সারসংক্ষেপ
(Abstract )
Adh-Dhahabi was born in Damascus on 5 October 1274. He was
of Turkmen ancestry from Mayyafariqin, northeast of Diyar Bakr. At some point,
they moved to Damascus. His name, ibn adh-Dhahabi (son of the goldsmith),
reveals his father's profession. He began his study of hadith at age eighteen,
travelling from Damascus to Baalbek, Homs, Hama, Aleppo, Nabulus, Cairo, Alexandria,
Jerusalem, Hijaz, and elsewhere, before returning to Damascus to teach and
write. He authored many works and achieved wide renown as a perspicuous critic
and expert examiner of the hadith. He wrote an encyclopedic biographical
history and was the foremost authority on the canonical readings of the Qur'an.
Some of his teachers were women. At Baalbek Zaynab bint ʿUmar
b. al-Kindī was among his
most influential teachers.
Adh-Dhahabi lost his sight two years before he died,
leaving three children: the eldest, his daughter, Amat al-`Aziz, and his two
sons, `Abd Allah and Abu Hurayra `Abd al-Rahman. The latter son taught the
hadith masters Ibn Nasir-ud-din al-Damishqi and Ibn Hajar, and through them
transmitted several works authored or narrated by his father.
ভূমিকা (Introduction
)
------------------------------------------------------------------
শামস আদ-দীন আয-যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি অল্পবয়সেই তিনি
ইতিহাসবিদ, জীবনীকার এবং হাদীস শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ হিসাবে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।
ইমাম আয় যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি প্রায় ১০০ টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ
গ্রন্থ রচনা করেন।
হাদীস ও ইতিহাসের পাশপাশি রিজালশাস্ত্রে তার অবদান অপরিসীম।এছাড়া
তিনি চিকিৎসাবিদ্যা নিয়েও কাজ করেছেন।জগৎবিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজার আসকালানী এবং
নাসির আল দিমাশকির তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। তার রচিত কিতাবগুলো থেকে এখনো ইসলামিক
স্কলার ও ছাত্ররা জ্ঞানলাভ করে থাকেন। এই ৭০০ বৎসর যাবত তার কিতাবগুলো পঠন-পাঠন হয়ে
আসছে, এবং এখনো সমান জনপ্রিয়তা
ধরে রেখেছে।হাদীস , ইতিহাস, চিকিৎসা বিজ্ঞান, ফিকহ। একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ইসলামি ইতিহাসবেত্তা। তিনি আয-যাহাবী
নামে পরিচিত। আলোচ্য প্রবন্ধে তার জীবনী এবং
সিয়ার আলামুন নুবালা গ্রন্থ রচনায় তার অবদান বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
নাম ও শরিচিতি
(Name and contact )
