সত্যের সন্ধানে, পর্ব-১৬ রিজাল শাস্ত্রে প্রসিদ্ধ ইমামগণের সংক্ষিপ্ত জীবনী
ইমাম বুখারী (র)
সত্যের সন্ধানে পর্ব-১৫ পড়তে ক্লীক করুন এখানে
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি এর নাম
মুহাম্মদ বিন
ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুগীরাহ বিন বারদিযবাহ
আল জু'ফী আল বুখারীতার নাম মুহাম্মদ। উপনাম হলো আবু আবদুল্লাহ। আমিরুল
মুমিনীন ফিল হাদীস তার উপাধি। বুখারা তার জন্মস্থান বলে তাকে বুখারী বলা হয়।
نسبة الولاء في الإسلام، فقد
كان العرف أنّ الشخص الذي يُسلم على يديه يُنسب إلى قبيلته، وأمّا نسبته إلى بخارى
فهي المدينة التي وُلد فيها، وتقع في الجزء الغربي من أوزبكستان
একজন বিখ্যাত
হাদীসবেত্তা ছিলেন। তিনি "বুখারী শরীফ" নামে একটি হাদীসের সংকলন রচনা করেন, যা মুসলমানদের নিকট হাদীসের সবোর্ত্তম গ্রন্থ বিবেচিত হয়।
صنف وحدث وما في وجهه
شعرة ، وكان رأسا في الذكاء ، رأسا في
العلم ، ورأسا في الورع والعبادة . وكان شيخا نحيفا ليس بطويل ولا قصير ، مائلا
إلى السمرة . كان يقول : لما طعنت في ثماني عشرة سنة جعلت أصنف قضايا الصحابة
والتابعين وأقاويلهم في أيام عبيد الله بن موسى ، وحينئذ صنفت التاريخ عند قبر
النبي صلى الله عليه وسلم في الليالي المقمرة . وكان يقول : أحفظ مائة ألف حديث
صحيح ، وأحفظ مائتي ألف حديث غير صحيح
.
*জম্ম গ্রহণ
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি ১৩ই শাওয়াল,
১৯৪ হিজরী,জুমুআ দিন (৮১০ খ্রিস্টাব্দের
২১জুলাই) বখারা নামক স্থানে জম্ম গ্রহন করেন।মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল ইবনে ইব্রাহীম ইবনে
মুগীরা ইবনে বারদিযবাহ ইবনে বাযযা।
নসব বিশ্লেষণ
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি ছিলেন অনারবী বংশোদ্ভূত একজন
বিখ্যাত হাদীসবেত্তা। হাফিয ইবন হাজার আসকালানী
রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন যে, মুগীরা ইমাম বুখারীর রাহমাতুললাহ আলাইহি প্রপিতামহ ছিলেন যিনি বুখারার
হাকিমের হাতে মুসলমান হলেন। মুগীরা বুখারার
স্থায়ী অধিবাসী হন। ঐ সময় ইসলামের এই আইন ছিল যে, যার নিকটে যে মুসলমান হতো সে তার বংশ হিসেবে পরিচিত হতো। এজন্যই
ইমাম বুখারীর রাহমাতুললাহ আলাইহি বংশ পরিচয় দিতে গিয়ে যোয়াফী(الجعفي) বলা হয়।
হাফিয ইবন হাজার আসকালানী রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন,
মুগীরা ইমাম যু’ফীর হাতে মুসলমান হন। তাই তাঁকে যু’ফীর বংশ ধরে নেয়া
হয়। বুখারীর রাহমাতুললাহ আলাইহি বংশে কোন ক্রীতদাস ছিল না। ইমাম বুখারীর রাহমাতুললাহ আলাইহি বংশ পরিচিতিতে কোন প্রকার মতভেদ
নেই। বারদিযবাহকে (بردزبة)
কেহ আহনাফ বলেছেন,
যার অর্থ হচ্ছে বেশি জ্ঞানী। যেমন কোন ব্যক্তি দানশীল হলে তাকে
হাতেম তাই বলা হয়। বারদিয বেশি জ্ঞানবান ছিলেন বলে তাঁকে আহনাফ বলা হয়।
* বুখারা পশ্চিম
উজবেকিস্তানের বোখারা প্রদেশের রাজধানী শহর। এটি জেরফ্শন নদীর তীরে এক মরূদ্যানে, তুর্কমেনিস্তান সীমান্ত থেকে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে
অবস্থিত। বোখারার আশেপাশের অঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাস, তুলা,
ফল এবং রেশম উৎপাদিত হয়। এখানে বস্ত্র, কার্পেট, এবং পশমের কারখানা আছে।
বোখারাতে অনেক স্থাপত্য নিদর্শন আছে, যেগুলির কিছু
কিছু ৯ম শতকের। এদের মধ্যে আছে অনেকগুলি মসজিদ, আর্ক নামের একটি
দুর্গ,
এবং ইসমাইল সামানির (৯ম-১০ম শতক) সমাধি। এখানে একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ
কলেজ অবস্থিত। বুখারার ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থলটিকে ১৯৯৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী
স্থানের মর্যাদা দেয়।
বুখারা বর্তমান
