে ইমাম বুখারী ও মুসলিমের শর্তাবলী শীর্ষস্থানীয়।আসলে এটা তার নিজের দৃষ্টিকোণ এখানে বিশুদ্ধ কী না? এটা বিষয় নয়।

وقد بيّن النسائي ذلك فقال: "لا يترك الرجل عندي حتى يجتمع الجميع على تركه، فأما إذا وثقه ابن مهدي وضعفه يحيى القطان مثلا فإنه لا يترك لما عرف من تشديد يحيى، ومن هو مثله في النقد

*আল্লামা হাযেমী রাহমাতুললাহ আলাইহি  বলেন, ‘ইমাম আবুদাঊদ ও নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহিম প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের রাবীদের হাদীস গ্রহণ করেছেন। তবে তাঁরা চতুর্থ স্তর অতিক্রম করেননি

قال السيوطي:  "رأيت بخط الحافظ أبي الفضل العراقي أن* النسائي لما صنف الكبرى أهداها لأمير الرملة ، فقال له : كل ما فيها صحيح ؟ فقال : لا ، فقال :ميِّز لي الصحيح من غيره ، فصنف له

সুনানে নাসাঈর বৈশিষ্ট্য :

(Characteristics of Sunan Nasai)

বৈশিষ্ট্য   শব্দটা বিশেষ্য পদ বিশেষত্ব, অসাধারণ; প্রভেদ, বিশিষ্টতা ইত্যাদি। আরবি ভাষায় একে বলা হয়

الخصائص هي جزء من المعلومات عن عنصر تهيئة.

Sunan Al-Nasa’i  Sunan sugra, known as Sunan Al-Nasa’i, is one of the six hadith books compiled by Imam Ahmad bin Shuaib Al-Nasa’i, who died in the year 303 AH in the city of Ramla in Palestine.

সুনানে নাসাঈ এর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ কারণে এ কিতাবটি অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ থেকে বৈচিত্র্য পূর্ন। অপরাপর হাদীস গ্রন্থ থেকে এর স্বাতন্ত্র্য বিদ্যমান ।

ويخرج الإمام النسائي (أبو عبد الرحمن أحمد بن شعيب (303 ه)) عن كل من لم يُجمع على تركه

যেমন -

*১)  প্রায় তাকরার বা দ্বিরুক্তিমুক্ত : কুতুবুস সিত্তার অন্যান্য গ্রন্থের ন্যায় সুনানে নাসাঈতে তাকরার তথা পুনঃউল্লিখিত হাদীসের সংখ্যা কম। এতে তাকরার হাদীস নেই বললেই চলে।

ميزته في بيان علل الأحاديث المأخوذة من اختلاف الرواة في تراجم النسائي –رحمه الله-، وأهمية الكتاب تكمن في هذا الجانب، لكن العناية بالكتاب من أهل العلم أقل من العناية ببقية الكتب، حتى (سنن ابن ماجه) أكثر عناية من (سنن النسائي)، والسبب في ذلك صعوبة التعامل مع هذه العلل، فالشارح إن تكلم فيها قد لا يحسن الكلام، وإن تركها أخل بأمر عظيم، على أنه تصدى لشرحه بعض الشراح على اختصار

২). ফিক্বহী বিন্যাস : এ গ্রন্থের হাদীস গুলো ফিক্বহী তারতীব অনুযায়ী সুবিন্যস্ত করা হয়েছে।

এ গ্রন্থ শুরু হয়েছে পবিত্রতাঅধ্যায় দ্বারা এবং শেষ হয়েছে পানীয় দ্রব্যের বর্ণনাদ্বারা। অধ্যায় বিন্যাসে মৌলিক অর্থের দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়েছে।

৩). হাদীসের দুর্বোধ্য শব্দের ব্যাখ্যা : এ গ্রন্থে কোন কোন স্থানে হাদীসের দুর্বোধ্য শব্দের ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

যেমন একটি হাদীস উল্লেখ করার পর তিনি বলেন, আর-রিকসুঅর্থাৎ জিনের খাদ্য(*الركس)

অনুরূপভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী, لاَ تُزْرِمُوْهُ  তার পেশাবে বাধা দিও না। এর অর্থে তিনি বলেন, (لاَ تَقْطَعُوْا عَلَيْهِ)  অর্থাৎ তার পেশাব বন্ধ করে দিও না।

৪)সকল বিষয়ের হাদীসের সন্নিবেশ :

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি এ গ্রন্থে জীবনের সকল দিক সম্পর্কিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শাখা-প্রশাখায় হাদীস সন্নিবেশিত করেছেন।যেন একজন পাঠক খব সহজে হাদীসগুলো পাঠ করতে পারে।

৫.) ইলালুল হাদীছ বর্ণনা :

এ গ্রন্থে ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি পৃথকভাবে শিরোনাম নির্ধারণ করে হাদীসের ইল্লত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। হাদীসের ত্রুটি বর্ণনার পর তিনি সঠিকটা উল্লেখ করেছেন। মতানৈক্যের ক্ষেত্রে অধিক প্রাধান্যযোগ্য বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