------------------------------------------------------------------
الذهبي؛ محمد بن أحمد بن عثمان
بن قايماز الذهبي، شمس الدين، أبو عبد الله - إبراهيم بن منصور الهاشمي
মুহাম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে
উসমান ইবনে কাইয়ুম আবু আব্দআল্লাহ
শামস আদ-দীন আয-যাহাবী
أبو عبد الله شمس الدين محمد
بن أحمد بن عثمان الذهبي
ইমাম আয যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি এরজন্ম গ্রহণ (Brith of
Imam Dhabi )
--------------------------------------------------------------------
আয-যাহাবী ৬৭৩ হিজরি সালে
৩ রবিউল আওয়াল মুতাবেক ৫অক্টোবর ১২৭৪ সালে দামেস্কে জন্মগ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে
ইমাম ওয়ালিদ ইবন মুসলিম রাহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেন,
دخلت الشام عشرة آلاف عين رأت رسول الله }"تاريخ دمشق لابن عساكر
তার পিতামহ উসমানের সময় থেকে তার পরিবার সেখানে বসবাস করে আসছিলো।
তিনি মাঝে মাঝে তার পিতার পেশার কারণে নিজেকে ইবনুল যাহাবী (স্বর্ণকারের পুত্র) হিসেবে
পরিচয় দিতেন।
৫ অক্টোবর, ১২৭৪ খ্রিষ্টাব্দ ইরাকের দামেস্ক শহরে অঞ্চল সিরিয়া
শামস আদ-দীন আয-যাহাবী এর মাজহাব
(The Madhhab of Shams Ad-Din Az-Zahabi)
-----------------------------------------------------------
শামস আদ-দীন আয-যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি শাফে'ই মাজহাবের অনুসারী ছিলেন। তিনি নিজে একজন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস
ও মুজতাহিদ ছিলেন।
শামস আদ-দীন আয-যাহাবীগুরুত্বপূর্ণ অবদান (Important
Contributions of Shams Ad-Din Az-Zahabi)
------------------------------------------------------------------
সিয়ারু আলাম আল-নুবালা,
তারিখ আল ইসলাম আল কাবির,
তাযকিরাতুল হুফফাজ,
আল কাবাইর
তাহজিবুত
তাহজিব
আল কামাল
শামস আদ-দীন আয-যাহাবীযা রাহমাতুল্লাহ আলাইহি যাদের
মাধ্যমে প্রভাবিত হয়েছেন(Shams
Ad-Din Az-Zahabiya Rahmatullah Alaihi through whom he was influenced)
--------------------------------------------------------
ইবনে তাইমিয়া, জয়নব বিনতে উমার আল কিন্দি
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন
ইবনে হাজার আসকালানী,
ইবনে কাসির,
তাজ আল দ্বীন আল সুবকি
শামস আদ-দীন আয-যাহাবী শিক্ষাজীবন(Educational life of Shams Ad-Din Az-Zahabi )
--------------------------------------------------------------
তিনি আঠারো বছর বয়সে হাদিস শিক্ষার জন্য দামেস্ক থেকে বালবেক, হিমস, হামা, আলেপ্পো, নাবুলুস, কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া, জেরুজালেম, হিজাজ ইত্যাদি স্থানে ভ্রমণ করেন । শিক্ষা সমাপ্ত হলে দামেস্ক ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতা
ও হাদিস গবেষণা শুরু করেন। তার শিক্ষকদের মধ্যে ২ জন উল্লেখযোগ্য ইমাম হলেনঃ ইমাম ইবনে
তাইমিয়া এবং ইবনে দাকিকুল ইদ। তিনি ১০০ জনের বেশি নারী ইসলামিক স্কলারের কাছে শিক্ষালাভ
করেন। তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষিকা জায়নাব বিনতে উমার আল কিন্দি ছিলেন বিখ্যাত
নারী মুহাদ্দিস।
শামস আদ-দীন আয-যাহাবী এর শিক্ষকবৃন্দ(Teachers of Shams Ad-Din Az-Zahabi)
---------------------------------------------------------------------------
তার হাদিস, ফিকহ ও আকিদার উল্লেখযোগ্য শিক্ষকগণ হলেনঃ
ইমাম ইবনে তাইমিয়া
ইবনে দাকিকুল ইদ
জায়নাব বিনতে উমার আল কিন্দি
ইবনুল জাহিরি
আবুল হাসান আলি আল মুসালি
শরফুদ্দিন দ্বিমাতি
জামালুদ্দিন দিমাশকি
আহমাদ ইবনে ইসহাক আল মিসরি
আব্দুল খালিক বিন উলওয়ান।
ইমাম আয যাহাবী এর মৃত্যু (Death of Imam jahabi)
-------------------------------------------------------------------------
ইমাম আয-যাহাবি বৃদ্ধ বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন এবং এর
২ বৎসর পর ১৩৪৮ সালে এই মহান ইমাম মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার যে ৩ সন্তান (এক
কন্যা ও দুই পুত্র) জীবিত ছিলেন তারা হলেনঃ একমাত্র কন্যা আমাত আল আযিয এবং ২ পুত্র:
আব্দুল্লাহ ও আবু হুরাইরা আব্দুর রহমান।
ইমাম আল- সুয়ুতি রাহমাতুল্লাহ আলাইহি বলেনঃ
-------------------------------------
বর্তমানকালের হাদিসবিশারদগণ রাবি-সমালোচনা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট
ক্ষেত্রে চারজন মুহাদ্দিসের উপর নির্ভর করেন, যারা হলেনঃ আল মিযযি, আয-যাহাবী, আল ইরাকী এবং ইবনে হাজর আসকালানি।
শামস আদ-দীন আয-যাহাবী এর রচনাবলী
(Book of Shams Ad-Din Az-Zahabi )
----------------------------------------------------------------
সিয়ারু আলাম আল-নুবালা(سير أعلام النبلاء )
তারিখ আল ইসলাম আল কাবির(تاريخ الإسلام الكبير )
তাযকিরাতুল হুফফাজ(تذكرة الحفاظ)
আল কাবাইর(الكباير)
আল তাজরিদ ফি আসমাউল সাহাবা(التهذيب
في أسماء الرجال)
মুখতাসার সুনান আল বায়হাকি(مختصر
سنن البيهقي )
দুওয়াল আল ইসলাম(ضوء الإسلام )
তাবাকাত আল কুরা( الطبقات الكبرى )
আল মুইন ফি তাবাকাত আল মুহাদ্দিসিন( المعين
في طبقات المحدثين )
*আল আমসার আল দাওয়াত আল আসার
*মানাকিব আল ইমাম আবু হানিফা ওয়া সাহিবায়হি আবু ইয়ুসুফ ওয়া
মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান
*মুখতাসার আল মুস্তাদ্রাক লি আল হাকিম
আল মুজাররাদ ফি আসমা রিজাল আল কুতুব আল সিত্তাহ
(مختصر المستدرك لحاكم المحرد في اأسماء رجال الكتب الستة )
(معرفة القراء الكبار على الطبقات والأعصار)
তাহজিবুত তাহজিব আল কামাল
(تهذيب التهذيب الكمال )
*আল কাশিফ ফি মারিফা মান লাহু রিওয়া ফি কুতুব আল সিত্তা