উজবেকিস্তানে অবস্থিতবুখারা নগরীতে, যা আজ তুর্কিস্তানের
উজবেকিস্তানের একটি শহর। তিনি এক ফারসি পরিবারের উত্তরসুরী যারা তাঁর তিন প্রজন্ম আগে
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আল-বুখারী শিশু থাকা অবস্থাতেই বাবাকে হারান, যার ফলে তাঁর মায়ের উপর তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব বর্তায়।
কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও,
অল্প বয়স থেকেই আল-বুখারী ইসলাম বিজ্ঞান শিক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত
করেন।
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর শিক্ষাজীবন
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি শিশুকাল থেকে শিক্ষা অর্জন শুরু করেন। তিনি সর্ব প্রথম শিক্ষা নেন মায়ের নিকট
থেকে। তার মাতা আলেমা,
আবদাহ ও মুহাদ্দিসা ছিলেন।
ইবন হাজার আসকালানী রাহমাতুললাহ আলাইহি বলেন যে, মায়ের কোল থেকেই ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি শিক্ষালাভ করেছেন।
ইমাম বুখারী তাঁর মা’র দুধ পান করা থেকে শুরু করে দুধ পান শেষ করা পর্যন্ত মা’র নিকট শিক্ষালাভ করেন। তাঁর মা ছিলেন হাদীসের একজন পন্ডিত।
* ইবনে হাজার আসকালানী
ফতহুল বারীর(مقدمة فتح الباري) ভূমিকায় বর্ননা করেন,
ইমাম বুখারীর
রাহমাতুললাহ আলাইহি এর পিতা বাল্যকালে মৃত্যুবরণ
করেন।
আবু আব্দুল্লাহ
মুহাম্মদের তাঁর মাতাই লালন-পালনকরেন। বাল্যকাল
থেকেই তিনি হাদীস মুখস্থ করেন। তাঁর পিতা ঈসমাইল একজন হাদীসের পন্ডিত ছিলেন। তার মাতাও
ছিলেন হাদীসের একজন পন্ডিত।
* মুহাম্মাদ বিন
হাতেম ইরাকী বলেন,
আমি ইমাম বুখারীর নিকট শুনেছি তিনি বলেছেন, আমি বাড়িতে পড়াকালীন হাদীস হিফয করার ইচ্ছা করি।
** আবু জাফর ইরাকী বলেন,
আমি আমার উস্তাদকে
জিজ্ঞেস করলাম,
আপনি কত বৎসর বয়সে হাদীস পড়া শুরু করেছিলেন? তিনি বলেন : আমার বয়স যখন ১০ বৎসর, তার আগে থেকেই হাদীস পড়া আরম্ভ করেছিলাম।
ইবন হাজার আসকালানী
রাহমাতুললাহ আলাইহি ফতহুল বারী’র ভূমিকায় বর্ণনা করেন,
ঐ এলাকার প্রসিদ্ধ
শিক্ষক আল্লামা দাখেলী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর নিকট তিনি শিক্ষালাভ করেন। ইমাম বুখারীর
(র.) উপস্থিতিতে তিনি তাঁর ছাত্রগণকে একটি হাদীসের সনদ লেখাইতেছিলেন-
‘সুফিয়ান আন আবি
যুবাইয়ের আন ইব্রাহীম।’
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি বললেন,
শাযখ, আবু যুবাইয়ের সাথে ইব্রাহীমের
সাক্ষাৎ হয়নি। এই সনদ ভুল হয়ে গেল। ইমাম দাখেলী রাহমাতুললাহ আলাইহি ছেলেকে ধমক দিয়ে
বললেন যে,
তুমি কি বলছে? বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি বিনয়ের সঙ্গে বললেন, শাযখ সনদ ভুল হয়েছে, আবার হাদীসের
দিকে ভালভাবে দেখুন। ইমাম দাখেলী রাহমাতুললাহ
আলাইহি আবার সেই কিতাবটা দেখে নিজের বুল বুঝতে পারলেন এবং মনে মনে খুশি হয়ে সনদ সম্পর্কে
ইমাম বুখারীকে পরীক্ষা স্বরূপ বললেন: كيف هو غلام অর্থ, ওহে ছেলে সহীহ সনদটা তাহলে কি হবে বলতো দেখি? ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি বললেন,
আন জুবাইরিন ইবন আদি আন ইব্রাহীমা অর্থ-জুবাইর হলেন আদির পুত্র।
তিনি বর্ণনা করেন ইব্রাহীম থেকে। প্রথম বাক্যের অর্থ ছিল জুবাইরের বাপ ইব্রাহীম হতে
বর্ণনা করেন,
কিন্তু জুবাইর-এর পিতার সঙ্গে ইব্রাহীমের সাক্ষাৎ হয়নি। আল্লামা
দাখেলী বললেন,
ও ছেলে, তোমারটাই সহীহ, আমি ভুল করেছিলাম।
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর দেশ ভ্রমণ
رحلة البخاري في طلب الحديث
بدأت هذه الرحلة عندما خرج البخاري مع أخيه وأمه لأداء مناسك الحج، فقد عادت أمه
وأخوه إلى بخارى بعد أداء مناسك الحج، ولكنه بقي هناك، وأصر أن يتخذ من منطقة
الحرمين الشريفين نقطة البداية لرحتله، فقد بقي ستة أعوام بهما يتعلم من شيوخهما،