৬)অধিক রাবী সম্বলিত হাদীস

: ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি স্বীয় গ্রন্থে শক্তিশালী ও সহীহ সনদের ভিত্তিতে হাদীস সন্নিবেশিত করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি দশজন রাবী বিশিষ্ট হাদীস ও উল্লেখ করেছেন।  যেমন তিনি একটি হাদীস উল্লেখ করে বলেন

,ماأعرف إسنادا أطولمن هذا

এর চেয়ে দীর্ঘ সনদ বিশিষ্ট হাদীছ আমার জানা নেই।

৭) অনুচ্ছেদ রচনা :

সুনানে নাসাঈর হাদীছের অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-পরিচ্ছেদগুলো ধারাবাহিকভাবে বিন্যস্ত। এ গ্রন্থের অনুচ্ছেদ-পরিচ্ছেদের শিরোনাম অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য। হাদীস ও শিরোনামের মধ্যে সাযুজ্য বিদ্যমান। এ গ্রন্থে তরজমাতুল বাব সংযোজনে

ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি -এর ফিক্বহী ধারাকে অনুসরণ করা হয়েছে।

৮) স্বল্পসংখ্যক তালীক হাদীস

এ গ্রন্থে ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি অতি স্বল্প সংখ্যক তালীক হাদীছ[ উল্লেখ করেছেন। এ গ্রন্থে প্রায় ১৮০টি তালীক হাদীছ উল্লিখিত হয়েছে।

৯)হাদীসের মান ও স্তর বর্ণনা :

এ গ্রন্থে কখনো কখনো হাদীসের স্তর ও মান বর্ণিত হয়েছে। যেমন একটি হাদীস উল্লেখ করে তিনি বলেন,

هذا حديث منكر  এ হাদীস মুনকাপ্রত্যাখ্যাত’[ অনুরূপভাবে আরেকটি হাদীস উল্লে করে তিনি বলেন

, حديث يحيىبن سعيد هذاإسناده حسن، وهومنكر وأخاف أنيكون الغلط منمحمد بن فضيل.

‘*ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ বর্ণিত এই হাদীছের সনদ হাসান। কিন্তু তিনি প্রত্যাখ্যাত। আমি আশংকা করছি যে, মুহাম্মাদ ইবনে ফুযাইলের ভ্রান্তি রয়েছে

*কখনো তিনি রাবীর ত্রুটি বর্ণনা করেছেন। যেমন তিনি বলেন,

الأوزاعي لميسمع هذا الحديثمن الزهري وهذاحديث صحيح قدرواه يونس، عنالزهري.

আবু আমর আব্দুল রহমান বিন আমর বিন আহমেদ আল-i‘আওযাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি

এই হাদীস যুহরী থেকে শুনেননি। এই হাদীসটি  সহীহ , যা ইউনুস যুহরী থেকে বর্ণনা করেছেন

১০. সনদের অবস্থা বর্ণনা :

এতে মুত্তাছিল, মুনকাতি‘, মুরসাল ইত্যাদি অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন একটি হাদীস উল্লেখ করে তিনি বলেন,

مخرمة لميسمع من أبيهشيئاমাখরামাহ তার পিতা থেকে* কিছুই শুনেনিঅন্যত্র একটি হাদীস উল্লেখ করে তিনি বলেছেন

, الحسن، عنسمرة كتابا، ولميسمع الحسن منسمرة إلا حديثالعقيقة،

হাসান সামুরা এর সংকলন থেকে হাদীসটি গ্রহণ করেছেন। আর হাসান সামুরা থেকে কেবল আক্বীক্বা সম্পর্কিত হাদীসটিই শুনেছেন

১১. অধিক সনদ উল্লেখ :

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি কোন হাদীসের একাধিক সনদ কিংবা একই হাদীসের বিভিন্ন সনদ থাকলে তাও উল্লেখ করেছেন।

وقد جمع النسائي في كتابه أحاديث الأحكام ، وقسمه إلى كتب ، وعدد كتبه (58) كتابـًا ، وقسم كل كتاب إلى أبواب ، ولم يفعل فعل أبي داود والترمذي في الكلام على بعض الأحاديث بالتضعيف ، كما لم يتكلم على شيء من رجال الحديث بالجرح والتعديل ، ولم ينقل شيئـًا من مذاهب فقهاء الأمصار

১২. আহকাম সম্বলিত হাদীস :

ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ স্বীয় সুনান গ্রন্থে আহকাম সম্বলিত হাদীস সন্নিবেশিত করেন।

সুনান নাসাঈর প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যা গ্রন্থ

(Sunan Nasai's famous commentary )

১) د. علي بن محمد العمران، *--شروح سنن النسائي

(الصغرى  ىالشيخ)

২)মোহাম্মদ বিন আলী বিন আদম বিন মুওসা,

(شرح سنن النسائي المسمى ذخيرة العقبى في شرح المجتبى)

৩)আলী বিন মুহাম্মদ আল-ওমরান

(شروح سنن النسائي الصغرى)

৪)আবু আল-আব্বাস আহমেদ বিন আবি আল-ওয়ালিদ বিন রাশদ

(شرح سنن النسائي .)