*মুখতাসার কিতাব আল ওয়াহ্ম ওয়া আল ইহাম লি ইবনুল কাত্তান
আল ইবার বি আকবার মান আবার।
(العبر في خبر من عبر)
মিজান আল ইতিদাল ফি নাকদ আল রিজাল(ميزان
الاعتدال في نقد الرجال)
আল মুগণি ফি আল দুয়াফা(المغني في الضعفاء )
নাবা আল দাজ্জাল(نبأ الدجال)
ফাজাল আয়াহ আল কুরসি(فضايل آيات الكرسي )
আল দিনার মিন হাদিস আল মাশায়েখ আল কিবার(الدينار
من حديث المشايخ الكبا ر)
মুখতাসার আল মুহাল্লা লি ইবন হাযম(مختصر
المحلي لابن حزم )
*ديوان الضعفاء والمتروكين
*المشتبه في أسماء الرجال
*دول الإسلام
*المجرد في أسماء رجال سنن ابن ماجه
: المستملح من كتاب التكملة
المقتنى فى سرد الكنى
*আল মুনতাকা মিন তারিখ খাওারিযম লি ইবন আরস্লান
*মান তুকাল্লিমা ফিহি ওয়া হুওয়া মুওয়াসসাক আও সালিহ আল হাদিস
ইমাম শামসুদ্দীন আয যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি এর
উপর রচিত গ্রন্থ
(Books on Imam Shamsuddin Az-Zahabi (may Allah have mercy
on him)
----------------------------------------------------------------------------
*ফুয়াদ আব্বাস (نص رسالة الذهبي الي ابن تيمية )
আহমদ ঈদ আহমদ আল উতফা(مصطلح وثق عند الامام الذهبي في
الكاشف :دراسة تطبيقية)
*সালাহ আল-দীন আল-সাফাদি সালাহ আল-দীন আবু আল-সাফা খলিল বিন আইবাক
বিন আবদুল্লাহ আল-আলবাকি আল-ফারি আল-সাফাদি আল-দামাসেসিন আল-শাফি’ই, (আল-ওয়াফি আল-ওয়াফাত),
*ইবনে দাকমাক (তারজুমান আল-জামান): (ন্যুবুলের ইতিহাস),
* ইবনে শাকির আল-কিতবি (ফাওয়াত আল-ফাতাত): (تاريخ
العلماء النبلاء),
*তাজ-আল-দীন-আল-সুবকি (তাবাকির আল-শাফীযাহ) ( কিতাবুল নুবালা)
*আল-হুসেনি (لذيل على ذيل العبر)
*ইবনে নাসির আল-দীন((الرد الوافر)
*ইবনে হাজার(الدرر الكامنة)،)
*আল-সাখাওয়ী((الإعلان بالتوبيخ)
*দ্বিতীয় মুহাম্মদ বিন ওমর বিন মুসা আবু আবদুল রহমান(ضوابط
الجرح والتعديل عند الحافظ الذهبي)
*শরীফ আব্দুল আযীয
(*الإمام الذهبي شيخ التحقيق والإنصاف)
*আহমদ বিন আবদুল রহিম ইরাকি
(: ذيل الكاشف)
কাসেম আলী সাআদ
(موارد الحافظ الذهبي في كتابه ميزان الإعتدال في نقد الرجال)
*খলিল বিন মুহাম্মদ আরাবী
(السلسبيل في شرح ألفاظ وعبارات الجرح والتعديل)
সিয়ারু আলামিন নুবালা এর বৈশিষ্ট্য
(Features of Siaru Alamin Nubala)
--------------------------------------------------------------------
এই গ্রন্থ যদিও শামসুদ্দীন আয যাহাবী বিভিন্ন নামে নামকরণ করেন
কিন্তু ইমাম সালাহ আল-দীন আল-সাফাদি (আল-ওয়াফি আল-ওয়াফাত), ইবনে দাকমাক (তারজুমান আল-জামান): (ন্যুবুলের ইতিহাস), ইবনে শাকির আল-কিতবি (ফাওয়াত আল-ফাতাত): (تاريخ
العلماء النبلاء), এবং তাজ-আল-দীন-আল-সুবকি (তাবাকির আল-শাফীযাহ) ( কিতাবুল নুবালা):
আল-হুসেনি (لذيل على ذيل العبر) ইবনে নাসির আল-দীন((الرد الوافر) ইবনে হাজার(الدرر الكامنة)،) আল-সাখাওয়ী((الإعلان بالتوبيخ) (سير أعلام النبلاء )(আভিজাত্যের জীবনী।এটিকে