ثم بعدها بدأ يتنقل بين البلاد الإسلامية، كما أخذ يحاور المحدثين، ويجالس
العلماء، ويعقد الجلسات للتحدث، ويجمع الحديث هناك، وقد تحمل مشاق الانتقال
والسفر، ولم يترك بلداً للعلم إلّا وقد نزل به، وروى عن كبار شيوخه، فقد نزل في
ষোল বছর বয়সে
তিনি মা এবং বড় ভাইয়ের সাথে হজ্জে গমন করেন। হজ্জের পর তিনি মক্কাতে রয়ে গেলেন এবং
হিজাযের হাদীসবিশারদদের কাছ থেকে হাদীস গ্রহণ করতে থাকলেন। এ সময় তিনি "কাজায়াস
সাহাবা ওয়াত তাবীয়ীন" নামক গ্রণ্থ রচনা করেন। এরপর হাদীস অন্বেষণের জন্য তিনি
ইরাক,
সিরিয়া ও মিশরসহ বহু অঞ্চলে সফর করেন। একদা ইমাম বুখারি মুহাদ্দিস
দাখেলির দরসগাহে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৬ বছর পর তিনি হাদীস অন্বেষণের ভ্রমণ শেষ করে নিজ
মাতৃভূমি বুখারায় ফিরে আসেন।
মাদীনা:
পশ্চিমী সৌদি
আরবের হেজাজ অঞ্চলের একটি শহর এবং আল মদিনাহ প্রদেশের রাজধানী। এইটি ইসলামের দ্বিতীয়
পবিত্র শহর যেখানে মুসলমানদের শেষ নবী মুহাম্মাদের রওযা। এইটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ
কারণ মুহাম্মাদ হিজরতের পরে মদিনায় বসবাস করেছেন। নানান ঐতিহাসিক কারণে মদিনা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ । বিশেষ করে মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ও পবিত্র এই নগরীটি ।
ইসলামের প্রাচীনতম ও ঐতিহাসিক তিনটি মসজিদ যেমন মসজিদে নববী, কুবা মসজিদ (যেটি ইসলামের ইতিহাসে প্রথম মসজিদ ) এবং মসজিদ আল
কিবলাতাইন (যে মসজিদে মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তন হয়েছিল)
মক্কা :
সৌদি আরবের হেজাজের
একটি শহর ও মক্কা প্রদেশের রাজধানী। সমুদ্রতল থেকে ২৭৭ মিটার (৯০৯ ফুট) উপরে একটি সংকীর্ণ
উপত্যকায় শহরটি অবস্থিত,
যা জেদ্দা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার (৪৩ মাইল) দূরে।২০১২ সালের
হিসেব অনুযায়ী এখানে প্রায় ২ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করেন। কিন্তু শহরটিতে এর প্রায়
৩ গুন মানুষ হিজরী জিলহজ্জ্ব মাসে হজ্জ্ব করতে আসেন।
বাগদাদ :
ইরাকের রাজধানী।
দজলা(দজলা দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার একটি নদী। নদীটি তুরস্কে উৎপত্তি লাভ করে ইরাকের ভেতর
দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ফোরাত নদীর সাথে মিলিত হয়েছে এবং শাত আল আরব নামে পারস্য উপসাগরে
পড়েছে।) নদীর তীরে অবস্থিত এ শহরটি ৮ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।আব্বাসীয় খিলাফতের
আমলে এটি রাজধানীতে পরিনত হয়। প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই বাগদাদ মুসলিম বিশ্বের
এক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক
কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত হয়েছিল।
খুরাসান:
বর্তমান ইরানের
উত্তরপূর্ব অঞ্চল,
প্রায় সমগ্র আফগানিস্তান, দক্ষিণ তুর্কমেনিস্তান,
তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল এই খোরাসানের
অন্তর্ভুক্ত বলে পরিগণিত হত। এই অঞ্চলের উত্তরসীমায় ছিল আমু দরিয়া নদী, পশ্চিমে কাস্পিয়ান সাগর, দক্ষিণে মধ্য ইরানের মরু অঞ্চল ও পূর্বে মধ্য আফগানিস্তানের পার্বত্য উচ্চভূমি।
দামেসক :
সিরিয়ার আরব
প্রজাতন্ত্রের রাজধানী;
যুদ্ধের কারণে আলেপ্পোর জনসংখ্যা হ্রাসের পরে এটিও দেশের বৃহত্তম
শহর। সভ্যতার প্রাচীন ও মধ্যযুগের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হবে কিন্তু সিরিয়ার রাজধানী
দামেস্কের নাম উঠে আসবে না এটা কল্পনা করাও দুরূহ ব্যাপার। প্রায় দশ হাজার বছর ধরে
মানুষের বসতির চিহ্ন মেলে এখানে। তাই অনেকেই দাবি করেন
কায়সারিযা
قيسارية مدينة تقع في منطقة
فلسطين التاريخية تحديدا في دولة إسرائيل. تقع على شاطئ البحر الأبيض المتوسط، وهي