৫)আলী বিন আবদুল্লাহ ইবনে খালাফ বিন মুহাম্মদ বিন নিআমত

- (" الإمعان في شرح النسائي أبي عبد الرحمن ") .

قال الذهبي في " سير أعلام النبلاء " (6) : " بلغ فيه الغاية من الاحتفال والإكثار

৬) মুহাম্মদ বিন আহমদ আবু আল-মুদাফফার আল-আব্যুরদী

(- كتاب المجتبى من المجتنى في رجال كتاب أبي عبد الرحمن النسائي في السنن المأثورة)

৭)আবু ইসহাক ইব্রাহিম বিন ওমর আল-আলাউই আল-ইয়ামানি

(تعليق على الكتاب)

৮)আবু আল-হাসান মুহাম্মদ বিন আলী আল-হুসেনি

(شرح النسائي)

৯)- আবু হাফস সেরাজউদ্দিন বিন আলী, ইবন আল-মুনাক্কান

(شرح زوائد سنن النسائي) .

১০)- আবী ​​বকর জালালউদ্দিন আবদুর রহমান আল-সুয়ুতি

(زهر الرُّبى على المجتبى .)

১১)নূর আল-দ্বীন মুহাম্মদ বিন আবদুল হাদী আল-মাদানী আল সানাদি

( حاشية على النسائي) .

১২)আবদুল রহমান বিন আহমেদ বিন আল হাসান বিন আলী আল-বাহকালী আল-ইয়ামানি,

-( تيسير اليُسر بشرح المجتبى من السنن الكبرى )

১৩) বিন আল-মুথার বিন ইসমাইল আল-ইয়ামানী

১৪)- আহমেদ বিন যায়েদ বিন আবদুল্লাহ আল-কাবসি আল ইয়ামানী

(شرح سنن النسائي .)

১৫) মোহাম্মদ বিন হামাদ আল্লাহ আত তানাভী

(الحاشية المحمدية على الأخبار النشئية .)

১৬)-আহমদ বিন জাইনি দাহলান আল-মাক্কী

(كتابات على الكتب الستة .)

১৭)আলী বিন সুলেমান আল-দামনতি আল বুজামাবি (عَرْف زهر الرُّبى على المجتبى .)

১৮)মৌলভী ওহিদ উদ্দিন

(روض الربى عن ترجمة المجتبى) .

১৯)জালাল উদ্দিন সুযতী ও সানাদী

(شرح مجموع من شرح السيوطي وحاشية السندي وغيرهما)

২০)- মাওলানা মুহাম্মদ হামাদ,  আল্লাহ  থানাভী রাহমাতুললাহ আলাইহি,

(التقريرات الرائعة على سنن النسائي .)

২১) আবদুল কাদির বিন বদরান আল-রউমী আল-হাম্বলি  (شرح النسائي .)

২২) মুহাম্মদ বিন জাফর আল-কাততানী  রাহমাতুললাহ আলাইহি,

إ(املاءات وتقريرات وضبط على غالب الكتب الستة) .

২৩) মুহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন হাসান আল-আহদাল রাহমাতুললাহ আলাইহি,

(شرح سنن النسائي) .

২৪) মুহাম্মদ আল-মুখতার বিন সৈয়দ আল-জুকনি আল-শানকিটি, (شرح سنن النسائي .)

2৫) মুহাম্মদ আতা আল্লাহ আল ফুজিয়ানী  রাহমাতুললাহ আলাইহি

(التعليقات السلفية على سنن النسائي .)

২৬) মুহাম্মদ বিন আলী বিন আদম ইবনে মুসা আল-আলভী আল-ওলভী

(ذخيرة العُقْبى في شرح المجتبى) .

উপসংহার

(conclusion ) .:

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ আলাইহি একজন  প্রসি3 মুহাদ্দিস, হাফেয ও হুজ্জাতুল্ল হাদীস। তিনি হাদীসের যঈফ ও সহীহ হাদিসের সমালোচক। সুনান নাসাঈ কুতুব আস সিহাহ সিত্তাহ গুরুত্বপূর্ণ একটি কিতাব। অধিকাংশ মুহাদ্দিসগনের মতে, সুনান নাসাঈ সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম পর অন্যতম গ্রন্থ। এ গ্রন্থের অনেক ব্যখ্যাগ্রন্থ রচিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সহীহ হাদীসের উপর আমল করার তাওফীক দান করুন, আমীন ।


লেখক:

প্রফেসর ড. সৈয়দ মাকসুদুর রহমান

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া

 বাংলাদেশ



শেয়ার করুন

Author:

0 coment rios:

You can comment here