নামকরণ করেন।
সিযারূ আলামুন নুবালা জীবনী গ্রন্থ হিসাবে, এটি সুলতান আহমেদ তৃতীয় লাইব্রেরির ফোল্ডারগুলির স্টাইলে একটি
পাণ্ডুলিপিতে করা হয়েছে যা তাঁর হাতের লেখায় লেখা। লেখকের অনুলিপি থেকে কপি করা হয়েছিল। তাঁর জীবনকালে ৭৩৯- ৭৪৩ হিজরিতে লেখা হয়েছিল, যা সবচেয়ে সঠিক এবং সম্পূর্ণ শিরোনাম।
.আল-যাহাবী তাঁর দুর্দান্ত কিতাব
(تاريخ الإسلام ووفيات المشاهير والاعلام
এর পরে তাঁর সিয়ার
আলামুন নুবালা লিখেছিলেন, যা তিনি ৭১৪ হিজরিতে
প্রথমবারের মতো লেখালেখি শেষ করেছিলেন এবং এরপরে
এটি ৭২৬হিজরিতে পুনরায় লিখেছেন। যেহেতু আয যাহাবী ৭৩২ হিজরিতে বা এর কিছু আগে
তার সিয়ার আলেম আল-নুবালা গ্রন্থ লেখা শুরু করেছিলেন এবং বইয়ের প্রথম অনুলিপিটি ৭৩৯
হিজরীর হিজরের প্রথম দিকে ত্রয়োদশ খণ্ডটি শেষ করেছিলেন।
তাঁর চৌদ্দ খণ্ডে (সিয়ার আলাম আল-নুবালা) বইটি তৈরি করেছিলেন, যাতে তিনি কাগজপত্রের সংখ্যার দিক থেকে ধারাবাহিকতার বিষয়টি
বিবেচনা করেছিলেন। তিনি বেশিরভাগই বিন্যাসের
দিকটি বিবেচনা করেননি।
আল-যাহবি নবীর জীবনী
এবং খুলাফাযে রাশেদাহ জীবনীটির প্রথম এবং দ্বিতীয়
খণ্ড রচনা করেছিলেন। কিন্তু তিনি আবার এটিকে
সংশোধন করেননি, তবে তাঁর বৃহৎ গ্রন্থ তারীখুল ইসলাম থেকে তা গ্রহণ করেন।
সংযুক্ত করার জন্য উল্লেখ
করেছেন। তিনি তাঁর গ্রন্থ সিয়ার আলামুন নুবালা
কয়েকটি স্তরে বিন্যাস করেন। প্রায় চল্লিশ স্তরে সাজানো হয়েছে।
লেখক হলেন- হাফিজ শামস আল-দীন মুহাম্মদ বিন আহমাদ বিন উথমান
আল-যাহাবী ।যিনি ৭৪৮হিজরিও ১৩৭৪ খ্রিস্টাব্দে
মারা গিয়েছিলেন।
সিয়ারু আলামিন নুবালা আরবিতে নাম : سير
أعلام النبل
ইংরেজি ভাষায় Siyar A’lamin Nubala) হল একটি বিখ্যাত ইসলামি
গ্রন্থ ।এটি আল-হাফিজ আবু আবদুল্লাহ শামস আল-দীন আল-যাহাবী(মৃত্যু ৭৪৮হিজরি) রচিত জীবন
চরিতের একটি কিতাব । আরো সহজে বলা যায়
যার রচয়িতার নাম ইমাম শামসুদ্দীন আয-যাহাবি । এটি আরবি ভাষায়
লিখিত একটি 'সিরাত গ্রন্থ' ।
ইসলামিক গবেষকগণ তাদের নিজ নিজ প্রয়োজন অনুযায়ী এ গ্রন্থ থেকে
এন্তার উদ্ধৃতি পেশ করে থাকেন । গ্রন্থটির সুপরিচিত নাম সিয়ারু আলামিন নুবালা তবে
উলামা-পণ্ডিতদের বক্তব্য অনুসারে এর নামটিতে ভিন্নমত রয়েছে । এর ভিন্ন নামগুলি হল
:
তারিখুল উলামা আন-নুবালা(تاريخ العلماء النبلاء ) তারিখুন নুবালা(تاريخ النبلاء ) কিতাবুন নুবালা(كتاب النبلاء )
আ'ইয়ানুন নুবালা( عيون
النبلاء ) সিয়ারুন নুবালা(سير
النبلاء ) সিয়ারু আ'লামিন নুবালা - হাফিজ শামস আল-দীন মুহাম্মদ বিন আহমাদ বিন উথমান
আল-যাহাবী বলেন, এ নামটি সবচেয়ে বিখ্যাত, সবচেয়ে নির্ভুল এবং পরিপূর্ণ ।
*দার আল ফিকর বৈরুত সংস্করণ: এটি একটি পরিপূর্ণ সংস্করণ যা জীবনীএবং
হারিয়ে যাওয়া জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