من أقدم المناطق التي سكنها البشر، تقع قيسارية إلى الجنوب من مدينة حيفا، وتبعد
عنها حوالي 37 كم، بلغت مساحة أراضيها
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি স্মৃতি শক্তির প্রখরতা
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি ১৮ বছর বয়সে আবারো তিনি হজ্জ পালনের জন্য
পবিত্র মক্কায় গমণ করেন।
মক্কায় অবস্থান করে তিনি ইলমুল হাদীসের চর্চা শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন এলাকা ভ্রমণ করে এক হাজারেরও অধিক সংখ্যক মুহাদ্দিসের নিকট থেকে হাদীস সংগ্রহ করেন। তিনি গভীর রাত জেগে ইলমুল হাদীসের গভীর জ্ঞান অর্জন করতে অত্যন্ত কঠিন পরিশ্রম করতেন। তার স্মৃতি শক্তি এতটাই প্রখর ছিল তৎকালীন মুহাদ্দিস থেকে বর্তমান পর্যন্ত সকলে একমত পোষণ করেন যে, আল্লাহ তা’আলা তাকে এই নিআমত দান করেন । যে কোন কিতাবে একবার দৃষ্টি দিয়েই তিনি তা মুখস্ত করে ফেলতে পারতেন।
একদা ইমাম দাখেলি
একটি হাদিসের সনদ বর্ণনা করবার সময় 'জুবাইর' এর স্থলে 'আবু জুবাইর' বলেছেন। ইমাম বুখারি নম্রস্বরে বললেন- এখানে আবু জুবাইর' এর স্থলে 'জুবাইর' হবে। অতঃপর ইমাম দাখেলি বাড়িতে গিয়ে কিতাব দেখে তার ভুল সংশোধন
করেছেন। এর অব্যবহিত পরই দাখেলি তাকে খুব স্নেহ করতেন।
لما قدم البخاري بغداد ، فسمع
به أصحاب الحديث ، فاجتمعوا و عمدوا إلي مائة حديث ، فقلبوا متونها و أسانيدها ، و
جعلوا متن هذا لإسناد هذا و إسناد هذا لمتن هذا ، و دفعوا إلي كل واحد عشرة أحاديث
ليلقوها عليه في المجلس ، فاجتمع الناس ، و انتدب أحدهم ، فسأل عن حديث من عشرته ،
فقال البخاري : لا أعرفه . و سأله عن أخر ، فقال : لا أعرفه . و كذالك حتي فرغ من
عشرته . فكان الفقهاء يلتفت بعضهم إلي بعض و يقولون : الرجل فهم . و من كان لا
يدري قضي علي البخاري بالعجز ، ثم انتدب آخر ففعل كما فعل الأول . و البخاري يقول
: لا أعرفه . ثم الثالث و إلي تمام العشرة أنفس ، و هو لا يزيدهم علي : لا أعرفه .
فلما علم البخاري أنهم قد فرغوا ، التفت إلي الأول منهم ، فقال : أما حديثك الأول
فكذا ، و الثاني كذا ، و الثالث كذا إلي العشرة ، فرد كل متن إلي إسناده و فعل
بالآخرين مثل ذلك فأقر له الناس بالحفظ
তিনি এতদ্ভিন্ন অন্য এক দারুল হাদীসে যোগ দিতেন।
সেখানে অন্য ছাত্রগন হাদুসগুলো লিখে নিতেন। তিনি তা লিখতেন না। তার সহপাঠীগণ তাকে হাদীস
না লিখে রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে কোন উত্তর দেননি। অতঃপর সহপাঠীগণ তাকে হাদীস লেখার
জন্য জোর তাগিদ দিলে তিনি উত্তর দিলেন- "আপনাদের লেখা কপিগুলো নিয়ে আসুন। তারা
কপিগুলো নিয়ে আসলে তিনি ধারাবাহিকভাবে তাদের সামনে হাদিসগুলো পাঠ করে শোনান। সেই মজলিসে
তাদের লেখা অনুসারে প্রায় পনের হাজার (১৫,০০০) হাদিস মুখস্থ
পাঠ করে শোনান। ইমাম বুখারী বলেনঃ আমার অন্তরে এক লক্ষ সহীহ হাদীছ ও দুই লক্ষ যঈফ হাদীস
মুখস্ত রয়েছে।
قال ابن خزيمة : ما تحت أديم السماء أعلم بالحديث من البخاري
* আবূ বকর ইবন খুযায়মা
বলেন,
পৃথিবীতে ইমাম বুখারী অপেক্ষা অধিক অভিজ্ঞ এবং হাদীছের হাফেয
আর কেউ জন্ম গ্রহণ করে নি।
সহীহ বুখারীর
অন্যতম ভাষ্যকার কুস্তুলানীর বক্তব্য অনুযায়ী তিনি ছয় লক্ষ হাদীসের র হাফেয ছিলেন।
আলেমগণ তার জীবনীতে উল্লেখ করেছেন।
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর শিক্ষকবৃন্দ
*عبد الله بن يوسف
التنيسي ، وقد فاقت رواياته عنه الثلاثمائة رواية
*، علي بن عبد الله المديني فاقت مروياته
المائتين
*، أبو اليمان الحكم بن نافع ، موسى بن
إسماعيل التبوذكي
* ، عبد الله بن محمد المسندي ، أبو نعيم الفضل
بن دكين
* ، محمد بن بشار المعروف ببندار ،
*قتيبة بن سعيد
* ، سلمان بن حرب ،
أبو الوليد هشام بن عبد الملك الطيالسي ،
*محمد بن المثنى .