যা শাযখুল -ইসলামের অনুবাদ রয়েছে।
* দারূ হাদীসের সের সংস্করণটি: এটি অসম্পূর্ণ সংস্করণ। এখানে রিসালাহকে
মূল হিসাবে গ্রহণ করেছে।
*আল-তৌফিকিয়া সংস্করণ :সূচিগুলির একটি পরিমাণ অনুপস্থিত। প্রযুক্তিগত
ত্রুটিসহ এটা মুদ্রিত হয়েছে।
*রেসালা ফাউন্ডেশন সংস্করণ: যা তাহকিয়াত শুয়াইব আল-আরনাআউট এবং অন্যান্যদের মধ্যে সর্বাধিক বিখ্যাত সংস্করণ। তথ্য সূত্র প্রদানের জন্য এই সংস্করণটি সেরা হিসাবে
বিবেচিত হয়। "
.সিয়ার আলামু নুবালা কিতাবটি সেগুলির মধ্যে একটি আকর্ষণীয় জীবনী গ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত হয়। যার মাধ্যমে
পাঠক এবং গবেষকরা যে
সুবিধাজনকভাবে জীবনী বিষয়ে পাঠ করতে পারেন। এটি তাঁর বিশাল একটা কিতাব (ইতিহাসের
ইতিহাস) সংক্ষিপ্তসার। যেমন تاريخ
الإسلام ও وكتاب
(ميزان الاعتدال في نقد الرجال) এবং وكتاب
(تذكرة الحفاظ)
তাঁর কিতাব স্তরগুলি
সাহাবীগণের যুগ থেকে শুরু করে লেখকের যুগ পর্যন্ত রচনা করা হয়েছে।
আল-হাফিজ আল-যাহাবী তাঁর গ্রন্থে স্তর অনুযায়ী সাজিয়েছিলেন,। তিনি এটি আনুমানিক
চল্লিশটি স্তর তৈরি করেছিলেন। জীবনীউপস্থাপনের জন্য এটিই তাঁর পদ্ধতি। আল-হাফিজ আল-যাহাবী
তাঁর জীবনী আলোচনা করতে স্তরের সংখ্যার সাথে পৃথক করেছেন। অনেক জায়গায় তিনি একমত
হননি।
সাহাবীগণের জীবনী এবং তাবেযীনদের ও তাদের পরবর্তী আলীমদের জীবনীগুলি অবহিত হওয়া যাবে। এ ছাড়া খলিফা, রাজনৈতিক নেতারা এমনকি প্রসিদ্ধ জ্ঞানী, ও দার্শনিকদের জীবনী নিবন্ধ করেন। এতে চেঙ্গিস খান এবং ইসলামী ইতিহাসকে প্রভাবিতকারী
অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কেও আলোচনা করেছেন।
এতে তাঁর লেখক তাঁর বিশাল কিতাবে(ইসলামের ইতিহাস) উল্লেখ করেছেন।
লেখকের বয়স অবধি কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা ও রাজনৈতিক ঘটনা যা ইসলামিক
ইতিহাস জুড়ে ঘটেছিল তা আলোচনা করা হয়েছে ।তিনি ইলমুশ শরীআহ জ্ঞান থেকে অনেক উপকৃত হয়েছেন, যেমন বিশ্বাস, আইনশাসন, ব্যাখ্যা, হাদীস এবং অন্যান্য শরিয়া বিজ্ঞানের অনেক ইলমী বিষয়
সম্পর্কে কথা বলেছেন।
আল-হাফিজ আল-যাহাবী রাবীদের গ্রহণযোগ্যতা, প্রতিক্রিয়া, ব্যাখ্যা ও দিকনির্দেশনার দিক দিয়ে হাদীস সম্পর্কিত বিধিবিধান থেকে লাভবান হয়েছেন।
তিনি হাদীস পন্ডিতদের মধ্যে প্রসিদ্ধ এক আলেম। তিনি
এই গ্রন্থে বহু হাদীসের হুকুম প্রদান করেছেন।
কিতাবে জীবনীগুলির প্রকৃতি এবং তাদের নির্বাচনের ভিত্তি আলোচনা
করা হয়েছে।
আল-হাফিজ আল-যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি জীবনী সংক্রান্ত বিষয় রচনায় বিশিষ্ট ছিলেন।
তিনি বিশেষভাবে জীবন সম্পর্কে জ্ঞাত ও লেখক জ্ঞানসম্পন্ন ছিলেন,। তাই তিনি জীবনী বাছাই করার ক্ষেত্রে তিনি একটি অনন্য পদ্ধতি
ব্যবহার করেছিলেন।
সেগুলির জন্য মৌলিক ভিত্তি আবিস্কার করেছিলেন। এই ভিত্তিগুলি সংক্ষেপে নিম্নরূপ করা যায়।