أما المتوسطون : وهم من لهم دون المائة رواية وأكثر
من خمسين ، فهم :
* عبد العزيز بن
عبد الله الأويسي ،
* عبد الله بن
الزبير الحميدي ،
*إبراهيم بن موسى
،
* إبراهيم بن
المنذر
* ، محمد بن يوسف الفريابي
* ، محمد بن كثير ، حفص بن عمر .
ومن أهم شيوخه الذين بلغوا رتبة الإمامة في العلم
والدين :
الإمام أحمد بن حنبل
وإن لم يرو عنه في الصحيح ،
وإسحاق بن راهويه روى عنه نحو الثلاثين رواية ، وأحمد
بن صالح المصري ، وأبو نعيم الفضل بن دكين ، وغيرهم
তিনি যাদের কাছে
হাদীস শুনেছেন তাদের মধ্যে বিশিষ্টজন আবু আব্দুল্লাহ
আল বুখারীর হাদিস সংগ্রেহের ব্যপারে تاريخ النيسابور গ্রন্থে বলেন,
মক্কায়-
আবু ওয়ালীদ ইবনে
আব্দুল্লাহ রাহমাতুললাহ আলাইহি
ইসমাঈল বিন সালাম, রাহমাতুললাহ আলাইহি
বুখারায়-
মোহাম্মাদ বিন সালাম রাহমাতুললাহ আলাইহি
হারুন বিন আল আশায়ের, রাহমাতুললাহ আলাইহি
বলখে-
মক্কী ইবনে ইবরাহীম
বলখী রাহমাতুললাহ আলাইহি
ইয়াহিয়া ইবনে শিবর রাহমাতুললাহ আলাইহি (বাল্খ
প্রদেশ আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের একটি।
মাজার-ই-শরিফ প্রদেশের রাজধানী। প্রদেশের অধিকাংশ লোক তাজিক জাতির। এরপরেই আছে উজবেকরা।)
হেরাতে
(উত্তর-পশ্চিম
আফগানিস্তানে হারিরুদ নদীর উপর অবস্থিত শহর এবং হেরত প্রদেশের রাজধানী। ধারণা করা হয়
খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতকে মহামতি আলেকজান্ডার শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন। খ্রিস্টীয় ৭ম শতকে
মুসলমানেরা শহরটি দখল করে) আহমদ ইবনে ওয়ালীদ রাহমাতুললাহ আলাইহি
*নিশাপুরে- ইসহাক
ইবনে রাহওয়াইহ রাহমাতুললাহ আলাইহি
ইয়াহইয়া ইবনে
ইয়াহইয়া রাহমাতুললাহ আলাইহি
রাই প্রদেশ্রে-
ইব্রাহীম মুসা
রাহমাতুললাহ আলাইহি
বাগদাদে
মুহাম্মদ ইবনে
ঈসা রাহমাতুললাহ আলাইহি
মুহাম্মদ বিন সাবিত রাহমাতুললাহ আলাইহি
আহমদ বিন হাম্বল,
বসরায়-
(বসরা, বা,
আল-বসরা (আরবি: البصرة) ইরাকের একটি শহর। এই শহরটি কুয়েত এবং ইরানের মধ্যবর্তী শাত-ইল-আরবে
অবস্থিত।)
আবু আসেম রাহমাতুললাহ
আলাইহি
সাফওয়ান বিন
ঈসা রাহমাতুললাহ আলাইহি
জাজীরায়-
আহমদ বীন আব্দুল
মালেক রাহমাতুললাহ আলাইহি
আহমদ বিন ইয়াজিদ
ররাহমাতুললাহ আলাইহি নিকট থেকে হাদিস সংগ্রহ করেছেন।
ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি
আলাইহি এর উল্লেখযোগ্য ছাত্রবৃন্দ
*ইমাম মুসলিম রাহমাতুললাহ
আলাইহি
*ইমাম তিরমিজী
রাহমাতুললাহ আলাইহি
* ইমাম নাসাঈ রাহমাতুললাহ
আলাইহি
*আবু হাতেম রাজি
রাহমাতুললাহ আলাইহি
*আবু যুররা রাহমাতুললাহ
আলাইহি
*ছালেহ বিন মোহাম্মদ
রাহমাতুললাহ আলাইহি
*আবু বকর বিন খুয়ায়মা
রাহমাতুললাহ আলাইহি
*ইয়াহইয়া ইবনে
মুহাম্মদ রাহমাতুললাহ আলাইহি
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর রচনাবলী
ইমাম বুখারী রচিত
গ্রন্থের সংখ্যা ২০টিরও বেশি। এগুলোর কিছু বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা পান্ডুলিপি আকারে
সংরক্ষিত রয়েছে। আর কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তার রচিত গ্রন্থাবলীর মাঝে সবচেয়ে
বিখ্যাত গ্রন্থ হলো সহীহ্ আল বুখারী। নিচে তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম দেয়া
হলোঃ
*কাজায়া আস-সাহাবা
ওয়াআত-তাবিয়ীন
(قضايا الصحبة و التابعين)
*আত-তারীখ আস-সগীর
التاريخ الصغير)