*১)ইলমী
বিষয়: আল-যাহাবী সমস্ত বিখ্যাত এবং বিশিষ্ট জ্ঞানী ব্যক্তিদের সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি অজানা এবং অপেক্ষাকৃত কম প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের
সম্পর্কে উল্লেখ করেন নি।
*২)গুণগত
অন্তর্ভুক্তি: এটি নির্দিষ্ট ধরণের বিদ্বানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তবে এর জীবনী বিভিন্ন শ্রেণীর লোকের অন্তর্ভুক্ত ছিল। খলিফা, রাজা, সুলতান, বিচারক, মন্ত্রী, হাদীস, ফকীহ, লেখক, ডাক্তার, ভাষাতত্ত্ববিদ, ব্যাকরণবিদ, কবি, , বক্তা, দার্শনিক এবং বিশুদ্ধ ইলমের সাথে সম্পর্কিত একদল লোক।
*৩) স্থান
অন্তর্ভুক্তি: আল-হাফিজ আল-যাহাবী তাঁর গ্রন্থটির জন্য পশ্চিমে আন্দালুসিয়া
থেকে পশ্চিমে পূর্ব পর্যন্ত ইসলামী বিশ্বের সমস্ত অংশের পন্ডিতদের একটি বিস্তৃত জীবনী
উল্লেখ করেছেন।
*৪)যুগের ভারসাম্য: আল-হাফিজ আল-যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি তার
গ্রন্থেসময়কালে যে পন্ডিতদের নাম উল্লেখ করেছিলেন, তার পরিমাণের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছিলেন। যার পরিমাণ ছিল সাত শতাব্দী, সুতরাং আমরা তাঁর কাছে এক যুগের চেয়ে অন্য যুগের অগ্রাধিকার
পাই নি।
৫) বিস্তারিত এবং সংক্ষিপ্ততা: সন্দেহ নেই যে আল হাফিজ আল যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি তাঁর এই গ্রন্থের পণ্ডিতদের সমস্ত জ্ঞানজীতে রচনা করেন নি।
তিনি ইলমুল রিজালের জীবনী বিস্তৃতভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন। সুতরাং আমরা এই কিতাবে লক্ষ্য
করেছি যে একটি জীবনী বিষয়ে এক এক রকম আলোচনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা দেখতে পেয়েছি যে তিনি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলে একশ পৃষ্ঠারও
বেশি লিখেছেন, যখন আমরা দেখতে পাই যে
তিনি চেঙ্গিস খান বা আল-হাজ্জাজ বিন ইউসুফ আল-সাকাফি জীবনী করেছেন এক পৃষ্ঠারও কম পৃষ্ঠাতে। এটি অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত সুবিধার কারণে হয়েছে জীবনী লেখকের কাছ থেকে। আহমদ বিন হাম্বলের জীবনীতে
মূল্যবান এবং উপাখ্যানীয় বিষয় রয়েছে যা উল্লেখ কারণ এর মধ্যে সকলের উপকার আছে।
ইমাম শামসুদ্দীন আয় যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি
এর সতর্কতা
-----------------—-----------------------------------------------------
.ইমাম শামসুদ্দীন আয় যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি এর সিয়ার আলামুন
নুবালা গ্রন্থে এই সকল গ্রন্থ থেকে সতর্কতা
অবলম্বন করেন। পরবর্তীতে পাঠক ও গবেষণা করার ক্ষেত্রে বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন।
*كتاب "نهج البلاغة" لعلي بن حسين المرتضى
*-
كتاب "الأربعون الودعانية" لأبي نصر محمّد بن علي بن
ودعان.