*আল-আদাব আল-মুফরাদ
(الأدب المفرد)
*কিতাব আল-জুআফা
আস-সগীর
*)(كتاب الضعفاء الصغير)
*কিতাব আল-কুনা
(كتاب الكُنى)
*কিতাবু খালকি
আফআলিল ইবাদ
*(كتاب خلق أفعال العباد)
* সহীহ আল-বুখারী
( صحيح البخاري )
*রাফওল ইয়াদাইন
ফিস সালাত
*( رفع اليدين في الصلاة
)
*কিরাআত খলফিল
ইমাম(قراة خلف الإمام )
*আত-তারিখুল কবির,)(التاريخ الكبير
)
*আত-তারিখুল ওয়াসাত,(التاريخ الوسيط
)
*খালকু আফয়ালিল
ইবাদ,(خلق أفعال العباد
)
*আল জামেওল কবির,(الجامع الكبير
)
*আল মুসনাদুল কবির,(المسند الكبير
)
কিতাবুল আশরিয়া,(كتاب اشعرية)
ওসামাস সাহাবা(وسامسالصحابة)
কিতাবুল মারসুত,(كتاب المبسوط
)
কিতাবুল বিজদান(كتاب الوجدان )
*ইমাম ফাল্লাস বলেনঃ যে হাদীস সম্পর্কে ইমাম বুখারী জানেন না, সেটি হাদীস নয়।
*ইমাম আবু নুআইম
আহমাদ বিন হাম্মাদ বলেনঃ ইমাম বুখারী হচ্ছেন এই উম্মতের ফকীহ। ইয়াকুব বিন ইবরাহীমও
অনুরূপ বলেছেন।
*আলী বিন হাজার
বলেনঃ তার মত আর কেউ আছে বলে আমার জানা নেই।
*কুতাইবা বলেনঃ
পৃতিবীর পূর্ব ও পশ্চিম হতে আমার নিকট অনেক লোক এসেছে কিন্তু মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল
আল বুখারী যতবার এসেছে আর কেউ এত বেশীবার আগমণ করে নি।
*ইমাম আবু হাতিম
রাযী বলেনঃ যে সমস্ত মুহাদ্দিছ বাগদাদে আগমণ করেছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে অধিক জ্ঞানী
হলেন ইমাম বুখারী।
*ইমাম তিরমিজী
বলেনঃ হাদীছের ইল্লত,
ইতহিাস এবং সনদ সম্পর্কে বুখারীর চেয়ে অধিক জ্ঞানী ইরাক এবং
খোরাসানের যমীনে আর কাউকে দেখি নি।
* ইমাম আহমাদ বিন
হাম্বাল বলেনঃ খোরাসানের যমীনে ইমাম বুখারীর অনুরূপ আর কেউ জন্ম গ্রহণ করে নি।
*ইমাম আলী ইবনুল
মাদীনী বলেনঃ ইমাম বুখারীর সমকক্ষ আর কেউ ছিল না।
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি এর মাযহাব
*নবাব ছিদ্দিক
হাসান খান বলেন,
সহিহ বুখারীর
সংকলক ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি ছিলেন শাফেয়ী
মাজহাবের অনুসারী। (আবজাদুল উলুম” পৃষ্ঠা নং ৮১০, এবং আল-হিত্তা ফিস সিহা সিত্তাহ, পৃষ্ঠা নং ২৮৩)।
.শাহ ওয়ালি উল্লাহ
মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহমাতুললাহ আলাইহি এবং আল্লামা তাজ উদ্দীন সুবকী এই মত প্রদান করেন।
اختلف العلماء في تعيين مذهب
الإمام البخاري الفقهي. ... أنه من الحنابلة، حيث ذكره ابن أبي يعلى في كتابه
طبقات الحنابلة، وقال ابن القيّم: «البخاري ومسلم وأبو داود والأثرم وهذه الطبقة
من أصحاب أحمد أتبع له من المقلدين المحض المنتسبين إليه
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর তাকওয়া
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি প্রতি বছর রামাযান মাসের প্রতিদিনের বেলায় একবার কুরআন খতম করতেন। আবার তারাবীর
নামাযের পর প্রতি তিন রাত্রিতে একবার খতম করতেন।
*মুহাম্মদ বিন
আবু হাতিম আল ওয়াররাক বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাত মোতাবেক তিনি শেষ রাতে তের রাকআত তাহাজ্জুদ নামায পড়তেন।
এমনকি তার মৃত্যুর পর কবর থেকে সুগন্ধি বিচ্ছুরিত হয়।লোক দলে দলে তার কবরের মাটি নিতে
থাকে।
কোনভাবে তা নিবৃত্ত
করতে না পেরে কাঁটা দিয়ে ঘিরে তার কবর রক্ষা করা হয়।পরে জনৈক ওলী মানুষের আকিদা নষ্ট
হওয়ার আশঙ্কায় সে ঘ্রাণ বন্ধ করার জন্য দোয়া করেন, ফলে তা আল্লাহর রহমতে বন্ধ হয়ে যায়। ইতিহাস বর্ণনা থেকে তার