*-
كتاب بهجة الأسرار لابن جهضم علي بن عبد الله الهمذاني.
*كتاب "التاجي في أخبار بني بويه" لإبراهيم بن هلال
الصابئ.
قال الذهبي
*-
كتاب "تفسير القزويني" لأبي يوسف، عبد السلام بن محمّد
القزويني،
*
"جزء في مثالب أبي الحسن الأشعري" الأهوازي.
*.حقائق التفسير" لأبي عبد الرحمن السلمي
*-
كتاب "الدافع" ، و"الزمردة"، و"قضيب
الذهب" و"نعت الحكمة"
*كتاب "درر السِّمط في خبر السبط عليه السلام" لأبي عبد
الله ابن الآبّار.
*-
كتاب "الديباج" للخُتَليُّ.
.*-
ديوان ابن هانئ لابن هانئ
*-
"رحلة الشافعي"عبد الله بن محمّد البلوي الشافعي
*"رسائل إخوان الصفا".
*-
"رسالة الغفران" و"رسالة الملائكة"
و"الطير" جميعها لأبي العلاء المعري
.*-
كتاب "الرواة عن أهل البيت" وكتاب "المسترشد في
الإمامة"
*-
كتاب "زاد الرفاق" لمحمد بن أحمد الأبيوردي
*-
"شفاء الصدور" في التفسير لأبي بكر النَّقَّاش.
*-
"الفاروق في الصفات" لأبي إسماعيل الهروي.
كتاب "الفتن" لنعيم
بن حمّاد.
كتاب "الفصوص" لمحي
الدين ابن عربي.
*كتاب "الفصول والغايات في محاذاة السور والآيات": لأبي
العلاء المعري.
*-
"قوت القلوب" لمحمد بن علي بن عطية
*
"كيمياء السعادة والعلوم" الغزالي.
*-
كتاب "المبتدأ" لأبي حذيفة إسحاق بن بشر.
.*-
كتاب "المنخول" للغزالي.
.*-
"المستخرجة" لأبي عبد الله العتبي.
*
كتاب "المناقب" لأبي سعيد عباد بن يعقوب الأسدي
.*
«إحياء علوم الدين» للغزالي.
لأبي إسماعيل الهروي.
উপসংহার
(conclusion )
-------------------------------------------------
উপরের আলোচনা থেকে এ কথা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ইমাম শামসুদ্দীন আয়
যাহাবী রাহমাতুল্লাহ আলাইহি একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস, ফকীহ ও মুফাসসির এবং ইতিহাসবেত্তা । তিনি একজন জীবনী লেখক।
তিনি ৬৭৩হিজরী৩ রবিউল আওয়াল মাসে জন্ম গ্রহণ করেন। জীবনের অধিকাংশ
সময়েই হাদীসের খেদযত ব্যয় করেন। তিনি হাদীস
ও ফিকহ চর্চা গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন। ইলমুল জারহ ওয়াত তাদীলে এবং আসমাউর রিজালের
তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন। তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ
সিয়ার আলামুন নুবালা।আমরা সবাই তার খেদমতের উপর আমল করতে পারি আল্লাহ তাআলা আমাদের
সকলকে তাওফীক দান করুন, আমীন।
লেখক:
প্রফেসর ড. সৈয়দ মাকসুদুর রহমান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া
বাংলাদেশ
ما شاء الله جزاكم الله
ReplyDeleteما شاء الله جزاكم الله
ReplyDelete