আল্লাহ তা’আলার এবং সুন্নাহকে আমল করার অনেক বর্ননা পাওয়া যায়। এখানে
শক্তিশালী দলীল আলোচনা করা হয়েছে।
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি দানশীলতা ও উদারতা তাকওয়া বুঝা যায়।
পৈত্রিকসুত্রে ইমাম বুখারী প্রচুর ধনসম্পদের মালিক ছিলেন। মুহাম্মাদ বিন আবু হাতিম
বলেন,
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি কিছু জমি ছিল,এ থেকে তিনি প্রতি বছর সাত লক্ষ দিরহাম ভাড়া পেতেন। এই বিশাল
অর্থ থেকে তিনি খুব সামান্যই নিজের ব্যক্তিগত কাজে খরচ করতেন। তিনি খুব সীমিত খাদ্য
গ্রহণ করতেন। বেশীর ভাগ সময়েই খাদ্য হিসেবে শসা, তরমুজ ও সবজি গ্রহণ করতেন। সামান্য খরচের পর যে বিশাল অর্থ অবশিষ্ট থাকতো তার সম্পূর্ণটাই
তিনি ইলম অর্জনের পথে খরচ করতেন এবং অভাবীদের অভাব পূরণে ব্যয় করতেন। তিনি সব সময়
দিনার ও দিরহামের থলে সাথে রাখতেন। মুহাদ্দিসদের মধ্যে যারা অভাবী ছিলেন তাদেরকেও তিনি
প্রচুর পরিমাণ দান করতেন।
মু'তাজিলা
মতের বিরোধিতার পরিণতি
,আমীর যদি সত্যিকার
অর্থে ইলমে হাদীসের প্রতি অনুরাগী হন, তাহলে তিনি যেন
তার সন্তানদেরকে আমার পাঠ্যস্থান মসজিদে পাঠান । এ সময় তিনি আল্লাহ তা’আলার কালাম মাখলুক না গাযরে মাখলুক এ বিষয়ে নিয়ে মুতাযিলাগণ
ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
এতে আমীর ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর প্রতি
রাগান্বিত হয়ে তাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করলেন এবং বুখারীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার জন্য
আমীরের নিজস্ব কিছু আলেম ঠিক করলো।
আমীরের আদেশ এবং ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষিতে তিনি জন্মভূমি
বুখারা ত্যাগ করে নিশাপুরে চলে যান। নিশাপুরেও অনুরূপ দুঃখজনক ঘটনা ঘটলে পরিশেষে সমরকন্দের
খরতঙ্গ নামক স্থানে চলে যান। বুখারা থেকে বের হওয়ার সময় ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি আল্লাহ তা’আলার নিকট এই দুআ করেন যে,
হে আল্লাহ্! সে
আমাকে যেভাবে অপমান করে বের করে দিলো তুমিও তাকে অনুরূপ লাঞ্চিত করো। মাত্র এক মাস
পার হওয়ার পূর্বেই খুরাসানের আমীর খালেদ বিন আহমাদের বিরুদ্ধে জনগণ বিদ্রোহ ঘোষণা
করে তাকে ক্ষমতা ছাড়া করলো। পরবর্তীতে বাগদাদের জেলে থাকা অবস্থায় সে মৃত্যু বরণ
করে।
ইলমুল হাদীসের ব্যাপারে অমুসলিমদের অভিযোগ
ডা:স্পেংগার ইমাম
বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর হাদীস যাচাই বাছাই সম্পর্কে কঠোর সমালোচনা করেছে। তার
মতে,
ইমাম বুখারী যে সকল রীতি পদ্ধতির অনুসরণ করেছেন তাকে হাদীস সমালোচনা
হিসেবে অভিহিত করা যায় না। তিনি শুধু মাত্র متصل السند বা হাদীসে বর্ননা কারীদের
সুত্রের ধারাবাহিকতা সঠিকভাবে আছে কি না? এবং তাদের চরিত্র
বিচার করতেন। এ সকল ক্ষেত্রের ব্যতিক্রম হলে হাদীস গ্রহণ করতেন না। এই জন্য তার হাদীস
প্রত্যাখ্যান করা অর্থ এই নয় যে, হাদীস গ্রহণ করার অযোগ্য।
জবাব
ডাক্তার স্পেংগার
হাদিসের হাদিসের পরিভাষা সম্পর্কে কোন ধারণা নেই এ ছাড়া মুহাদ্দিসগনের কর্ম নীতি সম্পর্কে
কোন অভিজ্ঞতা নেই। অন্যদিকে হাদীসের বিভিন্ন শর্ত সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করতে পারেনি।
মুহাদ্দিসগণেরর
নিযমাবলী হলো দেরায়াত নীতির মাধ্যমে হাদীস যাচাই করেন। ইমাম বুখারী গ্রন্থ জামে না
মুসনাদ এ ব্যাপারে ও তার সঠিকভাবে জানে না। তার কথায় মনে হয় সহীহ বুখারীকে সে মুসনাদ
হিসেবে উপস্থাপন করেছে। সে আরো অভিযোগ করে ইমাম বুখারী হিংসা বিদ্বেষ দুষ্টু- ছিলেন।
এটা মিথ্যা অভিযোগ কারন তিনি অত্যন্ত আবেদ ও মুত্তাকি ছিলেন। তিনি শাফিয়ী মাযহাব অনুসরন
করলে ও ইমাম শাফিয়ী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর মতের বিপরীত অনেক হাদীস সংকলন করেছেন যে
ব্যাপারটি স্পেংগার অবহিত নয়। সুতরাং তারা কোনও অভিযোগ গ্রহনযোগ্য হবে না। ম্যুরের
অভিযোগ হলো ইমাম বুখারী মতন নিয়ে কোন যাচাই করতেন না শুধু সনদ বিবেচনা করে হাদীস গুরুত্ব
দিয়েছেন। তার এ অভিযোগ দ্বারা বুঝা যায় যে, সে ইলমুল হাদীস
সম্পর্কে কোন ধারণা রাখে না কারণ সনদ ও মতন উভয়দিক বিবেচনা করে হাদীস যাচাই করা হয়।
সুতরাং ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি এর উপর মিথ্যে অভিযোগ কোন ভাবেই গ্রহণ করা হবে
না। উম্মাতের ইজমা হয়েছে أصح
الكتب بعد كتاب الله صحيح البخاري
মুহাদ্দিসগনের
মধ্যে যারা কিছু সনদ দুর্বল বলেছেন সঠিকভাবে যাচাই করে সেগুলো নির্ভরযোগ্যতা পাওয়া
যায়নি। ইমাম বুখারী শুধু সেই সব রাবীদের হাদীস সংকলন করেছেন যাদের সিকাহ, আদালত ও নির্ভরযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে সকলে একমত হয়েছেন।
ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মৃত্যু
-ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ
আলাইহি যখন হাদীস সংকলনের জন্য নিশাপুরে আগমন
করেন তখন তিনি মুতাযিলাগণ ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়েন। তারা তাকে কালামুল্লাহর ব্যাপারে
জানতে চাই। ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি বুঝতে পারলেন এটা তাদের ষড়যন্ত্র তিনি প্রথমে
বিষয়ে এড়িয়ে যান। অবশেষে তা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন,
حتى دعا ذات ليلة فقال:
"اللهم إنه قد ضاقت عليَّ الأرض بما رحبت، فاقبضني إليك". فما تم الشهر
حتى مات، وكان ذلك سنة 256هـ، وعاش اثنتين وستين سنة، ودُفن يوم الفطر بعد صلاة
الظهر.
উপরের আলোচনা
থেকে বুঝতে পারি যে,
ইমাম বুখারী রাহমাতুললাহ আলাইহি ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস।
তিনি হাদিসের একটি বিশুদ্ধ সংকলন করে বিশ্ববাসীর নিকট অত্যন্ত শক্তিশালী ও শ্রদ্ধার
পাত্র হিসেবে অবস্থান করছেন। উম্মাতের ইজমা হয়েছে আল্লাহ তা’আলা কিতাবের পর বিশুদ্ধ গ্রন্থ সহীহ আল বুখারী ।আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে বিশুদ্ধ হাদীসের উপর আমল করার তাওফীক দান
করুন,
আমীন ।
লেখক: বহুগ্রন্থ প্রণেতা
ইমাম মাওলানা এম. নুরুর রহমান
সেক্রেটারি:
শারীয়া কাউন্সিল ব্যাডফোরড ও মিডল্যনড ইউ কে-
ইমাম ও খাতিব:
মাসজিদুল উম্মাহ লুটন ইউ কে
সত্যয়ান কারী চেয়ারম্যন:
নিকাহ নামা সার্টিফিকেট ইউ কে
প্রিন্সিপাল:
আর রাহমান একাডেমি ইউ কে
পরিচালক:
আর-রাহমান এডুকেশন ট্রাস্ট ইউ কে
📞07476136772 📞 07476 961067
nrahmansky@googlemail.com
Arrahmaneducationtust@gmail.com
https://www.facebook.com/Imam.Nurur
https://www.facebook.com/ARET.OR.UK/
https://www.youtube.com/user/nurur9
0 coment rios:
You can comment here